কওমি হুজুরেরা এবং পাক সার জমিন সাদ বাদ-মাহবুব সুয়েদ
লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ১৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৮:৫৮:২০ সকাল
কিশোর গঞ্জের 'ভৈরব' উপজেলা।সেখানে কল্পিত ইসলামি বাহীনি স্বাধিন ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করেছে।তাদের জিহাদী কমান্ডার চিফ মৌলভি হাফিজুদ্দীন।বিজয়কৃত অঞ্চলে তারা তান্ডব চালাচ্ছে হায়েনার মত।তারা এ বিজয়কে মক্কা বিজয়ের সাথে তুলনা করেছে।এ অঞ্চলে অধিকৃত ধন সম্পদকে ভোগ আর নষ্ট করছে ইচ্ছেমত।সমাজের প্রতিষ্টিত মানুষগুলোকে লাঞ্চিত করছে।'গনিমতের মাল' হিসেবে মেয়েদের তারা ভোগ করছে নানা কায়দায় নানা ভাবে।জিহাদী কমান্ডার মৌ-লুভি হাফিজের পছন্দ অতি অল্প বয়সি অথবা গর্বভতি হিন্দু ঘরের মেয়েরা।তিনি তার অস্থায়ি তাবুতে বসে আছেন আর তার খাদেমরা লাইন থেকে বেছে বেছে মেয়ে পাঠাচ্ছে ভেতরে।তিনি বিসমিল্লাহ বলে হিন্দু মেয়েদের পেটে 'মুসলিম' মুজাহিদ পয়দার মিশন শুরু করেছেন বিজিত অঞ্চলে।কারো কারো ভয়কাতুরতা বা কষ্টে খুশি হয়ে তিনি আবার সোনা-গয়না দিয়ে বিদেয় দিচ্ছেন।
বহুমাতৃক জোতির্ময় লেখক স্ব-ঘোষিত নাস্তিক প্রয়াত হুমায়ুন আজাদের নিষিদ্ব ঘোষিত বহু বিতর্কিত বই 'পাকসার জমিন সাদবাদ'র মুল গ্রন্থ ভাবনা হচ্ছে উপরোল্লেখিত 'জিহাদ' সংক্রান্ত।২০০৬/৭ সালে আমি সিলেটের বন্দর বাজারের পত্রিনা স্ট্যন্ড থেকে ঈদের রাতের শেষ দিকে লুকিয়ে দুইটি নিষিদ্ব বই (যা বাংলাদেশ সরকার কতৃক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল) ক্রয় করি।পত্রিকায় মুড়ানো অতি যত্নে লুকিয়ে আনা বই দুটো ছিল ডঃ হুমায়ুন আজাদের 'পাকসার জমিন সাদবাদ' ও নির্বাসিতা লেখিকা তসলিমা নাসরিনের 'ক' ।ডঃ আজাদের পাকসার জমিন সাদবাদ পড়লাম লুকিয়ে কিন্তু গভির নজরে।সে নাস্তিক আমি আস্তিক কিন্তু তার কাছ থেকে জ্ঞ্যান বা অভিজ্ঞতা নিতে আমার কোন কার্পন্য নেই।সেই ২০০৬/৭সালে পড়া বইটিতে প্রয়াত লেখক যা বলেছে মাত্র এক দশক না যেতে ই তার বাস্তবায়ন আমি স্বচক্ষে দেখতে শুরু করেছি।হুমায়ুন নিজেকে 'বহুমাতৃক জোতির্ময়' বলে দাবী করতেন।তাকে নিয়ে মুফতি শহিদুল আর মাওলানা সাঈদি জাতীয় সংসদে বক্তৃতা করেছেন।হুমায়ুন তার কল্পিত এ ইসলামী জিহাদী হিসেবে যদিও জামায়াতে ইসলামির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করেছে (যদিও জামায়াত মৌলবাদে বিশ্বাসি নয়)তবুও জামায়াতের দ্বারা এমনটি না ঘটলেও আমি দিব্যি বর্তমান সিরিয়স ইরাক আর বাংলাদেশে আনসারুল্লাহ, হরলাতুল জেহাদ, হিজবুল্লাহদের দ্বারা তা ঘটতে দেখছি।চরম অশ্লীলতায় পুর্ন এ বইয়ের লেখক হুমায়ুনকে আমি তার বিশ্বাস আর তার রুচীর কারনে অন্তর থেকে ঘৃনা করলেও তার লেখা বইয়ের নিদর্শন আমি স্ব-চক্ষ্যে দিব্যি আবারো দেখলাম এই সপ্তাহে ব্রাক্ষ্মন বাড়িয়াতে ঘটে যাওয়া জনৈক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাঞ্জাবী পরিহিত অকর্মা মাওলানা নামধারিদের দানবীয় তান্ডবের মাধ্যমে।রাষ্ট্রিয় সম্পদ ধংশের এ যেন এক মহোতসব চলছে।কি দোষ করেছে রেল স্টেশন বা সরকারি সড়ক আর পাবলিকের দোকানগুলো।একজন ছাত্রের মৃত্যু তা যার হাতে ই হোক তা কোন মতে কাম্য হতে পারেনা।কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ায় এভাবে জ্বলে উঠা কা-পুরুষতা বা হীনতার প্রতিক।ইসলাম বা ইসলামী আদর্শের মুলে কুঠারাগাত করলে এই কওমিওয়ালারা জাগেননা বা জাগতে চাননা।কিন্তু অন্যের দ্বারা ব্যবহৃত হতে এরা বড্ড পরিকর।৭২র সংবিধান আসল, নারী নীতিমালা বাস্তবায়িত হল, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু হল, শীর্ষ ইসলামপন্থি নেতাদের আধিপত্যবাদিদের নীল নকশায় জেলে পুরে বা ফাসিতে ঝুলানো হচ্ছে।মাওলানা মহি উদ্দিন খান সাহেবকে সরকারের শুরুর দিকে ই রাজাকার বলে নিস্কৃয় রাখা হল, মরহুন মুফতি আমিনি(রঃ)কে আমৃত্যু গৃহবন্দি রেখে মারা হল, মুফাসসের মাওলানা সাঈদিকে ধর্ষক বানিয়ে সাজা দেয়া হল, শাহবাগে প্রকাশ্যে ধর্মীয় চেতনার বিরুধী স্লোগান দেয়া হল তখন উনাদের চেতনা জাগরুত হয়না।বলা হবে তাইলে শাহবাগের বিপরীতে হেফাজত আসল তা কি কওমি ওয়ালা নয়।বলি,আরবীতে একটা কথা আছে 'কালিমাতু হাক্ব, উরিদা বিহাল বাতেল' অর্থ্যাত কথা সত্য মতলব খারাপ।মুফতি আব্দুর রব ইউসুফি, মুফতি শহিদুল আর প্রিন্সিপাল হাবিবরা যেমন মরহুম শায়খুল হাদিস(রঃ)কে বৃদ্ব বয়সে 'সেক্যুলারিজমের' পক্ষে ফতোয়া দিতে বাধ্য করেছিল তেমনি হেফাজতের ব্যনারকে সামনে রেখে আর এর অরাজনৈতিক নেতা যার কোন রাজনৈতিক ব্যকগ্রাউন্ড নেই তাকে ব্যবহার করে তার সই নিয়ে অযৌক্তিক আর অবাস্তব ১৩ দফার মুলো ঝুলিয়ে বৃদ্ব আল্লামা শফিকে 'আমিরুল মুমিনিন' ঘোষনা দিয়ে সরকার বিরুধী গোস্টির পারপাস সার্ভ করেছেন হেফাজতিরা।মুফতি আর আল্লামা নামধারি গুটিকয়েক বেঈমান আলেমের কারনে কওমি ওয়ালাদের আজাদি আন্দোলন থেকে নিয়ে সু-দ্বীর্ঘ গৌরবোজ্জল ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়ে কুটি কুটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এবং ধর্মপ্রান সরল তালেবে ইলিমদের রক্ত আর চেতনার সাথে বেঈমানি করেছে বৈ হেফাজত আর কিছু করতে পারেনি।তাদের হটকারি রাজনীতি আর বেঈমানির ফল স্বরুপ স্বাধিন বাংলার ইতিহাসে এই প্রথম আলেম সমাজ এত নিচে নেমেছে মর্যাদার দিক দিয়ে আর ইসলামী শক্তিকে দালাল গুষ্টি ইচ্ছেমত কথাবার্তা বলার সাহস পাচ্ছে।এরা বাংলাদেশে ইসলাম পন্থিদের রাজনীতিকে কয়েক বছর পিছিয়ে দিয়েছে।ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার এরা।ভোটে দাড়ালে গ্রামের সামান্য চোরের সমান ভোটও অনেকে পায়না কিন্তু নেতৃত্ব জাহিরে এরা বড্ড পাকা।নিজেদের মধ্যে এই কওমি ওয়ালারা যে কতভাগে বিভক্ত তার হদিস নেই।আনুগত্য , সংগঠন, মোয়ামেলাত বা জ্ঞ্যান-বিজ্ঞ্যান, রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্বতি বা ইসলামের পুর্নাঙ্গ জ্ঞ্যান অর্জনের বদলে এরা ব্যস্ত থাকে অপর পক্ষকে কিভাবে ফতোয়া দিয়ে ঘায়েল করা যায় তা নিয়ে।একমাত্র খেলাফত মজলিস ছিল সবেদন নীলমনি।যার মধ্যে যুগোপযোগি নেতৃত্ব আর ধর্মীয় খুলুসিয়াতপুর্নদের সম্ভার ছিল।কিন্তু সেই বিতর্কিত মুফিতিদ্বয় মজলিসকে দুভাগে বিভক্ত করতে খলনায়ক ছিল যদিও আজ আর তারা কোন অংশে ই নেই।কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্বে আমি নই কিন্তু এর যুগোপযোগি করন আর এদের আমুল সংস্কারের পক্ষে আমি।এদের সরকারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত।সভ্য সমাজ উপযোগি মন-মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।এদের আকাবিরদের আমল আর খুলুসিয়াত নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও বর্তমানে এদের অধিকাংশ নেতৃত্বে ই রয়েছে সুবিধা ভোগি আর লোভি মৌ-লুভিরা।এদের বা আছে নৈতিকতা আর না আছে কোন সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা।এরা পয়সার টানে নিজেদের ছাত্র বা অনুসারিদের ব্যবহার করছে ডান বা বাম উভয়পন্থিদের ক্রিড়নক হিসেবে।ইসলাম পম্থিদের এরা চরন দুশমন ভাবে আর জাতীয়তাবাদ বা সেক্যুলারদের আপন ভাবে। এরা শান্তিকামি নয় এরা জঙ্গিবাদে বিশ্বাসি।এরা যেই ইসলামী হুকুমাতের কথা বলে একবার এদের হাতে এক দিনের জন্যে ক্ষমতা দিয়ে দেখুন এরা কি করে।সামান্য কোন মন্ত্রনালয় চালানোর মত সামর্থ্য এদের নেই বলে আমার বিশ্বাস।আমি সবাইকে আমভাবে বলছিনা তবে এদের অধিকাংশ ই এমন।এরা এক সময় ইংরেজি বা অংককে হারাম ফতোয়া দিয়ে আমাদের আগের জেনারেশানকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছিল।এরা আওলাদে রাসুল হোসেন আহমদ মাদানি, মুফতি শফি, থানবি, গাঙ্গুহি, কাসেম নানুতবি বা শামসুল হক ফরিদপুরি, শায়খুল হাদিস, মুফতি আমিনী , মহি উদ্দিন খান , দরগাহের ইমাম বা গহরপুরিদের (রঃ) র ধারাবাহিকতার দাবিদার হলেও এরা যুগের তুলনায় তাদের আকাবীরদের থেকে শতগুন দুরে।
বিষয়: বিবিধ
২৩৭৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ব্যাটা বেচে থাকলে আপনাকে ডেকে নিত কাছে নিশ্চিত!
চালিয়ে যান! সামনে সম্ভাবনা প্রচুর!!
কাউকে উত্তর বা প্রতি মন্তব্য লিখতে চাইলে মন্তব্যের নীচে ডান দিকের কোনে বাঁকা তীরে ক্লীক করলে একটা 'জবাব প্রকাশ করুন' নামে ফিল্ড আসবে তাতে জবাব বা প্রতি মন্তব্য লিখলেই পাঠক পাবে অন্যথায় পাবে না৷
মন্তব্য করতে লগইন করুন