ডঃ জাফর ইকবালঃএক সুকৌশলী রাজনৈতিক ও লেখকের গল্প-মাহবুব সুয়েদ
লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ২১ মে, ২০১৫, ০৭:৩৮:৪১ সকাল
মুহম্মদ জাফর ইকবাল।আমি যে এখানে চলচিত্র নায়ক মরহুম জাফর ইকবালের কথা বলছিনা তা নিশ্চয় সবার জানা।আমি বলব বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারকে নিয়ে।বহুমাত্রার প্রতিভার অধিকারী স্যার(আমি যদিও ছাত্র নই)দেখতেও নায়ক জাফর ইকবাল থেকে কোন অংশে কম নন।তার অগ্রজ লেখক হুমায়ুন আহমেদের বইয়ের সুবাদে আমাদের জানা আছে যে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ক্লিন শেভ এব্ং সাদাকালো ঝরঝরা চোলের সাথে মোঘল আমলের শাহজাদার ন্যায় তার টোঠের ওপর ঝোলান মোচ সমৃদ্ব মুখাবয়ব কোন অংশে ই নায়কের থেকে কম নয়।যাই হোক আমি এখানে উনার চেহারার তারিফনামা করতে বসিনি বরং আমার নিজ জীবনে দেখা কিছু অভিজ্ঞতার শেয়ার করব।
॥॥সাহিত্যিক জাফর ইকবাল॥॥-
মহান মুক্তিযোদ্ব সায়েন্স ফিকশান বাঁ যেকোন ধরনের গল্প-উপন্যাস লেখক হিসেবে তার মুল্যায়ন করতে বললে আমি কেন যে কেউ এক বাক্যে বলবে 'চমৎকার সব সৃষ্টিকর্ম তার'। নাট্যাঙ্গন বাঁ কিশোর চলচিত্রেও তার জুড়ি মেলানো অসম্ভব।'আমার বন্ধু রাশেদের' মত অসামান্য কিশোর চলচিত্রের স্রষ্টা তিনি।প্রথম আলোর সহযোগীতায় সারাদেশে গনিত অলিম্পিয়াডের আয়োজনে তার ভুমিকা প্রশংসনীয়।তার সব সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে তিনি সারাদেশের কিশোর তরুন আর যুবা মানষে স্থান করে নিয়েছেন স্বগৌরভে।কামনা রইল অব্যাহত থাকুক তার সব অমর সৃষ্টিকর্ম।বেচে থাকুন তিনি দ্বীর্ঘকাল।
॥॥কলামিষ্ট জাফর ইকবাল॥॥-সচেতন মহল মাত্র জানা কথা যে,দেশের প্রথম শ্রেনীর দৈনিক প্রথম আলোর রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু কলাম লেখক।বাংলাদেশে এত মহান কলামিষ্ট বাঁ সুশীল থাকা সত্বেও হাতেগোনা কয়জন নির্বাচিত লেখকের ভাগ্যে জোটে এই পত্রিকাটিতে লেখা প্রকাশের।ডঃ জাফর ইকবাল প্রায় সুচনালগ্ন থেকে ই এই পত্রিকাটির 'সাদাসিদা কথা' নামক কলামের লেখক ছিলেন।কিন্তু কোন এক অজানা কারনে গতপ্রায় বছর দুয়েক ধরে তিনি প্রথম আলোর ব্যবসায়িক প্রতিদন্ধী বসুন্দ্বরা গ্রুপের মালিকানাধীন পত্রিকায় লিখছেন নিয়মিত।সমসাময়িক প্রসংগ বাঁ মহান মুক্তিযোদ্ব নিয়ে তিনি লেখেন নিয়মিত।স্যার তার গল্প-উপন্যাসে যেমন নিরপেক্ষভাবে কিশোর মনে ফাগুন জাগাতে কাজ করেন লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে তিনি তার সাদাসিদা কলামে তা করতে সক্ষম হননা।কোন এক অজানা কারনে তিনি একটি নির্দিষ্ট দল বাঁ গোষ্টির প্রতি তার দুর্বলতার প্রকাশ ঘটিয়ে ফেলেন তা সচেতন বাঁ অবচেতন মনে।যারা তার কলামের নিয়মিত পাঠক তাদের চোখে তা ধরা পড়ে সচরাচর।তার লেখায় পরিস্কার থাকে যে,তিনি মহান মুক্তিযোদ্বের ব্যপারে আপোষহীন এবং মুক্তিযোদ্বে নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামিলিগের ব্যপারে একচোখা নীতিতে বিশ্বাসী।এক্ষেত্রে তিনি যে তার জীবনের সবচেয়ে বেশী ঘৃনা করেন জামাত-শিবিরকে তাও দিবালোকের মত স্পষ্ট।
॥॥ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি,শাবি বনাম জাফর ইকবাল॥॥-কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ ডঃ জাফর ইকবাল দ্বীর্ঘ দীন থেকে তার জন্মস্থান পুন্যভুমি সিলেটে স্থাপিত দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিঊটার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্বে চলমান আছেন।তার স্ত্রী আসমা হক ও একি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।বাম-লীগপন্থি ছাত্র শিক্ষক বাঁ কর্মচারী মহলে ব্যাপক জনপ্রিয় আর শ্রদ্বার পাত্র তিনি এবং ক্ষেত্রবিশেষে বলা যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির চেয়েও পাওয়ারফুল।সরকারে যেই থাকুক তার অসাধারন ব্যক্তিত্ব আর সুকৌশলী ভুমিকার কাছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় নতজানু থাকতে হয়।আমার নিজ চোখে দেখা,তিনি যখন তার একাডেমিক বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে তার প্রিয়তমা স্ত্রীর সাথে হেঠেহেঠে তার বাসার দিকে যান তখন গোলচত্বরে বসে আড্ডা মারতে থাকা ছাত্র-ছাত্রিকুল সালাম দিতে দিতে সসম্মানে দাঁড়িয়ে যায়।স্যার খুবি সাধারনের মত ডানে বায়ে না থাকিয়ে চলে যান।বিশ্ববিদ্যালয়ে বামধারার শিক্ষকদের মুল অভিভাবক তিনি।এদের প্যনেল ঠিক করে দেয়া এদের দিয়ে প্রশাসনে চাপসৃষ্টি বাঁ যেকোন ধরনের কৌশলী খেলার পেছনে তিনি উহ্য থাকেন নিখুতভাবে।আমার দেখা চারটি ঘটনার এখানে উল্লেখ করছি।আমি লেখক জাফর ইকবালকে শ্রদ্বা করি এবং করা উচিত।কিন্তু এখানে আমার দেখা একজন কৌশলী শিক্ষক নেতা এবং একচোখা প্রফেসরের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।
==ঘটনা এক==২০০৪ সালের শুরুর দিকে।শাবি ক্যম্পাসে তখন ছাত্রদলের ঊড়ে আসা নেতাদের দাপট চরমে।আভ্যন্তরীন কোন্দলে জর্জরিত শাবি ছাত্রদল নিয়ে সিলেট বিএনপি পরিবার উদ্বিগ্ন।তখন পহেলা বৈশাখের দিন।শাবি ক্যম্পাসে সারা সিলেট থেকে ই তরুন-তরুনিদের ঢল নেমেছে।আমি তখন থাকি ক্যম্পাসের গ্যরেজের পাশে বিশ্ববিদ্বালয়ে চাকুরিরত এক মামার বাসায়।সারাদিন ছিলাম ক্যম্পাসে।এমন সময় ক্যম্পাসে খবর আসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সম্পাদক জনৈক ছাত্রিকে তার মেসে ডেকে নিয়ে ধর্ষন করেছে।মুহুর্তের মধ্যে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল।আনন্দ উতসব পরিনত হয় এক জলন্ত উনুনে।ছাত্রলীগের একপ্রভাবশালী নেতার নেতৃত্বে এবং ঐ ধর্ষক নেতার প্রতিদন্ধী ছাত্রনেতাদের ইন্ধনে শুরু হয় মিছিল এবং ভাংচুর।ছাত্রদলের একাংশ তখন রুখে দাঁড়ায় এবং উত্তেজিত ছাত্রদের ওপর হামলা বসে এবং পুলিশও লাটিপেটা টিয়ার গ্যস ছাড়তে থাকে।এমনকি ছাত্রদল ফাকা গুলিও ছুড়তে থাকে।আমি জীবনের প্রথম সরাসরি কাউকে গুলি করতে দেখি।ছাত্রদলের গুলি আর পুলিশের লাঠিপেঠায় উত্তেজিত ছাত্ররা দিগবিধীক ছুটে যায় এবং পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে চলে আসে।প্রায় ঘন্টাখানেক পর হঠাত করে আবার মিছিলের শব্দ শুনলাম আর দেখলাম বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরি ভবনের সামনে ছাত্রদের এক জটলার সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জাফর ইকবাল স্যার।তিনি ঘোষনা দিলেন ধর্ষক ছাত্রটিকে বহিস্কার না করা পর্যন্ত তিনি আন্দোলনরতদের সাথে থাকবেন।সেই আন্দোলন চাঙ্গা হল বেশ কিছুদিন চলল জাফর স্যার তার পেছনে কলকাঠি নাড়ার ফলে।একপর্যায়ে প্রশাসন চাপের কাছে নতিস্বীকার করে ক্ষমতাসীন ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদককে বহিস্কার করল।
==ঘটনা দুই==
রাগীব-রাবেয়া মেডিকেলে আড্ডারত শামিম নামক জনৈক ছাত্র নিহত হলে ২০০৬ সালে অর্থ্যাত জোট সরকারের শেষ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন জলে উঠে এবং তা হয়ে যায় ভিসির পদত্যাগের দাবী।ছাত্রদলের একগ্রুপ যারা ভিসির বিরুদ্বে ছিল তারা আর ছাত্রলীগের ইন্দনে আন্দোলন এতই তীব্র হয় যে উত্তেজিত ছাত্ররা সেদিন গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যপক ভাংচুর করে।সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাউদাউ করে আগুন জলতে থাকে।সেদিন আমি অধম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে ছিলাম শুরু থেকে শেষ অর্থ্যাত সন্ধাবেলা যখন প্রবল প্রতাপশালী ভিসি মোসলেহ সাহেব পুলিশী পাহারায় ক্যম্পাস ছেড়ে যান তখন পর্যন্ত।ছাত্ররা ভিসিকে বাসভবনে অবরুদ্ব করে ফেলে স্বপরিবারে এবং তার বাংলোর চতুর্দিকে আগুন ধরিয়ে দেয়।গ্যরেজে থাকা সরকারি গাড়ি জালায় এমনকি ভিসির বাসার নিচতলায় সোফায় আগুন ধরিয়ে দেয়।নিজ চোখে দেখেছি সেদিন ভিসির অসহায় চাহনী এবং তার শিশু মেয়েদের ভয়ার্ত চোখ।দ্বোতলায় থরথর করে কাপছিল তারা।একপর্যায়ে ভিসি পদত্যাগের ঘোষনা দিলে আন্দোলনকারী ছাত্ররা চলে যায়।সিলেট ছাত্রদল এবং শিবিরের মহানগর ও শাবি নেতারা সেদিন সেখানে ছিলেন শেষ পর্যন্ত।ভিসিকে মদিনা মার্কেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়েছিল তারা।আমার মনে আছে ছাত্ররা ভিসির সবকিছু ভাংচুর করেছে নানা ফাইলপত্র জালিয়ে দিয়েছিল কিন্তু জনাব জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রীর এমেরিকা গমনের আবেদনপত্রটি পড়েছিল একজায়গায়।ভিসির বিয়ের ভিডিও ক্যসাটটির ফিতা ছড়িয়ে ছিল চতুর্দিকে কিন্তু জাফর সাহেবের আবেদনে কোন স্পট পড়েনি।জনৈক সাংবাদিককে মন্তব্য করতে শুনলাম,শালার ভিসি।সে জাফর স্যারের ছুটি মঞ্জুর করেনি নিজেকে সিলেটী ফোটায়।বুজ এবার ঠেলা।
==ঘটনা তিন==
ভিসি বিদায়ের পরে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালীন বন্ধ ঘোষনা করা হয়।ক্যম্পাসের বাইরে ছাত্রলীগ আর বামেরা প্রতিদিন মিছিল করছে।কিছুদিনের মধ্যে ডানপন্থি শিক্ষকরা ক্লাশ নেয়া শুরু করলে জাফর স্যারের নেতৃত্বে বাম শিক্ষকরা ক্লাশ নেয়া থেকে বিরত থাকে।ক্যম্পাসে সক্রিয় এবং প্রভাবশালী হিসেবে শিবির সিদ্বান্ত নেয় যেকোন উপায়ে হোক স্বাভাবিক অবস্থায় ক্যম্পাসকে নিয়ে আসতে।শিবির নেতারা যান ক্লাশ বর্জনকারীদের নেতা হিসেবে জাফর স্যারের সাথে দেখা করতে।স্যার তাদের সাথে কথা বলেন একটু উত্তেজিত হয়ে ই।পেছন থেকে কেউ কেউ হালকা কটু কথা শুরু করে দেয়।শিবির নেতারা সেখান থেকে বেরিয়ে ক্যম্পাসে মিছিল শুরু করে।ক্লাস বন্ধ থাকায় উত্তেজিত হয়ে উঠা ছাত্রদের স্লোগান কেউ কেউ বলছিল 'জাফরের চামড়া তুলে নেব আমরা।পরদিন প্রথম আলোসহ প্রায় সব জাতীয় দৈনিক এটিকে লিড নিউজ করে এই নামে যে,শাবিতে জাফর ইকবালের জিহবা কাঠার হুমকি দিল শিবির।সারাদেশে দেশে ই ব্যপক সমালোচনা শুরু হয়ে যায়।তীব্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে ঢাকা থেকে শিবিরে ততকালীন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল শাবিতে ছুটে আসলেন।বাদ মাগরিব শাবি কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্টিত হল জরুরি জনশক্তি সমাবেশ।বিশ্ববিদ্যালয়ে জাফর স্যারের নোংরা রাজনীতিতে অতিষ্ট শিবিরের সাথী বাঁ সদস্যদের প্রথমে উন্মুক্ত মতপ্রকাশের সুযোগ দেয়া হল।শিবির নেতারা নিজেদের পক্ষে নানা যুক্তি পেশ করে বক্তব্য রাখলেন।কেউকেউ কেন্দ্রের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করলেন এই বলে যে,স্যার যে নোংরা রাজনীতি করেন আমরা এ শাবির স্টুডেন্টরা তার ভুক্তভুগী।আপনারা কেন্দ্র থেকে এসে কি ই বাঁ বুঝবেন।শিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল আরো প্রায় চারজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে তাদের কথা শুনলেন।আমি অধমও একজন জনশক্তি হিসেবে সেদিন উপস্থিত ছিলাম যদিও অধ্যবদি লেখক জাফর ইকবালের প্রতি আমার বিন্দুপরিমানও সম্মান কমেনি।সবশেষে কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মাদ জাহিদুর রহমান বক্তব্য দিতে দাড়ালেন।সেদিন তিনি যা বললেন তা যদি জাফর স্যার জানতেন আমার বিশ্বাস তিনি আর জীবনেও 'তোমরা যারা শিবির কর' টাইপ কলাম না লিখে বরং 'প্রিয় শিবির প্রজন্ম' নামে ই কলাম লিখতেন।শিবির নেতা বললেন,দেখুন আমি নিজে সেই ছোট বেলা থেকে অধ্যাপক জাফর ইকবাল স্যারের লেখনীর চরম ভক্ত এবং অধ্যবদি সুযোগ পেলেই পড়ি।আপনারা যদি তার সাথে সমস্যা ফিল করেন বাঁ উনি যদি আদর্ষিকভাবে আমাদের সাথে বিরুধে জড়ায় তার মানে এই নয় যে আমরা উনার মত একজন বরেন্য ব্যক্তিত্বের বিরুদ্বে কটুক্তি করব বাঁ তাকে নিয়ে কুৎসা রাটবো অথবা তাকে হুমকি দেব।এটা রাজনৈতিক বাঁ সাভাবিক দৃষ্টিকোন থেকেও চরম অন্যায় আর গর্হিত কাজ করেছেন আপনারা।তিনি খুব কঠোর ভাষায় সেদিন শাবি শিবিরের নেতাদের তিরস্কার করেন আর বলেছিল,যদি আপনারা মনে করেন জাফর ইকবাল স্যার খুবি বাজে বাঁ ক্ষতিকর আপনাদের জন্যে তাইলে হুমকি প্রদান বাঁ কটুক্তি কোন সমাধান নয় বরং উচিত হবে এরকম মানের মনিষী তৈরি করা এবং আদর্ষিকভাবে মোকাবেলা করা।
==ঘটনা চার==২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামীলিগ সরকার গটন করলে শাবিতে ছাত্রলীগ বেপরোয়া হয়ে উঠে।নাইম নামে এক ছাত্রনেতা প্রকাশ্যে অশ্র নিয়ে মহড়া দিলে জাফর স্যার পরেরদিন প্রথম আলোয় ছাত্রলীগের সংসোধনী আর ভবিষ্যত সতর্কবানী দিয়ে একটি হৃদয় স্পর্শী লেখা লিখেছিলেন।তিনি ছাত্রলীগের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র সমালোচনাও করেছিলেন।বলা যায় মহাজোট ক্ষমতায় আসার পর তিনি ই প্রথম ছাত্রলীগের বিরুদ্বে কলম ধরেন যা পরবর্তীতে সারা দেশে ই ছড়িয়ে পড়ে।
॥॥মুক্তিযোদ্ব এবং জাফর ইকবাল॥॥-জাফর স্যারের সহোদর লেখক হুমায়ুন আহমেদের বর্ননানুযায়ী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ব শুরুর সময় উনারা দুইভাই ই সাবালক সুস্থ সবল এবং সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গার ছাত্র ছিলেন।আমাদের মহান মুক্তিযোদ্বের সুচিকাগার ছিল এই ঢাবি।হাজার হাজার ছাত্ররা সেদিন জীবনের মায়া ভুলে দেশ মাতৃকার টানে যুদ্বে অংশ নিলেও উনারা দুই ভাই পালিয়ে চলে যান বরিশালে পরিবারের কাছে।হুমায়ুন আহমেদের ভাষায় উনি নিজে ই বলেছেন উনি ভিতুটাইপ মানুষ তাই তিনি এই বিষয়টি নিয়ে খুব একটা বাড়াবাড়ি করতেননা।কিন্তু মশকিল হল জাফর সাহেবকে নিয়ে।কারন উনি নিজেকে এক্সট্রা অর্ডিনারী হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে চান।মুক্তিযোদ্ব অবশ্যি আমাদের গৌরবের বিষয় এবং জামাত,মুসলিমলীগ বাঁ অন্যান্য যারা পাক হানাদারদের সেদিন রাজনৈতিক সমর্থন দিয়েছিল আমি তাদের সেই সিদ্বন্তকে ঘৃনা ই করি কিন্তু জাফর সাহেবের মত তাগড়া জোয়ান তাও আবার ঢাবির ছাত্র যখন যুদ্বে না গিয়ে বরং রাজাকার হতে শর্ষীনা দরবার শরিফে টুপি পাঞ্জাবি পরে গিয়েছিল এমন একজন যখন নিজেকে মুক্তিযোদ্বের দোকানদার সাজাতে যায় তার সেই চরিত্রকে ঘৃনা করি মনেপ্রানে।যদি সেদিন শর্ষিনা পীর সাহেব তাদের দুই ভাইকে সুযোগ দিত তাইলে যে উনি নির্ঘাত রাজাকার ই হতেন তা কি অস্বীকার করা যায়।একথা ঠিক তার শ্রদ্বেয় বাবাকে হারিয়েছেন তিনি সেই যুদ্বে।কিন্তু তা নিয়ে আবার যতেষ্ট বিতর্কও রয়েছে।অনেকেরি মতে তার পিতাকে মুক্তিযোদ্বারা হত্যা করেছে পাক আর্মির সহযোগী হওয়ায়।সেই বিতর্কের সুরাহা এখনও হয়নি।তার আপন নানাকে (শুনেছি খুব ভাল মানুষ ছিলেন) দেশ স্বাধীন হলে পরে মুক্তি বাহীনি হত্যা করেছিল।যার পরিবারে এত রাজাকারের আস্তানা ছিল, যিনি সুযোগ থাকা সত্বেও যুদ্বে না গিয়ে রাজাকার হওয়ার সুযোগ খুজেছিল সেই ব্যক্তির কাছ থেকে মুক্তিযোদ্বের গল্প শোনা বাঁ এর গৌরব নিয়ে আলোচনা করা মুলত 'সানী লিওনের সতীত্ব রক্ষার লড়াইয়ের' গল্প শোনার সমান।
॥॥সাংসদ সামাদ এবং জাফর ইকবাল॥॥-
জাফর স্যার বরাবরি যে দল ক্ষমতায় থাকুক শাবিতে তিনি তার আধিপত্য আর প্রভাব ধরে রাখতে সচেষ্ট থাকেন বরাবর।এক্ষেত্রে তার ভুমিকা থাকে বরাবর 'সিলেট বিদ্বেষী।শাহজালালের পুন্যভুমি এবং তারও জন্মস্থান এই পবিত্র আর শান্ত সিলেটকে অস্থীতিশীল করতে তার ভুমিকা বরাবার ই বিতর্কিত থাকে।সিলেটের সাংসদ এবং ৭১সালে ফেঞ্ছুগঞ্জের শান্তি কমিঠির চেয়ারম্যন ফিরু মিয়া রাজাকারের স্বনামধন্য পুত্র এবং ভদ্রলোক বলে পরিচিত জনাব মাহমুদুস সামাদ চৌঃ সাম্প্রতিক এক আলোচনায় জাফর স্যারের সিলেট বিদ্বেষ আর তার শাবিতে তার কুকীর্তিমালার উল্লেখ করে তাকে কোর্ট পয়েন্টে এনে চাবুক মারার কথা বলেছেন।নেট জগতে যেহেতু জাফর স্যারের রুহানী অর্থ্যাত বই পড়া ভক্তের সংখ্যা বেশি বাঁ মহান মুক্তিযোদ্বের প্রতি কমিটেড তারুন্যের আনাগুনা বেশি তাই নেটে সাংসদকে নিয়ে খুবি নোংরা কথাবার্তা বলা হচ্ছে।আমি সাদুবাধ জানাই তাকে অভিনন্দন জানাই তাকে।এক কোটি সিলেটবাসীর হৃদয়ের মনিকোটায় লুকিয়ে থাকা অথবা জাফর স্যারের হাই-প্রোফাইল কানেকটেডের ভয়ে মুখ বুঝে থাকা আওয়ামীলিগের অনেক নেতার কথাটি তিনি মুখ ফুটিয়ে বলেছেন বলে যদিও চাবুক মারার সাথে একমত নই।সিলেটের সবদলেরি উচিত হিসেব মিলানো।জাফর স্যারের ও উচিত সিলেট ছেড়ে চলে যাওয়া।কি দরকার সেই মাটিতে থাকার তার।যেখানে উনার জন্ম সেই জন্মস্থান পুন্যভুমিকে যদি তিনি বরাবরি তার হাতিয়ার বানান তাইলে।
॥॥১/১১ এবং জাফর স্যার॥॥-
অনেকে ই ভুলে গেছেন যে,১/১১র সময় যখন জেনারেল মঈন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পবিত্র বাসনা করলেন তখন তিনি প্রবাসে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে এবং যুক্তরাজ্যে 'জাগো বাংলাদেশ' নামক সংগঠন করেছিলেন বিভিন্নজনদের দিয়ে এবং মজার বিষয় হচ্ছে জাফর স্যার ছিলেন জাগো বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র শাখা গঠনের মুল আহবায়ক।যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসীদের এক বিশেষ প্রতিনিধিদের সম্মেলনে তিনি নিজে উপস্থাপনা করেছিলেন।সেসময়কার পত্রিকায় দেখুন বিস্তারিত পাবেন।বলা হয়,সেই ঘটনার পরথেকে মুলত আওয়ামীলিগ নেত্রি শেখ হাসিনার সাথে উনার দুরত্ব তৈরি হয়েছে কারন তাকে মাইনাসের অন্যতম নায়ক ছিলেন তিনি এমনটি বাতাসে ভেসে বেড়ায়।
॥॥পরিশেষ॥॥-আমি কিছু ঘটনার এখানে উল্লেখ করলাম যাতে শ্রদ্বেয় জাফর ইকবাল স্যারের ভালো-মন্দ দুইদিক ই আলোচনা করার চেষ্টা রয়েছে।আমি শুরুতে ই বলেছি লেখক জাফর ইকবাল নন্দিত পুরুষ কিন্তু রাজনীতিবিদ বাঁ কলামিষ্ট জাফর ইকবালকে ও এমন দেখতে চাই আমরা বিশেষ করে তরুন সমাজ।আমরা যারা উনার ভক্ত তারা।।।
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার পোস্টের সেরা লাইনঃ 'ছাত্রদলের গুলি আর পুলিশের লাঠিপেটায় উত্তেজিত ছাত্ররা দিগ্বিদিক ছুটে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে...!'
মন্তব্য করতে লগইন করুন