বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন SM SOHEL RANA ২৬ মার্চ, ২০১৫, ১১:২৪:২৪ সকাল
জনমনে সৃষ্ট ক্ষোভ সহসাই গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে - রফিকুল ইসলাম খান
ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনে দখলদার ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচনের দাবিতে ২০দলীয় জোটের ডাকে দেশব্যাপী চলমান অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূিচ সফল করায় নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
গতকাল বুধবার প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন, বীরের রক্তস্রোত আর মায়ের অশ্রুধারায় ভেজা স্বাধীন দেশ আজ আবারো বধ্যভূমিতে পরিণত। সরকারের ক্ষমতা লিপ্সার কারণেই লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল আকাক্সক্ষা ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ভিত্তিমূল ধ্বংস করা হয়েছে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনী প্রহসনে জনগণের ভোটাধিকার হত্যার মাধ্যমেই এই দেশ থেকে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। একদলীয় শাসন টিকিয়ে রাখতেই প্রতিদিন দেশে চলছে গুম-খুন-গণগ্রেফতার। মৌলিক, মানবিক, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক সব অধিকার এখন ভূলুষ্ঠিত। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার অনুযায়ী এই চেতনায় দেশকে ফিরিয়ে আনতেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বিরোধীদলের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ও দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দিয়ে সরকার নব্য স্বৈরাচারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারাই প্রতিবাদ করছে তাদেরকেই স্বাধীনতা বিরোধী গালি দিয়ে নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে শাসকচক্র।
মাওলানা খান আরো বলেন, দেশকে গণতন্ত্রে ফিরিয়ে আনতেই ২০দলীয় জোটের নেতৃত্বে সারা দেশ জাতীয় মুক্তির সংগ্রাম চলছে। দেশের কারাগারগুলো বিরোধী দলের নেতাকর্মীতে ঠাসা। বাসা থেকে,রাস্তা থেকে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে গুম-অপহরণ এখন নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মী এখন বাসায় থাকতে পারছে না। আন্দোলন দমনে সরকারের গুম-খুনের মত হিংস্রতা জনমনে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে সহসাই তা প্রচন্ড গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে। দেশকে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনায় ফিরিয়ে আনতেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বিজয়ী করতে হবে। শাসকগোষ্ঠীর নির্মম নিষ্ঠুরতা থেকে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এখন নিছক প্রতিবাদ নয় জালেম দখলদার স্বৈরাচারকে মুক্তিযুদ্ধের মতই জনগণের প্রতিরোধ সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হবে।
জামায়াত নেতা তার বিবৃতিতে আরো বলেন, সিটি নির্বাচনের নামে জনগণের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। ৫ই জানুয়ারির মত একতরফা নির্বাচনের জন্য ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখা হলে নগরবাসী তার কঠোর জবাব দেবে। নির্বাচন কমিশনকে শাসকগোষ্ঠীর পুতুল হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। নির্বাচনে ‘প্রচার সাম্য’ নিশ্চিত করতেই দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিতে হবে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশ নেবার মত নিরুপদ্রব পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে নির্বাচন কমিশনকেই এর দায় নিতে হবে। ইতোমধ্যেই শাসকদল সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বিচারে নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন করলেও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আগাম প্রচারের বিলবোর্ড অপসারণ করা হযনি কিন্তু এসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনমনে সংশয় আরো বেড়েছে। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক হয়রানি বন্ধ করতে না পারলে নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীন দায়িত্ব পালনের বিষয়ে নগরবাসীর আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হবে। তখন এই ধরনের সাজানো নির্বাচন প্রতিরোধে কর্মসূচি দিতে নগরবাসী বাধ্য হবে।
মহানগরী আমীর বলেন, এ জালেম সরকারের বিরুদ্ধে চরম ধৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে মুক্তিকামী জনতা। সরকারের তীব্র বাধা, হুমকি-ধমকি, জুলুম-নির্যাতন, গণগ্রেফতার সত্ত্বেও ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তি, সভা-সমাবেশে বাধা প্রদানের প্রতিবাদ ও গণগ্রেফতার, গুম-খুন বন্ধ এবং অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার অবরোধ ও ২০ দলের বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসাবে রাজধানীর শাহজাহানপুর, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন, মতিঝিল, মিরপুর, যাত্রাবাড়ি, বংশাল, কোতোয়ালিসহ বিভিন্ন থানা ও এলাকায় জামায়াতের কর্মীরা মিছিল ও রাজপথ অবরোধ করে। দেশের জনগণের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে গণতন্ত্র ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রতিটি ওয়ার্ডে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুষ্ঠান উদযাপন এবং চলমান আন্দোলনে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে এসে এই অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
বিষয়: বিবিধ
৮১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন