সাধু সাবধান !

লিখেছেন লিখেছেন এন্টি পয়জন ১২ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:৪৫:২৯ রাত





সাধু সাবধান!!

.

বায়োমেট্রিক সিম রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। কেউ কেউ এর বিরোধীতা করছেন আবার কেউ বলছেন সমস্যা কি? জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই তো করা হচ্ছে। কেউ বলছেন আমরা তো সন্ত্রাসী না অথবা তেমন কোন অপরাধও করব না সুতরাং রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা কি?

.

কেউ কেউ নানা রকম আশঙ্কার কথা বলছেন। যেমন ধরুন ফ্রান্সে বোমা হামলা হল আর সেই হামলায় আপনার আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া গেল। যে কোন উপায়ে আপনাকে ফাঁসিয়ে দিতে পারবে।

যে যাই বলুক স্পষ্ট করে কেউ আশঙ্কর দিকগুলো বলছেন না। অনেক জ্ঞানী লোকরাও কিছু বলছেন না। তবে বুঝে বা না বুঝে অনেকেই এর বিরোধীতা করছে এজন্য যে হাসিনা সরকার আর যাই করুক জনগনের কল্যানে করছে না হয়তো স্বৈরসাশন পাকাপোক্ত করতেই এই রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে ।

.

এবার আসি আসল কথায়। আপনারা তো জানেন আমাদের দেশে বর্তমানে আইন-বিচার, দূর্ণীতি, স্বৈরশাসন এখন কোন পরযায়ে । মিযা ফখরুল, মাহমুদুর রহমান এদের বিরুদ্ধে গাড়ী পোড়ানো মামলা দিয়েছে। যেটা অবাস্তব ও হাস্যকর। আঙ্গুলের ছাপ ছাড়াই যদি এমন মামলা দেয় তাহলে ওই পোড়া গাড়ীতে যদি মিযা ফখরুলের আঙ্গুলের ছাপ বসাতে পারলে শাস্তি দেওয়া আরো সহজ হয়ে যাবেনা?

আপনারা ফ্রান্সে বোমা হামলা মেলাতে যান কেন? দেশেই তো হাজারটা উপায়ে আপনাকে ফাঁসাতে পারে, কব্জাবন্দী করতে পারে। আপনার সন্ত্রাসী হওয়া লাগবে কেন? আপনি সরকারের বিরোধীতা করা মানেই আপনি সন্ত্রাসী।

আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করতে নানাবিধ ম্যাসেজ দিয়ে জনগনকে ভুলভাল বোঝানো হচ্ছে। গতকাল আমাকে BRTC থেকে ম্যাসেজ দিয়ে বলল আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করা হচ্ছেনা। শুধু যাচাই করা হচ্ছে। বুঝলাম না কিছু! কি যাচাই করা হচ্ছে? কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া গেছে তাই সন্ত্রাসী সনাক্ত করতে এখন মোবাইল কোম্পানীর মাধ্যমে ছাপ সংগ্রহ করে যাচাই করা হচ্ছে? কতবড় মিথ্যা কথা ! আমি ১০০% শিওর যে এই ছাপ সংগ্রহ করা হবে।

.

নাকি কাহিনী এমন যে প্রতি রাতে শেখ হাসিনার ঘরে অদৃশ্য কেউ প্রবেশ করে দুই গালে কষে চটকানা মেরে চলে যায়। তো এই অদৃশ্য আসামীকে ধরতে আঙ্গুলের ছাপ যাচাই করা হচ্ছে শেখ হাসিনার গালের সাথে মিলিয়ে।

জনগনকে পরিষ্কার করে বলতে হবে কিসের সাথে যাচাই করা হচ্ছে? কি আশ্চয!এটাতো বড় প্রশ্ন যে কিসের সাথে মিলিয়ে যাচাই হচ্ছে?

.

আজকে কোন রকমে ছাপ সংগ্রহ হয়ে গেলেই দেখবেন আরো নানান যায়গায় আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হবে। যেমন ধরুন আপনার সকল প্রকার ব্যাংক লেনদেন, যাতায়াতে বাসের টিকিট কাটতে আঙ্গুলের ছাপ লাগবে। স্কুলে ভর্তি, হাসপাতালে ভর্তি, ভোট প্রদান, সাধারন কেনাকাটাসহ দৈনন্দিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে আঙ্গুলের ছাপ যদি বাধ্যতামূলক করা হয় তাহলে আপনার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা কোথায় থাকল? আপনি কবে, কত তারিখে, কোন বাসে করে কোথায় গেছেন, কোথা হতে কত টাকা আয় করেছেন আর কোথায় কত টাকা ব্যয় করেছেন সব সরকারের তথ্য ভান্ডারে রেকর্ড থাকবে। আপনার উপর ২৪ ঘন্টা নজরদারী হোক এটা কি আপনি চাইবেন? এক কথায় আপনার ব্যক্তিত্ব সরকারের হাতে বন্দী। আর যখন কাগজের টাকা উঠে যাবে শুধুমাত্র ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন হবে তখন তো এটা আরো শক্তিশালী হবে। আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় ব্যক্তি মযাদা ব্যাক্তি স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের যত সোরগোল দেখা যায় সব ধোঁকাবাজী। আর কিছু বছর পরে আপনার হাতের ফোন, কম্পিউটার এবং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনাকে ৯৯% পযবেক্ষন ও নিয়ন্ত্রন করা হবে।

.

জনগনকে হাতের পুতুল বানিয়ে শাসক শ্রেনীর স্বার্থ হাসিল করার দূরভিসন্ধিমূলক কাযক্রমের প্রাথমীক পদক্ষেপ হচ্ছে এই বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন।

বিষয়: বিবিধ

১১৯৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

365550
১৩ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১২:৫৬
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : ভাইরে, এতো আমরা বুঝি। কিন্তু এখন করবটা কি!
কি হয় না হয় করতে করতে এখনো রেজিস্ট্রেশন করিনাই। হাইকোর্ট কোর্ট বারবার রায় দিচ্ছে, এটা লিগ্যাল।
365599
১৩ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৯:৫৬
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : এখন পর্যন্ত করি নি। করার ইচ্ছে নেই, দেখা যাক কি হয়।
365629
১৩ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০১:১১
মাহমুদ নাইস লিখেছেন : আমি তো করেই ফেলেছি। এতদিন পরে বুঝে আর লাভ কি?
আমার তো এবার বাঁচার উপায় নেই বোধয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File