নারীত্ব বনাম জো উপাখ্যান!!
লিখেছেন লিখেছেন দিগন্তের সূর্য ১২ মে, ২০১৫, ১০:৩২:০৩ রাত
আমি একজন মুসলিম! স্পষ্টভাবেই বলছি, নৈতিকতার দিক থেকে কট্টর মুসলিম। যামানার তালে তাল মিলিয়ে স্বকীয়তাকে বিসর্জন দেওয়ার মত মুর্খ আমরা মুসলিমরা নই। তাই নারী এবং তার নারীত্বকে আমি ইসলামের আলোকেই দেখবো, যামানার আলোকে নয়। কারণও স্পস্ট, নারী এবং পুরুষ সম্পর্কে ইসলামের নীতিই ভারসাম্যপূর্ণ। তথাকথিত মুক্তমনা বা প্রগতিশীলদের নারী এবং পুরুষ সম্পর্কে যা ব্যাখ্যা, তা হচ্ছে ‘প্রতিযোগীতামূলক।’ অতএব যেখানে সহযোগীতা কাম্য সেখানে কোন যুক্তিতে আমি প্রতিযোগীতার সমর্থক হবো!?
কিন্তু মিডিয়া, সাংবাদিক, প্রগতিশীল বন্ধুদের দ্বিচারীতা আমাকে অবাক করেছে! তবে, হেসেছিও বটে! চিরাচরিতভাবেই তাদের চিৎকার শুনে আসলাম; তারা নারীকে আর নারী হিসেবে রাখতে চান না, তারা নারীকে পুরুষের স্তরে নামিয়ে আনতে চান। তারা মনে প্রাণে কামনা করে, নারীও পুরুষের মত পুলিশের গাড়িতে ঢিল ছুড়ুক, দৌড় দিক! এমন কি তারা এটাও চান, অসভ্য পুরুষদের মত নারীও মাতাল হয়ে ভোর রাতে বাড়িতে আসুক, দেহটাকে যেভাবে ইচ্ছে ব্যবহার করুক!!
কিন্তু সবচেয়ে মজার যে ব্যাপার, যখনই কোন নারী বাসের সংরক্ষিত সিটটি পাই না, কিংবা একজন পুরুষের হাতে লাঞ্ছিত হয়, পুলিশের দৌড়ানি খায়; তখনই তাদের নারীত্ব ফুটে উঠে! তখন নারীবাদকে তারা সিঁকেই তুলে রেখে তাদের নারীত্ব জাহির করে! এই যে বিপদে পড়লে তারা তাদের নারীত্বকে ফুটিয়ে তোলে এটাই তাদের আসল আচারণ, বাকিটা মিথ্যা এবং মিথ্যার উপর প্রতিষ্ঠিত। নারীদের এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তগুলিই প্রগতিশীল এবং মুক্তমনাদের কিছুক্ষনের জন্য হলেও বাস্তবতা উপলব্ধি করাতে সাহায্য করে।
ইসমত জাহান জো! আমাদেরই এক মুসলিম বোন। কিন্তু, তার সমাজ তাকে শিখেয়েছে পুরুষদের মত হতে। তার বন্ধুবান্ধব তাকে শিখিয়েছে রাজপথে প্রতিবাদ করতে। তাকে লোভ দেখিয়েছে জাগতিক সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের। কিন্তু আমার বোনটি শিক্ষা পাইনি নারীর প্রকৃত স্বভাব ও ফিতরাতের। নারীত্বের মর্যাদা সম্পর্কে কেউ তাকে শিক্ষা দেয় নি। তাকে শিক্ষা দিয়েছে পুরুষের প্রতিযোগী হতে। ফলে, ইসমত জানান জোকে রক্ষা করতে তার বন্ধুদের কেউ এগিয়ে আসেনি। সবাই তাকে ছেড়ে পালিয়েছে। সবাই পালোনোর প্রতিযোগীতা করেছে, সহযোগীতার প্রতিযোগীতা কেউ করে নি।
ঘটনার পরে কি ঘটল!! সবাই এখন ব্যস্ত তাকে হাইলাইট করতে। সবাই তাকে সমবেদনা জানাচ্ছে একজন নারী হিসেবে। সবার বক্তব্য এক, এটা নারীত্বের অপমান, এটা মাতৃত্বের অপমান! এখন আমাদের প্রিয় বোন জোকে কেউ মানুষ ভাবছে না, সবাই তাকে এখন একজন নারী হিসেবেই দেখছে। প্রগতিশীল থেকে মুক্তমনা, নাস্তিক সবাই।
এটাই হচ্ছে, মৃত আত্মাগুলির লজ্জা! নারী যখন সুস্থ থাকে তখন তাকে রাস্তায় নেমে আসার এবং পুরুষের প্রতিযোগী হওয়ার আহ্বান জানাই। আবার নারী যখন নিপীড়ক গোষ্ঠী কর্তৃক নির্যাতীত হয় তখন ঐ মৃত আত্মাগুলি ভিকটিমের প্রতি নারীত্বের দোহায় দিয়ে সমবেদনা জানায়। ইহায় ওদের লজ্জা, কিন্তু ওদের লজ্জা বলতে কিছু আছে কি?
আর একজন মুসলিম হিসেবে আমি সবসময় চাইবো, নারী তার নারীত্ব এবং মানুষ্যত্ব নিয়েই থাকুক। নারীকে তার স্বভাব এবং ফিতরারে উপর স্থির থাকতে যত রকমের জাযবা ও প্রেরণা দেওয়ার দিয়ে যাব। আমি জানি, যামানার স্থিতি ও ধারাবাহিকতা রাখতে নারীর নারীত্বের বিকল্প নাই। আমি তাকে আহ্বান জানাতে থাকবো জ্ঞান ও মানুষ্যত্বের দিকে। মনে প্রাণেই চাইবো, নারী তার নারীত্বকে ধারণ করুক যামানাকে এগিয়ে নিতে। নারী তার জ্ঞানে ছড়িয়ে যাক সূর্যের উত্তাপ ছাড়িয়ে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সন্মানীত বোনেরা, তোমাদের কে আল্লাহ এতবেশি সন্মানীত করেছেন যে, তোমাদেরকে শুধু স্বামী ও পিতার সম্পত্তিতে অধিকারী বানিয়ে ক্ষান্ত হননি বরং আল্লাহ জান্নাত তোমাদের পায়ের নিচে ঘোষনা করে দিয়েছেন। ইসলাম নারীদের যে বিপুল মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছে তা যদি তারা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারতো, তাহলে হয়তো তারা সেই অধিকার ও মর্যাদা আদায় করার জন্য আন্দোলন করতো! হে আপুরা, তোমরা তো আমার মায়ের জাতি, তোমরা কি চাওনা সমাজের সকল মানুষ তোমাদেরকে সন্মান করুক???
০ পুরুষেরা কি নারীদের চেয়ে নিচের স্তরের ?
পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী
এরকম কথা পবিত্র ক্বুরআনে বলা আছে ।
যাদেরকে কর্তৃত্ব করার কথা বলা আছে তারা নিচুস্তরের হয় কি করে ? আল্লাহ তা'য়ালা পুরুষদেরকেই নবী ও রাসূল করে পাঠিয়েছেন দুনিয়াতে ।
তাহলে আল্লাহ কি তুলনামূলকভাবে নিঁচুস্তরের সৃষ্টিকেই বেছে নিলেন নব্যুয়তের ধারা বহনকারী হিসেবে ?
নারীদের প্রতি গদ গদ হয়ে আমাদের অনেকের মুখ থেকে এমন কথা বের হয়ে আসে যে তা শরিয়তের সাথে সাংঘর্ষিক ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন