ইমামদের নিকট আমাদের প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি
লিখেছেন লিখেছেন মোনায়েম মন্ডল ০৪ এপ্রিল, ২০১৫, ০২:০২:০১ দুপুর
জুমার নামাযে সবার আগে গেলে উট কোরবানীর সওয়াব পাওয়া যায়। ছোট বেলায় এ কথা শোনার পর থেকে মোটামুটি উট কোরবানী মিস হতো না । ইমামদের হৃদয়বিদারক কাহিনী শুনে চোখের কোনে জল এসে যেত।
বাংলাদেশের মানুষ যতোটা ধর্মভীরু তার চেয়ে বেশি ধর্মান্ধ। ধর্মের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে যে রকম কথাই বলুন না কেন, তা যদি কারো জ্ঞানের সীমা অতিক্রম করে তাহলে খবর আছে। এর প্রধান কারন হিসেবে আমি বলব, ইমামদের অযোগ্যতা নয় বরং তাদের অদক্ষতা। আমাদের ইমামেরা ইমামতি করেন দাওয়াতি অনুভূতি থেকে নয় , বরং তারা ইমামতি করেন পেটপূজার জন্য। ফলে চাকুরী রক্ষা করার জন্য যা বলা দরকার উনারা তাই বলেন। গুটি কয়েক ইমাম আছেন যারা ভাল আলোচনা করেন কিন্তু সেগুলো বিচ্ছিন্ন আলোচনা হয়ে থাকে।
আজ বর্ণনা করেন মূসা আঃ কাহিনী, কাল নূহ নবীর কাহিনী। সমসাময়িক আলোচনা করেন খুব কম সংখ্যক ইমাম। প্রিয় নবী সাঃ এর শিয়াবে আবি তালিবের কাহিনী শুনিয়ে সবার চোখের পানি ঝরান কিন্তু তার বাসার কাছের মানুষটি যে না খেয়ে আছে সেই খোঁজ তার কাছে নেই। মসজিদের এসির জন্য তারা টাকা কালেকশন করেন কিন্তু মসজিদের নিচের রাস্তার পাশে যে কিছু মানুষ রাত কাটান তা তারা জানেন না । মুমিনের হক নিয়ে আলোচনা করেন, পারস্পারিক সহযোগীতার কথা বলেন কিন্তু বড় মাপের হাদিয়া না হলে দাওয়াত খান না। অন্যের দুঃখের খোঁজ নিতে বলেন কিন্তু নিজে কারো খোঁজ রাখেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যেদিন প্রথম জুমার নামায আদায় করি তার আগ মুহুর্তে খুব আগ্রহ কাজ করছিল, প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের ইমাম বলে কথা, নিশ্চয় অনেক ভাল আলোচনা করবেন, কিন্ত বিধি বাম। হতাশ হতে হলো। দলীয় নিয়োগের ইমাম আর কি আলোচনা করবেন?
দেশকে নেতৃত্বদানকারী রাজনীতিবীদ, আমলা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, নানানপেশাজীবী কিংবা নাস্তিক যাই বলেন না কেন, সবাই দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বের হয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ৫বছর হতে চলল, তার অভিজ্ঞতার আলোকেই বলছি, দেশকে নেতৃত্বদানকারী এই রাজনীতিবীদ, আমলা, বিচারক, বুদ্ধিজীবী, নানানপেশাজীবী কিংবা নাস্তিক সবাই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিকে তথা ১ম, ২য়, এমনকি ৩য় বর্ষ পর্যন্ত হলের মসজিদ গুলোতে নামায আদায় করে। আমি ১০০% নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি, হল গুলোর ইমামেরা যদি বাস্তব সম্মত, যুগোপযোগী আলোচনা রাখতে পারেন তাহলে আমাদের দেশটা পরিবর্তন হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এতো নাস্তিক তৈরি হবেনা ।
আর এ জন্য আমাদের সচেতনতা সবার আগে কাম্য। মসজিদ মিশন, ইমাম প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, ইসলামিক ফাউন্ডেশনে শুদ্ধতা অভিযান চালাতে হবে।
রাসুল সাঃ এর সময়ের বুড়ির কাহিনী মনে করিয়ে দিয়ে শেষ করছি, যেই বুড়ি রাসুল সাঃ এর পথে কাটা দিয়ে রাখতেন, সেই বুড়িই নবী সাঃ এর মহানুভব আচরনে খুশি হয়ে ইসলাম কবুল করেন। আমাদের দেশের গুটি কয়েক নাস্তিক কুলাংগারও যে সেই পথ অনুসরন করবেনা তা কিভাবে বলি? প্রয়োজন সঠিক পরিবেশ। তবে আবু জেহেলের কিছু সবসময় থাকবে।
উট কোরবানীর ইচ্ছা এখন আর হয় না। হুজুরদের কাহিনী শুনে চোখের কোণে জলও আসেনা ।
পরিশেষে বলব, আমাকে একজন খাটি ইমাম দিন, আমি একটি সুন্দর সমাজ দেব।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন