বারো হাতি শাড়ি এবং জলপাই রঙ্গের উর্দি-মাহবুব সুয়েদ
লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৮:৫৪:৫৩ সকাল
## ধারনাপর্ব-১৯৯০ পর থেকে টানা ২০০৬ আবার ২০০৮ টু চলমান।বাংলাদেশ চলছে ১২/১৪ হাত শাড়ি পরিহিত প্রথমে ভগ্নিসম এবং বর্তমানে মাতৃসম দু-নারী নেত্রির দৃঢ় নেতৃত্বে।উনাদের বয়সের কথা বিবেচনা করে ভগ্নি আর বর্তমান মাতৃ অথবা দাদী নানিতুল্য বললেও অত্যুক্তি হবেনা।এ দু নেত্রির কতৃত্বে নেতৃত্বে সেই ১২কোটি জনগন থেকে বেড়ে আজ ১৭ কোটিতে পৌছা বাংলাদেশ নিজের ভাগ্যচাকাকে চালাচ্চে।আর ১৯৭৫থেকে টানা ১৯৯০(মাঝখানে কয়মাস বাদে)উর্দি পরা জলপাই রঙ্গের খাকি পোষাকধারি দু-জেনারেল দ্বারা বাংলাদেশ চলেছিল।মাঝখানে ২০০৬ টু ২০০৮ প্রায় দু বছর উর্দি আর টাইওয়ালা ভদ্রলোকেরা চালিয়েছেন লাল সবুজের এ ভুখন্ডকে।
##উর্দিওয়ালাদের জমানা-
এক-১৯৭৫সালে সেনা অভ্যুথ্বানে স্বপরিবারে(দুই মেয়ে ছাড়া) বঙ্গবন্ধু নিহত হলে নানা ঘটনা আর রটনার পরে ক্ষমতা চলে আসে সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের হাতে।মহান মুক্তিযোদ্বের এ বীর সেক্টর কমান্ডার ৭ ই নভেম্বরে সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতার লাইম লাইটে চলে আসেন।মাত্র ৬ বছর ক্ষমতায় থাকাকালিন তিনি জাতীয় আর আন্তর্জাতিকভাবে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাকে অনেক অর্জনের ভাগিদার করেন।বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রবর্তন আর বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জলতম দৃষ্টান্ত।সামরিক বাহিনী থেকে উর্দি পরা এ জেনারেল বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গনতন্ত্রমনা ছিলেন বলে বলতে হয় যদি ইতিহাসের সত্য স্বীকার করতে হয়।তার সময়ে ই বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রি আওয়ামীলিগের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ভারতে নির্বাসনে থাকাবস্থায় আর বাংলাদেশে আগমন করেন তার সময়েই।তার সময়ে বিভিন্ন পেশার মানুষ রাজনীতিতে আগ্রহি হয় এবং যোগদানও করে বটে।পার্বতাঞ্চল নিয়ে তার সুদুর পরিকল্পনা আর সার্ক গটনে ভুমিকা তার মেধা আর দেশপ্রেমের এবং বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্টা তার গনতান্ত্রিক উদারতার প্রমান।
দুই-জেনারেল জিয়া কিছু বিপথগামী সেনা অফিসারের হাতে নিহত হলে দুর্বল বিচারপতি সাত্তার কিছুদিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন।তাকে হটিয়ে কৌশলে সেনাপ্রধান এরশাদ ক্ষমতা গ্রহন করেন।তিনিও জেনারেল জিয়ার মত রাজনৈতিক দল গটন করে শুরু করেন রাজনীতিবিদ ক্রয়-বিক্রয়ের নির্লজ্ব খেলা।পতিতা চরিত্রের নেতারা তার সাথে যোগ দিয়ে গোটা রাজনীতিকে করে তুলে দুষিত।তবে এটুকু বলা যায় নির্দ্বিধায় তার সময়ে বাংলাদেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যাপক হারে হয় এবং মুসলিম বিশ্বের সাথে দেশের সম্পর্ক জোরদার হয়।দেশের মধ্যে উপজেলা পদ্বতি চালুকরন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর আইন শৃংখলার উন্নয়ন সাধনে তার মত ভুমিকা আর কেউ রাখেনি।তার পুর্বসুরি জেনারেল ব্যক্তিগতভাবে গনতান্ত্রিক থাকলেও এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সম্পুর্ন বিপরীত।ফলে সাতদল আর এগারদলের আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করে ৯০এ তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।তার সময়ে দু-বার ঢাকসু নির্বাচন হয়।
#বারো হাতি শাড়ি-আমাদের গাও-গ্রামে যখন কোন পুরুষ তার বউ বা অন্যকোন মহিলাকে গালি দিতে যায় তখন বলে 'বারো হাতি শাড়িওয়ালি অবলা নারী'।৯০ পরবর্তি বাংলাদেশে আমরা প্রায় ২৩ বছর ধরে এই রকমেরি দু সম্মানিতা মহিলার দ্বার শাসিত হয়ে আসছি।ঘুরে ফিরে এরা হয় সরকার প্রধান অথবা বিরুধী প্রধান হচ্ছেন।পিতার সুত্রে একজন আর স্বামীর সুত্রে আরেকজন প্রথম প্রথম আমাদের কাছে উপস্থাপনীয় হলেও বর্তমানে উনারা নিজেরা স্বতন্ত্র প্রতিষ্টান।নিজেদের স্বকীয়তায় বিকশিত।আলোকিত করছেন নিজেদের এবং দলকে।তাদের সবকিছু ই আমাদের জাতীয় সম্পদে পরিনত হয়েছে।এমনকি তাদের ব্যক্তিত্বের দন্ধ বা ব্যক্তিগত জেদ আমাদের জাতীয় কর্মসুচীতে পরিনত হয়।নিজ নিজ দলের প্রতাপশালী পুরুষকুল আর দেশের সমস্ত পুরুষ সমাজ তাদের কাছে নিজেদের দাস সম্প্রদায় না ভাবলেও তাদের আনুগত্য করা যে বাধ্যতামুলক তা মনস্তত্বে ঠাই করে নিয়েছে।তারা একিসাথে সরকার,দল,সংসদ প্রধান থাকেন।তাদের ঘুম,নাওয়া ,খাওয়া , চলা-ফেরা,স্বাস্থ্য,মামলা, অবরোধ,অনশন,হাটা চলা সবি আমাদের জন্যে উতসর্গকৃত।আমরা বাঙ্গাল মুলুকের মনুষ্য সমাজ তাদের প্রবর্তিত যেকোন পদ্বতিকে আমাদের নিজেদের ব্রেইন চাউল্ড বলে বিশ্বাস করি।উর্দীওয়ালা দু-জেনারেল নিজেদের গা থেকে উর্দির গন্ধ ঝাড়াতে গিয়ে যত কিছু গনতান্ত্রিক বা জনতান্ত্রিক করে যান নাই কেন সবি আমাদের কাছে এ দু মহান নেত্রির তুলনায় নস্যি।৯৬ সালে এদের একজন যখন আমাদের মরহুম প্রফেসর গোলাম আজমের ব্রেইন চাইল্ড 'কেয়ারটেকার সরকার পদ্বতি'কে আমাদের মুক্তির সনদ বলে ঘোষনা করলেন তখন আমরা তা নিয়ে আন্দোলন করে আরেকজনকে ক্ষমতা থেকে বিদেয় করলাম।মাত্র পাচ বছরের মাথায় সেই বিদেয় হওয়া জনের নেতৃত্বে দেশের আলেমকুল আর বেচে যাওয়া উর্দিওয়ালা জেনারেল এরশাদকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করে আবার ক্ষমতায় উনাকে বসালাম।এবার সদ্য বিদায়ীজন যখন আমাদের স্বচ্চ ভোটার তালিকার সুন্দর পদ্বতি বাতলালেন তখন আমরা আবারো উনার পেছনে এসে ২০০৫/২০০৬ সালে লড়াই করে বেগম সাহেবাকে বিদেয় করলাম।মাঝখানে দু বছর আবার এক উর্দিওয়ালার সাহায্যে স্যুট টাই পরাদের ক্ষমতায় পেলেও তারা নিজেরা জান বাচিয়র আবারো আমাদের এই দু মহান মায়ের কাছে রেখে গেলেন।সেই ২০০৮থেকে আবার শুরু।এখন পর্যন্ত চলছে মাশাল্লাহ যদিও মাজখানে 'আমড়া কাটের ঢেকি' হিসেবে পতিত জেনারেলের বিবি সাহেবা এই দুয়ের মাজখানে ঢুকে পড়েছেন।
#গনতন্ত্র এবং আমরা-দু মহান নারী নেত্রির আদর্শে আমরা বিংশ শতাব্দিতে এসে আমরা বাঙ্গাল মুলুকে বিনা ভোটে 'আধুনিক নির্বাচন' পদ্বতির গর্বিত অংশিদার হতে পেরেছি মাশাল্লাহ।ক্ষমতা পাকা করনের জন্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন রিজার্ভ রেখে কি করে বাকী আসনগুলোতে মেম্বারিতে ফেল লোকদের বসিয়ে সংসদকে 'পিঞ্জিরায়' রুপান্তর করা যায় তার গর্বিত স্রষ্টা আমরা।গোলাম আজম কেয়ারটেকার পদ্বতি দিয়ে বিশ্বে কিছু দেশে মডেল দিতে পারলে আমরা কেন আমাদের এ নতুন পদ্বতির নির্বাচন বিশ্ব ইতিহাসে স্থান দিতে পারবনা?আজ আমাদের কাছে গনতন্ত্র মানে দু নেত্রি।দেশপ্রেম মানে দু নেত্রির প্রতি মহব্বত।উনাদের বেচে থাকা মানে আমাদের বেচে থাকা।কাজে ই ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশে আমরা নিজস্ব পন্থায় পুর্ন গনতান্ত্রিক স্বাধিনতা ভোগ করছি।
##ভগিনি থেকে মা এবং আজকের দাদী/নানি-উনারা যখন প্রথম দলীয় নেতৃত্বে আসেন তখন উনারা ছিলেন আপার বয়সি।সময়ের ব্যাবধানে এখন উনারা মায়ের বয়স শেষ করে দাদী বা নানি পর্যায়ে চলে গেছেন।শিশু জন্মের পর যেমন আজান ধ্বনি শুনে তেমনি বুজশক্তি আসার পর দু-নেত্রির নাম শুনে।আজকের এ দাদী বা নানি পর্যায়ের দু মহিলা যেন ততদিন পর্যন্ত আমাদের ছায়া হয়ে থাকে যতক্ষন না বাঙ্গাল মুলুকে কোন সত্যিকার পুরুষের আবির্ভাব না হয় এই কামনা।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন