নিষিদ্ধ পল্লীর বন্দিনীরা
লিখেছেন লিখেছেন দিগন্তের সূর্য ১৪ মার্চ, ২০১৫, ০২:২২:৩০ দুপুর
যা কিছু নিষিদ্ধ তার প্রতি মানুষের স্বভাবজাত আর্কষণ থাকে। নিষিদ্ধের স্পর্শ পেতে কে না চাই! আমাদের দেশে কিছু নিষিদ্ধ মেয়ে মানুষও আছে! মানুষও নিষিদ্ধ হয়? পৃথিবী খুবই কঠিন এক জায়গা, এর বাস্তবতা আরো নিষ্ঠুর।
নিষিদ্ধ মেয়েরা যে পল্লীতে থাকে সেটাও 'নিষিদ্ধ পল্লী।' আমরা কথিত ভদ্র সমাজ তাদেরকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে থাকি সাধারণের বোধগম্য 'বেশ্যা' নামক শব্দ দিয়ে। বেশ্যা' শব্দটিকে আমরা উচ্চারণ করি তীব্র ঘৃণাভরে বা তাচ্ছিল্য করে। কিন্তু, আমরা কি একবারও ঐ নিষিদ্ধ পল্লীর জীবনাচারণ সম্পর্কে ভেবেছি? তারা কিভাবে তাদের দিনাতিপাত করছে? তারা কিভাবে বেড়ে উঠছে, তারা কিভাবে মারা যাচ্ছে? আমরা তাদের সম্পর্কে কিছুই জানি না বা জানতে চাই না। শুধু জানি তারা অর্থের বিনিময়ে দেহ বিক্রি করে থাকে। কল্পনায় দেখি উথাল-পাতাল করা বিছানার দৃশ্য! কিন্তু উথাল-পাতাল দৃশ্রের পিছনেও যে গভীর অন্ধকার থাকতে পারে তা আমরা কেউ তত্ত্বগতভাবে চিন্তা করি না।
নিষিদ্ধ পল্লীর বন্দিনীদের উপর সমাজ এবং রাষ্ট্র যে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করে রেখেছে তা-কি সুখকর? কোন নারী কি শুধু যৌন-বিলাশিতার জন্য নিষিদ্ধ হয়ে উঠে? সে-কি স্বাভাবিকভাবে, সুস্থ মনে এই নিষিদ্ধে বারান্দায় নিজেকে ঠাঁই করিয়ে নেই?
কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ উক্ত প্রশ্নগুলির উত্তরে 'হ্যাঁ' বলতে পারে না। কৃতদাসীদের থেকেও এই নারীরা অসহায়! একজন কৃতদাসীর উপর নির্দিষ্ট কিছু মানুষ উপগত হয়। কিন্তু একজন নিষিদ্ধ পল্লীর নারীর উপর কতজন উপগত হয় তার হিসেব কে রাখে?
রাষ্ট্র এবং সমাজের সেই নারীদের জন্য কিছু দায়িত্ব ছিল। কিন্তু আমাদের শিক্ষা এবং সামাজিক ব্যবস্থা এমনভাবে গড়ে উঠেছে যে, আমরা ওদের প্রতি শুধু একরাশ ঘৃণায় পোষণ করে রাখি।
কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে- এই ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ মুখোশ মাত্র। কথিত ভদ্র বা অভদ্র মানুষের ঠিকই 'নিষিদ্ধের টানে বস্ত্রহরণে অন্ধকারে ছুটে চলে।'
বিষয়: বিবিধ
১০৯১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যারা এর সাতে পাচে নাই তারাও মানবতাকে উদ্ধারের কোন পদক্ষেপ নেয়না!
মন্তব্য করতে লগইন করুন