অপরুপ রাঙ্গামাটি এবং স্বপ্নের জম্মুল্যান্ড-১=মাহবুব সুয়েদ

লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ১৭ মে, ২০১৫, ০৬:১১:২১ সন্ধ্যা

দেশে গেলাম গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি।নভেম্বরের ১৪ তারিখে হঠাৎ করে ই আমার এক ছোট ভাই প্রস্তাব করে বসে রাঙ্গামাটি/কক্সবাজার থেকে ঘুরে আসার।নিজে থাকি আটলান্টিক তীরবর্তি সাগরকন্যা 'লিসবন' শহরে।কাজে ই কক্সবাজারে সাগর তীরে যাওয়ার খুব একটা আগ্রহ খুজে পেলামনা।২০০৭সালে এর আগেও একবার রাঙ্গামাঠি-কক্সবাজার সফর করেছিলাম বন্ধু এনামের সাথে তাও টানা ৫ দিন।এবার দ্বীর্ঘ প্রবাস জীবনের ফাকে দেশের মাটিতে ভ্রমনের প্রস্তাবকে ভালো ই নিলাম।প্লানমত সে দুইদিন পরে রাতের টিকিট কাটলে আমরা নববিবাহিত মন্ত্রীর সুন্দর ট্রেনে করে রওয়ানা করলাম সিলেট থেকে চিটাগাংযের উদ্দেশ্যে।সেদিন চট্রগ্রামে স্থানীয় বিএনপির বিভাগজুড়ে হরতাল ছিল (আমার দুর্ভাগ্য,দুইবাই গেলাম আর দুই বারই হরতাল ছিল)।চট্রগ্রাম স্টেশনে নেমে সিএনজি করে গেলাম বদ্দারহাটে।সেখান থেকে বাস পাওয়া যাবে এই আশায়।বদ্দার হাটে যাওয়ার পরে ড্রাইভারদের টানাটানিতে পড়ে গেলাম।যাইহোক অনেক কষ্টে একটা সিএঞ্জি পেলাম হাটহাজারি পর্যন্ত।সেখান থেকে আরো দুইবার সিএনজি চেঞ্জ করে অবশেষে রাঙ্গামাটি শহরে বনরুপা বাজারে পৌছলাম।রেষ্টুরেন্টে নাস্তা করতে ঢুকলাম আর ফাকে ওয়েটারের সাথে খাতির জমিয়ে দিলাম।লম্বা জার্নির কারনে শরিরকে রেষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে অনেক্ষন বসে থাকলাম।তরুন আর কাষ্টমার সার্ভিসে ভদ্র-চালাক ওয়য়েটারের কাছে জানতে চাইলাম কোথায় হোটেলে উঠলে ভাল হয়।সে বলল দেখেন আসছেন ঘুরতে এখন এই বনরুপায় থাকতে পারেন কারন এটি শহরের প্রানকেন্দ্র।কিন্তু যদি নিরিবীলি প্রাকৃতিক পরিবেশ চান তাইলে শহরের 'রিজার্ভ বাজার' নামক এলাকায় চলে যান।সেখানে দুয়েকটা আবাসিক হোটেলেরও রেফারেন্স সে দিল।বেরিয়ে চলে গেলাম রিজার্ভ বাজার এবং একটি মোটামোটি ভাল মানের হোটেল ও পেয়ে গেলাম।লম্বা ঘুম দিয়ে বিকেলে বেরুলাম রাঙ্গামাটির রাঙ্গা-গুধুলির স্বাদ উপভোগ করতে।ঘুরলাম টানা রাত ১১টা পর্যন্ত।রাজমন বৌদ্ব বিহার,চাকমা রাজবাড়ি,বনরুপা পয়েন্ট,ঝুলন্ত ব্রিজসহ শহরের নানা জায়গা ঘুরলাম।আগেই বলেছি আমি এর আগেও রাঙ্গামাটি গিয়েছি একবার তাই নতুন করে কিছু দেখার ছিলনা।আমার কাছে মুল আকর্ষনের বিষয় ছিল রিক্সাবিহীন নিরিবীলি অপরুপ এই শহরের নিরবতা আর এর প্রাকৃতিক নৈস্বর্গিকতাকে উপভোগ করা।আমার হোটেল যেখানে ছিল তার পেছনে ই অর্থাৎ হোটেলের পেছনের লনে বসে বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দিয়ে নীলাভ পানির বড় লেকের ঝনঝনানি শব্দ শুনার মজা আলাদা।আমি মোহাগ্রস্থের মত বসে ছিলাম ঘন্টার পর ঘন্টা।রাত যত গভির হয়েছে আমিও ভাবনার সাগরে অতল থেকে অতলে ডুবেছি।মহান মনিবের কৃপায় ইউরোপের বেশ কিছু দেশ/দ্বীপঘুরার সুযোগ হয়েছে কিন্তু বিশ্বাস করুন বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ এই রাঙ্গামাটি রিজ্জার্ভ বাজারের হোটেলের বেলকনীতে বসে ঝোনাকি পোকার ঝি-ঝি আর লেকের পানির ছলাত ছলাত শব্দের মাজে যেই মনোমুগদ্বতা কাজ করে তা অতুলনীয়।রাঙ্গামাটি অনেকে ই গিয়েছেন হয়ত তাই এখানে আমি রাঙ্গামাটির অপরুপ সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়।পার্বত্য চট্রগ্রাম অর্থাৎ রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি এবং বান্দরাবান বাংলাদেশের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এর ভু-রাজনৈতিক গুরুত্বও অপরিসীম।সেই বৃটিশ আমল থেকে ই এখানকার দরিদ্র্য উপজাতীদের নিয়ে এদের মধ্যে সন্ত্রাসের বীজরুপে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।মানবাধিকারের নামে খৃষ্টান মিশনারিগুলোর ষড়যন্ত্র,আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সন্ত্রাস ও স্বাধিকারের আন্দোলন এবং বর্তমান বাস্তবতা আর আমাদের কি করা উচিত এসব বিষয়াদী নিয়ে প্রবাসের ব্যস্ত জীবনের ফাকে ধারাবাহিক আলোচনা করব।নয় মাসের রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধিনতা এজন্য আনেনি আমার বাবা-দাদারা যে,৫৬হাজার বর্গমাইলের এ বাংলার একটি অংশ কোন একটি নির্দিষ্ট গোশ্তির জন্য ছেড়ে দেব।।।।(আগামী পর্বে চোখ রাখুন যদি ভাল লাগে)

বিষয়: বিবিধ

১০৮৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

320654
১৭ মে ২০১৫ রাত ১১:২৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
এই বিশাল সম্পদ এখন আমাদের নিয়ন্ত্রন এর বাইরে।
১৮ মে ২০১৫ সকাল ০৮:৩০
261799
সমশেরনামা লিখেছেন : সহমত

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File