সালাত ও সালাত সম্পর্কিত কতিপয় ভুল ধারনা- ১
লিখেছেন লিখেছেন ফুটন্ত গোলাপ ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:৫৯:৫৮ দুপুর
রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি আমাদের মত সালাত আদায় করে, আমাদের কিবলাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করে এবং আমাদের যবেহকৃত পশুর গোশত ভক্ষণ করে সে অবশ্যই মুসলিম । তার জীবন ও সম্পদ রক্ষায় আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই জিম্মাদার । কাজেই তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার ভঙ্গ করো না । (মিশকাত- কিতাবুল ঈমান)
সালাতের গুরুত্ব মনে হয় বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই । কম বেশি সব মুসলমানই এর গুরুত্ব বুঝেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেক মুসলমান এখনো নিয়মিত সালাত আদায় করেন না ।আবার যারা নিয়মিত আদায় করেন তাদের মধ্যেও বিভিন্ন গলদ দেখতে পাওয়া যায় ।
এসব গলদের কারনে হয়তো সালাতের বড় কোন ক্ষতি হয় না, কিন্তু সালাতকে সুন্দর ও কার্যকর করার জন্য এসব বিষয়কে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই । আর একজন মুসলিম হিসেবে সালাতের উত্তম বিষয়গুলো আমাদের অবশ্যই জানা উচিৎ ।
তাই আসুন না সালাতকে আদায় করি সালাতের মত। যেমন আদায় করেছেন, করতে বলেছেন মহানবী (সঃ) । আর সংশোধন করে নিই ছোট ছোট ভুলগুলো-
(১) তাড়াহুড়া করে (দৌড়ে) জামায়াতে শামিল হওয়াঃ
মসজিদে গিয়ে কখনো যদি এমন দেখি জামায়াত দাঁড়িয়ে গেছে সেক্ষেত্রে আর একটি বিষয়ও লক্ষ্য করা যায় । আর তা হল ম্যারাথন দৌড় । মসজিদের দরজা থেকেই মুসল্লিরা দৌড় প্রতিযোগিতায় শামিল হয়ে যান । আর ইমাম সাহেব যদি রুকুতে চলে যান সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার মাত্রাটা যেন আরও বহু গুণ বেড়ে যায় ।
ইমাম সাহেব যখন রুকু থেকে উঠার জন্য সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা বলেন, তখন আশা ভঙ্গের কারনে অনেককে আফসোস করতে করতে পরবর্তী রাকায়াতের জন্য দাঁড়িয়ে থাকেন।
আমার মনে হয় দৃশ্যটা সবার সাথেই পরিচিত।কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর শিক্ষা তো এমন নয় । তিনি তো নির্দেশ দিয়েছেন ধীরস্থিরভাবে সালাতে আসতে । আর এমন ভাবে সালাতে আসতে করেছেন নিষেধ ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন সালাতের দিকে চলে আসবে । তোমাদের উচিৎ ধীরস্থিরতা ও গাম্ভীর্য বজায় রাখা । তাড়াহুড়া করবে না । ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পুরা করে নিবে ।(বুখারী-৬০৮)
আবু কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সঃ) এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম । হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়াজ শুনতে পেলেন । সালাত শেষে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমাদের কি হয়েছিল? তাঁরা বললেন আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম । নবী (সঃ) বললেনঃ এরুপ করবে না । যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে । (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ফওত হয়ে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পুরা করে নিবে । (বুখারী-৬০৭)
এ বিষয়ে ইসলামের এত সুন্দর সমাধান থাকার পরও ইমাম সাহেবগন মুসল্লিদের কেন সংশোধন করে দেন না তা আমার বোধগম্য নয় । আমাদের উচিৎ এসব বিষয় নিজে জানা এবং অন্যদের জানিয়ে দেয়া ।
ইনশা আল্লাহ এই সমাজ একদিন পরিবর্তন হবেই । অজ্ঞতা থেকে বের হয়ে মুসলমানরা একদিন কুরআন সুন্নাহর একনিষ্ঠ অনুসারী হবে । আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে সেই কাঁতারে সামিল করুন। আমিন । চলবে........
বিষয়: বিবিধ
১৩৮৯ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
আমার ব্লগবাড়িতে আপনার দাওয়াত রইলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন