জবাই হওয়া অভয়-অভিজীৎঃইসলাম কি বলে-মাহবুব সুয়েদ
লিখেছেন লিখেছেন সমশেরনামা ১৫ মে, ২০১৫, ১১:৫৮:৪০ রাত
অভিজীত খুনের পরদিন।আমার হোয়াটস আপে ভারতের আসাম থেকে 'আবু মোশতাক' নামের আমার এক বন্ধু নক করল।অভিজীত খুনের ব্যপারে জানতে চাইল।জানতে চাইল কে এই অভি কি তার পরিচয়।আমি বললাম যতদুর জানি নিহত অভিজীত একজন শিক্ষিত লেখক ব্লগার এবং আমার মত একজন প্রবাসী।সে জানতে চাইল তাকে কারা হত্যা করেছে আর কেন ই বাঁ এই বর্বর হত্যাকান্ড।তাদের ওখানে নাকি এটা নিইয়ে মানুষ ব্যাপক মাতামাতি করছে বিশেষকরে হিন্দুরা।ভারতের বাঁ বিশ্বের যেকোন জায়গার একজন হিন্দুধর্মাবলম্বীর ক্ষুদ্ব বাঁ ব্যথিত হওয়াটা খুবি স্বাভাবিক ঘটনা যেমনি আমিও হই প্যলেস্টাইনের মুসলিমদের দুর্দশার কথা শুনলে।আমি সেদিন আমার বন্ধুটিকে সংক্ষেপে শুধু এটুকু বলেছিলাম যে,লেখক ব্লগার অভিজীতের এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে একজন মানুষ হিসেবে আমিও সংক্ষুব্দ এবং লজ্জিত একজন বাঙ্গালী হিসেবে।কিন্তু জন্মসুত্রেপ্রাপ্ত নাম 'অভিজীত রায়ের' জন্য ভারত-বাংলা বাঁ কোন দেশেরে হিন্দুদেরি আলাদা করে ব্যথিত হওয়ার কিছু নেই এই যুক্তিতে যে তার নাম হিন্দু বলে। কারন লেখক ব্লগার অভি ছিলেন একজন আপাদমস্তক নাস্তিক অর্থ্যাত তিনি কোন ধর্মে ই বিশ্বাস করতনা।সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা কোটি কোটি মানুষদের মধ্যে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ব খৃষ্টান ঈহুদী জৈন বাহিয়া বায়তুনসহ যত ধর্ম বাঁ সাদা কালো অথবা বাদামী চামড়ার যে কেউ হোকনা কেন অন্য কোন মানুষের হাতে তার প্রাননাশ আমরা সমর্থন করতে পারিনা।পৃথিবীতে বেচে থাকার অধিকার নিয়ে সবাই আসে এবং তার স্বাভাবিক মৃত্যু ই কাম্য।সম্প্রতি আমাদের দেশে 'নাস্তিক ব্লগারদের'কে এক অজানা অশুভ শক্তি গুনে গুনে হত্যা করছে এবং লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে যারা নিহত হচ্ছে তারা বেশীরভাগ জন্মদুত্রে হিন্দু।আমরা এখানে তাদের লেখা বাঁ ব্যক্তিগত বিশ্বাস অথবা তাদের চারিত্রিক কোন বিষয় নিয়ে কথা বলবনা চেষ্টা করব তাদের নাস্তিক হওয়ার অধিকার এবং শাস্তির বিধান নিয়ে কথা বলতে।
=আস্তিক/নাস্তিক বাঁ অন্যধর্মগ্রহনঃআব্দুর রহিম আব্দুল্লাহ বাঁ ইউসুফ মিয়ার ঘরে জন্ম নেওয়া শাকিল সুলেমান বাঁ পল্লব মিয়ার জন্ম হলে সে জন্ম সুত্রে মুসলমান নামের অধিকারী হতে পারে।প্রাপ্তবয়স্ক এবং সে যদি সুস্থ-সবল হবার পরে সে ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলে বাঁ আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস এবং রাসুল(সঃ)র ওপর ঈমান চলমান রাখে তবে যতদিন তা চলমান থাকবে ততদিন ই সে মুসলিম বলে গন্য হবে।একজন সুস্থপ্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি তার পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া ধর্মকে অস্বীকার বাঁ ধর্মীয় বিশ্বাসকে মানতে না চায় বাঁ অন্যকোন ধর্মে দীক্ষালাভ করে তাইলে পুর্বনাম ধারন করা সত্বেও সে ক্ষেত্রবিশেষে 'নাস্তিক-মুরতাদ বাঁ বিধর্মী' হয়ে যায়।পবিত্র ইসলাম একজন মানুষকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের পুর্ন স্বাধিনতা প্রদান করেছে।তেমনি একজন জন্মসুত্রে হিন্দুও যদি তার পৈত্রিক পৌত্তলিক ধর্ম ছেড়ে দেয় তাইলে সে নাস্তিক হতে পারে তার অধিকার রয়েছে।
=নাস্তিকতা এবং ধর্মবিদ্বেষ-
একজন মানুষের ধর্মত্যাগ বাঁ নাস্তিক হওয়ার পুর্ন অধিকার রয়েছে তবে তা হতে হবে অন্য ধর্ম বাঁ মতামতের প্রতি সম্মান রেখে।দুনিয়া সৃষ্টির পর থেকে ই ধর্মীয় বিরুধ বাঁ ধর্মবিদ্বেষ চলে আসছে তা নতুন নয়।পৃথিবীতে যত বড়বড় রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে তার মুলে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় এই ধর্মীয় ইস্যু ই মুখ্য ছিল।পবিত্র ইসলামের 'জিহাদের' বিধান নিয়ে বর্তমান যুগে যদিও নানাভ্রান্তিমুলক প্রচারনা আর নেতিবাচক প্রপাগান্ডা চলমান পাশ্চাত্য মুড়লদের ইঙ্গিতে তথাপি আমরা এখানে আলোকপাত করছি নাস্তিকদের নিয়ে ইসলামের মতামত বিষয়ে।
=একজন নাস্তিকের অধিকার-নাস্তিক বাঁ কোন ধর্মে যারা বিশ্বাস করেনা তাদের ব্যপারে পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে 'উলা ই কা কাল আনআম বালহুম আদাল' অর্থ্যাত এরা চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট।কুরানের ব্যখাকারদের মতে,আল্লাহ পাক এই উক্তির দ্বারা যা বুজাতে চাইছেন তা হচ্ছে 'একটি বন্য পশুও তার মালিকের আনুগত্য বাঁ মালিকের অস্তিত্ব স্বীকার করে কিন্তু নাস্তিক সেতো কোন মনিবকে ই স্বীকার করেনা।যেহেতু সে মনিবের অস্তিত্বকে ই অস্বীকার করে বসে কাজে ই এই ক্ষেত্রে সে একটা জন্তু বাঁ জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট।দুনিয়াতে যত ধর্ম বিদ্যমান সকল ধর্ম কিন্তু ঘুরেফিরে বাঁ বিভিন্ন পদ্বতিতে এক সৃষ্টি অস্বিত্বকে ই স্বীকার করে।তা মাধ্যম ভিন্ন হতে পারে কিন্তু আল্লাহ,গড,ভগবান বাঁ উপরালা নামে স্বীকার করে।কেউ যারা অস্বীকার কারি তাদের ব্যপারে ইসলামের বিধান হচ্ছে এরা চরম অকৃতজ্ঞ এবং জানোয়ার সাদৃশ্য।কোরান এত কটুর কথা বললেও তাদেরকে শাস্তির ব্যপারে কোণ সাধারন আবেগী মুসলিমকে অধিকার দেয়নি।ধর্মীয় স্বাধিনতার বিষয়ে কোরান বলে 'লা ইকরাহা ফিদ দ্বীন' বাঁ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি পছন্দনীয় নয়।এই আয়াতটি একজন আস্তিক নাস্তিক সকলের ব্যপারে ই এসেছে।একজন সুস্থ বিবেক বুদ্বি সম্পন্ন মানুষ সে যদি তার মনিবকে স্বীকার করা বাঁ না করার পুর্ন অধিকার তার রয়েছে তবে তা অন্যের মতামতকে খাটো করে বাঁ বিদ্বেষ ছড়িয়ে নয়।আপনি নাস্তিকতার পক্ষে যুক্তি দিয়ে কথা বলুন তার অধিকার আপনার রয়েছে কিন্তু আপনি যখন অন্যের ধর্ম বিশ্বাস বাঁ ভাবাবেগকে খাটো করে কথা বলবেন তাতে যেমন মানবাধিকার লঙ্গন আপনি করছেন তেমনি সমাজে আপনি বিদ্বেষও ছড়াচ্ছেন।ধর্মীয় অনুভতি মানুষের প্রবল থাকে এখন আপনি এমন কিছু বলা উচিত নয় যাতে বেবুজ কেউ অন্যের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বাঁ ক্রুধান্বিত হয়ে আপনাকে হত্যা বাঁ মানহানী করতে পারে।
=হত্যকান্ড এবং---নাস্তিকদের আমরা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার জবাব যুক্তি দিয়ে দিতে পারি বাঁ রাষ্ট্র আইনকরে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতকে নিষদ্ব করতে পারে এবং করা উচিত কিন্তু তাদের শাস্তির বিধান নিজ হাতে তুলে নেয়া উচিত নয় বাঁ অধিকার ও নেই।একশ্রেনীর লোক তাদের রাজনৈতিক বাঁ বৈশ্বিক স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে তাকে ইস্যু বানিয়ে দেশ এবং জাতীর বদনাম হাসিলে ব্যস্ত থাকে।আজকে দেখা যায় একজন ব্লগারের মৃথ্য হলে আমেরিকার কংগ্রেসে বাঁ ইউরোপিয় পার্লামেন্টে সমালোচনা হয় কিন্তু বাঙ্গাল মুলুকে হাজারো বলি আদমের বুলেটের কাছে বাঁ অন্যকোন মাধ্যমে জীবননাশে এদের টনকও নড়েনা।
সুতরাং সাধু সাবধান!!
বিষয়: বিবিধ
১২৬৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে, একটি জিনিস আপনি ভুল বুঝেছেন। আপনি "নাস্তিক" আর "ধর্ম বিদ্বেষী" আলাদা করতে পারছেন না। কোন ধর্ম না মানলেই একজন নাস্তিক হয়ে যায়। নাস্তিক হতে গেলে অন্য ধর্মের বদনাম করতে হয় না। যারা এমন করে তারা নাস্তিক নয়, তারা ধর্ম বিদ্বেষী।
অভিজিৎ রায় এবং তার মতন অন্য বিখ্যাত ব্লগারেরা কেউই নাস্তিক নয়। তারা ইসলাম বিদ্বেষী, ইসলাম অবমাননাকারী। একজনের নাস্তিক হবার স্বাধীনতা সব সময়ই থাকে কিন্তু অন্য ধর্মকে অপমান করার স্বাধীনতা কখনো থাকে না। ইসলাম মানুষকে নাস্তিক হবার স্বাধীনতা দিয়েছে কিন্তু ইসলামকে অপমান করার স্বাধীনতা দেয়নি। ইসলামী শাশন ব্যাবস্থায় "ইসলামকে অপমান করা" ও "ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করা" উভয়ের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। তবে সেটা অবশ্যই (ইসলামিক) রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে হতে হবে। আমাদের দেশে যেহেতু ইসলামিক শাশন নেই সেহেতু সরকার নিজস্ব পদ্ধতিতে এসবের বিরুদ্ধে আইন প্রনয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে।
হাসান ইবনে সাব্বাহ (রঃ)..আনাস বিন মালিক (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন,(কিয়ামতের আলামত হল) লোকেরা পরস্পরে প্রশ্ন করতে থাকবে যে, আল্লাহ যদি সবকিছুরই স্রষ্টা হন, তবে তার সৃষ্টিকর্তা কে? (বুখারী: ৬৭৯৮, ১০ম খন্ড)
কোরানের ভাষ্যমতে এরা কখনো ঈমান আনবেনা কারণ তারা অহংকারী।
হে মুহাম্মাদ! যদি আমি কাগজের উপর লিখিত কোন কিতাব তোমার প্রতি অবতীর্ণ করতাম, অতঃপর তারা তা নিজেদের হাত দ্বারা স্পর্শও করতো; তবুও কাফির ও অবিশ্বাসী লোকেরা বলত যে, এটা প্রকাশ্য যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়। (আনআম:৭)
তারা কোরানের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করবেনা এবং অতীতে তাদের পূর্ববর্তীগণেরও আচরণ এরূপই ছিল। যদি তাদের জন্য আকাশের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেই এবং তারা সারাদিন তাতে আরোহণ করতে তাকে, তবুও তারা বলবে,আমাদের দৃষ্টি সম্মোহিত করা হয়েছে, না, বরং আমরা জাদুগ্রস্হ হয়ে পরেছি। (সুরা হিজর, আয়াত:১৩,১৪,১৫)
কাজেই এরা কোন যুক্তি মানবেনা। আর এরা হেদায়েতও পাবেনা বরং পাক্কা জাহান্নামী।
অতএব কাফিরদেরকে অবকাশ দাও, তাদেরকে অবকাশ দাও কিছুকালের জন্য।(সুরা আলা:১৭, ৩০ পারা)
অনন্তর যেদিন আমি তাদেরকে একত্রিত করব-যাতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তাদের কি দশা হবে? এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যা অর্জন করেছে, তা সম্যকরূপে প্রদত্ত হবে এবং কারো প্রতি অত্যাচার করা হবেনা (সুরা আল ইমরান, আয়াত:২৫)
কাজেই এরা হতাশ এক সম্প্রদায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন