সাহিত্য চর্চা বিষয়ক প্রাসঙ্গিকতা -০৩
লিখেছেন লিখেছেন সেলিম উদ্দিন৭২১ ৩১ জুলাই, ২০১৫, ০৯:৩৫:৩৫ রাত
প্রিন্ট মিডিয়া সাহিত্য চর্চা ও তার বিকাশের জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়ায় তথাকথিত প্রগতিশীলদের বিচরন স্বৈরাচারের মতো। তারা যা খুশি,যেভাবে খুশি সাহিত্য পাতাগুলো নিয়ন্ত্রন করত ।এমনকি এখনো তাদের কুক্ষিগত মিডিয়াগুলোতে সে স্বৈরাচারি মনোভাবের মৃত্যু হয়নি।ফলে প্রগতিশীলের লেবেল নেই এমন সাহিত্য চর্চাকারীদের লেখা এসব মিডিয়ার সাহিত্য পাতায় স্থান পাওয়া ছিল রীতিমত সপ্তম আশ্চার্য্যের একটির মতো।বিভিন্ন পত্রিকায় এসব পাতা দেখার জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন, তাদের মধ্যে উদারপন্থী ছিলেননা বললে ভুল হবে।তবে সে সংখ্যাটা নিতান্ত নগন্য ছিল।এসব উদারপন্থীরা কিন্তু সকলের কাছে সমাদৃত ছিলেন, এখনো আছেন।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ ভাগ হয়ে যাওয়াতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলে যারা দাবি করে আসছে তারা বামপন্থী এবং বিপক্ষের বলে যাদের প্রচার করা হচ্ছিল তারা ডানপন্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়ে যায় সাহিত্য আঙিনায়। রাজনীতির এ উত্তাপ সাহিত্য এবং এর চর্চাকারিদের আলাদা করে রাখতে পারেনি।
সুতরাং ডানপন্থী হিসেবে পরিচিতি পাওয়াদের জন্য হাতে গোনা দু'একটি প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়া তেমন কোন প্রচার ক্ষেত্র ছিলনা যেখানে তাঁদের সাহিত্য কিংবা এ সংক্রান্ত লিখনী প্রকাশিত হতে পারত। নতুন কারো লিখা প্রকাশ করার জন্য সাহিত্য পাতার জেলারদের সাথে কেমন, কতটুকু পরিচয় আছে সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে কাজ করত।কে কে শিল্পকলা একাডেমীতে যায় কিংবা ওখানকার কার কার সাথে উঠা-বসা, গায়ে কিসের গন্ধ পাওয়া যায় ইত্যাদি বিবেচনা করে তবেই লিখা প্রকাশ করা হতো।
অথচ মুসলিম হলের(চট্টগ্রাম),টি এস, সি'র(ঢাকা) আলো আধারের মধ্যে যারা গাজার টানে পরিবেশ দুষিত করত তাদের লিখা যেন অমৃত ছিল। যেন তারাই ছিল প্রগতির ধারক বাহক, সাহিত্যের পূজারী। অন্যরা সব অচ্ছ্যুত।এমনিতর অবস্থার মধ্যেও ডানপন্থী লেবেল লেগে যাওয়া সাহিত্য চর্চাকারিরা থেমে থাকেননি। বিচ্ছিন্ন কিছু প্রয়াস বিভিন্ন মাধ্যমে গড়ে উঠলেও বামপন্থীদের জোরালোভাবে মোকাবেলা করার জন্য শক্তিশালী কোন মিডিয়া ডানপন্থীদের হাতে ছিলনা। ইনকিলাব প্রথম দিকে ডানপন্থীদের জন্য একটা জায়গা করে দিলেও পরে ইনকিলাবের মালিক মাওলানা মান্নানের সরকারে যোগদান এবং অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক জন্ম নেওয়ায় ইনকিলাব নিয়ে ডানেরা হতাশ হয়ে পড়ে।সংগ্রাম, সোনার বাংলায় যাঁরা লেখালেখি করেন, তাঁরা তো জামাতি/বি এন পি হিসেবে গণ্য।অতএব তাঁদের সাহিত্য চর্চা কিংবা সৃজনশীলতা বামদের কাছে আদৌ সাহিত্য বলে বিবেচিত হতোনা।
আল মাহমুদের অতীত, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, শামসুর রাহমানদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, সাংবাদিকতা, বাঙলা একাডিমীর চাকুরি এসব কারণে আল মাহমুদকে ডানপন্থী হিসেবে আখ্যা দিয়েও নির্দিষ্ট বেড়াজালে ঘেরাও করে রাখতে পারেনি বামেরা। আল মাহমুদ নিজেই নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন যাকে ডানের লেবেলে আটকিয়ে রাখা ঈর্ষান্বিত বামদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে তারপরও আল মাহমুদেকে জামাতি বলে সোর তুলে আল মাহমুদের সাহিত্য প্রতিভার প্রতি অশ্রদ্ধা দেখাতে বামরা তাদের তত্পরতা কখনো বন্ধ করেনি।
ডানপন্থী ঘরানার যেসব সাহিত্য চর্চাকারিরা নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি চাল-চলন, বিশ্বাস, সামাজিক আনা-গোনা, ক্ষেত্র বিশেষে স্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্টানের পরিচিতির কারনে বামদের কাছে অসাহিত্যিক -তারা কিন্তু থেমে থাকেননি । অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন তৈরি করে সেসব প্লাটফর্মে তারা তাঁদের সাহিত্য চর্চা এবং সাহিত্যকে প্রাণ দেবার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। হাতে গোনা দু' একটি মিডিয়া তো আছেই, যা ডানদের সাহিত্যকে সাহিত্য হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছিল।
বামদের কাছে ডানপন্থী মানেই হল জামায়াত কিংবা বি এন পি পন্হী লোক। আগেই বলেছি বামদের কাছে (ব্যতিক্রমী ছাড়া ) সাহিত্য চর্চা করার প্রধান উপকরন হলো মদ, গাঁজা, নারী। যাদের সাহিত্যে যৌন উদ্দীপক শব্দ পাওয়া যায়না তারা সাহিত্যিক নয়।
চলবে---------------
বিষয়: বিবিধ
৯৭৮ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু তথাকথিত ডানপন্থি ও ইসলামপন্থিদের মধ্যেও মতান্ধতা রয়ে গেছে। অনেকে আবার উচ্চমান এর কথা বলে সুযোগ দিতে আপত্তি ও করেন।
কেন্তু এসব বামছাগলদের কথিত ফর্ণোগ্রাফীগুলোকে সাহিত্য হিসেবে বর্তমান গ্লোবালাইজশনের ডিজিটাল যুগেও খাওয়াতে ব্যর্থ চেষ্টার লক্ষণ মানুষ বিরুক্তকরভাবে অবজার্ভ করছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন