ধর্ম বিদ্বেষীকে হত্যা করা বৈধ কিনা? প্রশ্নোত্তর ধর্ম বিদ্বেষীকে হত্যা করা বৈধ কিনা?

লিখেছেন লিখেছেন নব দিগন্ত ২ ১৮ মার্চ, ২০১৫, ১০:০৬:৫০ রাত

প্রশ্ন: কেউ যদি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় এবং এই কাজে চরম বাড়াবাড়ি করে, তাহলে তাকে হত্যা করা বৈধ কিনা? বৈধ না হলে এ ব্যাপারে ঈমানদার মুসলিমদের দায়িত্ব কী? কারন, যারা এ ধরনের বিদ্বেষ ছড়ায় তারা তো মুসলিমদের অন্তরে ও বিশ্বাসে প্রচণ্ড আঘাত হানে।

জবাব : এ বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান এবং করণীয় হোলঃ

কেউ যদি ইসলাম ধর্মের এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় এবং এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে, এটা একটা জঘন্য অন্যায় ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু ইসলাম কেন, যেকোনো ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো এবং আঘাত দিয়ে কথা বলা ইসলাম সমর্থন করেনা। তবে যুক্তিপূর্ণ সমালোচনা করা হলে ভিন্ন কথা।

এ প্রসংগে ইসলামে বিধান হলো:

‌১. কেউ ইসলাম এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে আঘাত হেনে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালালে সেটা একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ধরনের লোকদের উপর দণ্ড কার্যকর করা বা তাদেরকে হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করেনা। কোনো মুসলিম এ ধরনের কাজ করতে পারেনা।(দেখুন আল কুরআন ১৭ঃ ৩৩)

২. ইসলামের দৃষ্টিতে এই ধরনের লোকদের শাস্তির আওতায় আনার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। এদেরকে আইনের আওতায় এনে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে অপরাধ প্রমাণ করতে হবে। এভাবে ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করে প্রশাসনকে তাদের উপর নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগ করতে হবে।(দেখুন আল কুরআন ১৭ঃ ৩৩)

৩. ধর্মবিশ্বাসীদের বিশ্বাসে আঘাত হানার কারণে তারা সংক্ষুদ্ধ হয়ে এ ধরনের লোকদের দণ্ড প্রদানের জন্যে সরকারের নিকট দাবী জানাতে পারেন এবং জানানো উচিত। তারা নিজেরাও আদালতে এদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেন।

৪. সরকার, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব হোল, এ ধরনের অপরাধীদের উপর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা কার্যকর করা। এ ব্যাপারে এ তিনটি বিভাগের যে কেউ অবহেলা করলে সে কারণে বাড়াবাড়ি এবং সীমালংঘন মূলক কাজের পথ খুলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত।

৫. অন্য কোনো ধর্মের লোকেরা আল্লাহকে গালি-গালাজ করলেও মহান আল্লাহ তাদের দেবতাদের গালি-গালাজ করতে মুসলিমদের নিষেধ করেছেন। (দ্র. আল কুরআন: ০৬: ১০৮)

সুতরাং মুসলমানদেরকে এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহনশীল হতে হয়। মুসলিমদের উচিত বেশি বেশি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা ও প্রচার করা। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গঠনমূলক সমালোচনা করা এবং পজেটিভ কাজ করাই মুসলিমদের কর্তব্য।

আবদুস শহীদ নাসিম

বিষয়: বিবিধ

১১৬২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

309732
১৮ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:১২
ফয়সাল আবেদীন লিখেছেন : অনেক দিন পর ব্লগে এসে আপনার লিখাটা প্রথমে পেলাম । আপনার লিখাটা চমৎকার হয়েছে । পিলাচ ।
309758
১৯ মার্চ ২০১৫ রাত ০২:৪৩
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ধন্যবাদ! দারুণ একটি বিষয়ে উপস্থাপন. করেছেন আশা করি পাঠক মহল উপকৃত হবে।
309779
১৯ মার্চ ২০১৫ সকাল ০৮:৩৭
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন :
কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ধরনের লোকদের উপর দণ্ড কার্যকর করা বা তাদেরকে হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করেনা।


যথার্থ বলেছেন।

এ ব্যাপারে এ তিনটি বিভাগের যে কেউ অবহেলা করলে সে কারণে বাড়াবাড়ি এবং সীমালংঘন মূলক কাজের পথ খুলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত।


তিনটি বিভাগের যে কেউ অবহেলা করলে করণীয় কি? বিদ্বেষকারী যদি সতর্ক না হয়, বিদ্বেষের মাত্রা বেড়েই যায়, এবং কর্তিপক্ষও হয়য় না, তখন কি করণীয়? কে ঠিক করবে করণীয় আর কে বা এই বিশৃংখলা থামাবে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File