ঈদ এবং দৈত্য
লিখেছেন লিখেছেন সেলিম উদ্দিন৭২১ ২২ জুলাই, ২০১৫, ১২:২৩:৪৯ রাত
ঈদ ধনী গরীব সবার জন্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে। ঈদে সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে আনন্দে মেতে উঠতে চায়। এ আনন্দকে ভাগাভাগি করার জন্য মানুষ পাড়া প্রতিবেশি,বন্ধু-বান্ধব,আত্বীয়-স্বজন সবার সাথে মিলিত হবার চেষ্টা করে। যারা ধনী তাদের জন্য দূর দূরান্তের বন্ধু-বান্ধব,আত্বীয়-স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাত করা তেমন কষ্টকর নয় কারন তাদের নিজস্ব বাহন আছে কিংবা এককভাবে বাহন নিয়ে ঘোরাফেরা করার সামর্থ আছে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের কাছে সে সামর্থ নেই। সুতরাং তারা পাবলিক ট্রান্সপোর্টের উপর নির্ভরশীল।
ঈদ আসলে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরে দৈত্যরা নেমে আসে। দ্বিগুন, তিনগুন ভাড়া আদায়ের যেন এ এক মহা সুযোগ। ঈদ আসলে কি পেট্রোল,তেল, গ্যাসের দাম বাডে? কিন্তু অতি আশ্চর্যজনকভাবে ভাড়া বেডে যায়। বিরতিহীন নামক আজিব দৈত্যরা রাক্ষুসে চেহারা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে। সাধারন মানুষের রক্ত খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামে তারা।
এ সব দৈত্যদের আহলাদে বায়না ঈদ উপলক্ষে ভাড়া একটু বাড়িয়ে নিচ্ছেন যাতে কেউ দয়া করে কিছু মনে না করেন। কথায় যে পরিমান মধু ঝরে তা দেখে মনে হয় প্রতি বছর শুধূ মধু রপ্তানী করেই বাঙ্গালীরা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারেন অনায়াসে।
প্রতি বছর ঈদে ভাড়া বাড়ানো নিয়ে রাস্তাঘাটে হরহামেশা দাঙ্গা হাঙ্গামা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
আমরা সবাই জানি যে যোগান বেড়ে গেলে দ্রব্যের মূল্য কমে যায়। সে সুত্র ধরে হিসেব করলে দেখা যায় ঈদে রাস্তা ঘাটে যানবাহনের কমতি নেই বরং যানবাহনের দৌরাত্বে রাস্তায় চলাফেরা করাই দায় হয়ে পড়ে। তাহলে মূল্যবৃদ্ধির কারন কি?
আমি ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করে দেখেলাম যে, ভাড়া বেড়ে যাবার পেছেনে আমাদের দৈত্যদের মন মানসিকতাই দায়ী। যে যেভাবে পার লুটে-পুটে খাও নীতির কারনে দৈত্যরা রক্তচোষা বাদুড়ের মতো সাধারন মানুষের পকেট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অধিকার করে ঈদ আনন্দ উদ্যাপন করতে চায়।
প্রশ্ন হচ্ছে প্রশাসন কোথায়? সবাই আমাকে কিংবা এ প্রশ্ন যে করবে তার মস্তিস্কের স্বভাবিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করবে।পবিত্র রমজানে উনারা যে পরিমান ঈদের সেলামী পেয়ে থাকেন তাতে এ বিষয়ে তাদের কোন প্রকার মাথাব্যথা আছে বলে পাগলেও বিশ্বাস করবেনা। প্রশাসন নির্বিকার, জনতা উজাড় আর দৈত্য করছে সব সাবাড়। সুন্দরম।
জনপ্রতিনিধিরা কোথায়? খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে এসকল দৈত্যরা সরকারি দলের জনপ্রতিনিধিদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে লালিত পালিত । অনেক ক্ষেত্রে এ সব যানবাহনের মালিক ঐসব জনপ্রতিনিধিরা। সুতরাং, দৈত্যের প্রাণ ভোমরা যখন রাজপ্রাসাদে সুরক্ষিত, তখন দৈত্যের প্রাণ হরণ করার সাধ্য কার?
অতএব, ঈদ দৈত্যদের জন্য আর্শীবাদ, আমজনতার জন্য অভিশাপ। কখন আমরা দৈত্যদের রাক্ষুসে থাবা থেকে মুক্তি পাব? আদৌ কি পাব?
বিষয়: বিবিধ
৬৯০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন