পোস্টারের ঈদ
লিখেছেন লিখেছেন সেলিম উদ্দিন৭২১ ১৭ জুলাই, ২০১৫, ০১:১১:৫৭ রাত
ঈদ আসলে নানারঙের পোস্টারে ভরে যায় শহর,নগর ও গ্রামের দেয়ালগুলো। বিশেষকরে নতুন নতুন নেতার আবির্ভাব ঘটে এসব পোস্টারের মাধ্যমে। দোয়া চাই,শুভেচ্ছা রইলো, সাথে আছি-থাকব ইত্যাদি গতবাঁধা কিংবা আহামরি কথায় রঙিন পোস্টারগুলো দেয়ালের কোরবানি করে ছাড়ে। এখন আবার ডিজিটাল ব্যানারের যুগ। সুতরাং রাস্তায় রাস্তায় ডিজিটাল ব্যানারে ছেয়ে যায় পথ ঘাট।সে একই সুর,একই তান,একই লয়। কখনো কখনো পুরাতন নেতারাও পোস্টার ছাড়েন পাছে লোকে তাদের ভুলে না যান।প্রতিষ্টিত নেতারা একাজ তেমন করেননা। হালে প্রতিষ্টিত নেতাদের পক্ষে তাদের চামচারা সৌজন্যে নামক শব্দ ব্যবহার করে নেতাদের শুভেচ্ছায় জাতিকে ভাসিয়ে দেয়। কেউ আবার সামনে প্রার্থী হবেন কায়দামত নির্বাচনে তার জন্য পোস্টার ছাড়েন। মোদ্দাকথায় ঈদ আসে পোস্টার নিয়ে।নানা মতের,নানা দলের, নানা জনের এবং নানা রঙের। আমরা গোবেচারা আম আদমীরা সে পোস্টার তেলাওয়াত করি, মুগ্ধ হই, কাউকে আবার ঠাট্টা করি " দেখ,ওমুকের বেটা ওমুক ঘরে চাল নেই, পোস্টার ছাপিয়ে নেতা হয়েছে!" ইত্যাদি,ইত্যাদি।
পোস্টারগূলো ছাপাতে যে টাকা খরচ হয় তা যদি ঈদে গরিব মানুষেরা পেত, তাহলে তাদের অনেক লাভ হত। বলতে পারেন নেতাদের কি লাভ এতে? লাভ আছে। ভোটের সময় যখন প্রার্থীরা ভোট কেনার জন্য টাকা দেন রাতের আধারে তখন দালালের মাধ্যমে না দিয়ে নিজেরা দিতে পারবেন যদি ঈদের সময় টাকা দিয়ে শরম ভাংগেন।এতে করে দালালরা টাকা মেরে দেবার সূযোগ কম পাবে।নেতাদের টাকা খরচ কম হবে। ফলে খরচকৃত টাকা পরবরর্তিতে উঠিয়ে আনতে কষ্ট কম হবে।
কিছু কিছু নেতা যারা নিজেরাই নেতা, নিজেরাই কর্মী ওনাদের পোস্টারগুলো দেখে আমার মনে বেশকিছু বিশ্লেষন জমা হয়েছে। তা পাঠকদের সাথে শেয়ার করতে চাই। এক নেতার পোস্টার দেখলাম তিনি সুন্দর পাঞ্জাবী-পায়জামা পরে হাত উপরে তুলে বিশাল আকারের ছবি দিয়ে নগরীর শোভা বর্ধন করেছেন। তার এই হাত তুলা ছবি দেখে আমার যা মনে হল তা নিম্নে পাঠকদের জন্য নিবেদন করলাম। এসব আমার অনুমান ।ভুল ত্রুটি মার্জনীয়।
প্রথমত- তিনি বলছেন-ভাইয়েরা, আসুন,যাকাতের কাপড়-চোপড় বিক্রি হচ্ছে, নিয়ে যান।
দ্বিতীয়ত-তিনি বলছেন-ভাইয়েরা, আমি আসছি আমার জন্য যাকাতের কাপড়-চোপড় রাখিয়েন।
তৃতীয়ত- তিনি বলছেন-ভাইয়েরা, এই আমি আসলাম।চিনে রাখুন।ঈদের পর পোস্টারের খরচ নিতে আসব।
চতুর্থত- তিনি বলছেন-ভাইয়েরা, ঈদ উপলক্ষে আমি নেতা হলাম। সবাইকে ধন্যবাদ।
পঞ্চমত- তিনি বলছেন-ভাইয়েরা, বিগত নির্বাচনগুলোতে আমাকে ভোট দেননি। তাই আমার জামানত বায়েজাপ্ত হইয়েছিল।এখন দয়া করে টাকাগুলো দেয়ে দেন।
ষষ্টত-তিনি বলছেন-ভাইয়েরা,আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হব। টাকা রেড়ি রাখবেন।
সপ্তমত- তিনি বলছেন- ভাইয়েরা, আপনারা ভাল থাকবেন। ঘরে বসে সেমাই খান। অতীতের মত আগামীতেও আপনাদের ভোট কেন্দ্রে আসার দরকার নেই ।আমরাই ভোট নিয়ে নেব। সকলকে ধন্যবাদ।
এধরনের নেতাদের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা রইলো। আশা করছি তারা যতদিন থাকবেন ততদিন এ জাতির আকাশ থেকে দুর্ভাগ্য বিদায় নেবেনা।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার বাসায় সে আসবে নির্বাচনী প্রচারনায় সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে নিয়ে । বিনা বাধায় সে চলে আসবে আপনার ড্রয়িংরুমে ।
নির্বাচিত যখন হয়ে যাবে তখন আপনি যদি কোন দরকারে তার কাছে যেতে চান তখন ১০ টা লাগবে পাশ তার কাছে পৌছাতে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন