উত্তাল মর্চ

লিখেছেন লিখেছেন শান্তির দূত ২৫ মার্চ, ২০১৫, ০৮:২২:১৯ রাত

" জানুয়ারী - মার্চ"

(১৯৭১ ভিতরে বাহিরে - এ কে খন্দকার)

মুহাম্মাদ মহিউদ্দিন

১)১৯৭১ সালে ১১ই জানুয়ারী, ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন।রাজনৈতিক বৈঠক শেষ করে যাবার সময় শেখ মুজিবকে ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেন।

২)১৭ ই জানুয়ারী, পাখি শিকারের আড়ালে লারকানায় জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাড়ীতে বৈঠক করে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার সিদ্ধান্ত নেন।

৩)২৭শে,জানুয়ারী, ভোট্ট আপস-মীমাংসার জন্য ঢাকায় আসেন এবং নতুন সরকারে তার দলের ভুমিকা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা করেন।

৪)২৩শে মার্চ পাকিস্তানের জাতীয় দিবস ঢাকায় বড় করে পালনেন সিদ্ধান্ত হলেও পরে স্থগিত করে দেয়া হয়।

৫) ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সেনাবাহিনী ছিল মাত্র এক ডিভিশন। ২রা মার্চ এম ডি সোয়াত নামে একটি জাহাজ সাতহাজার টন অস্র ও গোলাবারুদ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করে।

৬) মার্চের শুরুতে অস্র ও গোলাবারুদ আনার বিরুদ্ধ প্রথম প্রতিবাদ করে বৈমানিক ক্যাপ্টেন নিজাম চৌধুরী।পরে তাকে বরখাস্ত করে বিচার কার হয়।

৭) ১ লা মার্চ ১টার দিকে ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ অনুষ্টেয় জাতীয় পরিষদের অধিবেষন বাতিল ঘোষনা করলে আওয়ামীলীগ অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে।

৮)সর্বপ্রথম ঢাবির ইকবাল হল তথা জহুরুল হক হলের ছাত্ররা নিজ উদ্যোগে ৩০৩ রাইফেল দিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছিল। ২৫শে মার্চের আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন নির্দশনা ছিলনা।

৯) ৭ই মার্চের ভাষনের শেষে যুদ্ধের ডাক দিয়ে ঘোষনা করেছিলেন,"জয় বাংলা,জয় পাকিস্থান" এটি যুদ্ধ ও স্বাধীনতার আহবান হতে পারে না।

১০) ৫শে মার্চ জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে সরিয়ে টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্থানের গভর্নর নিয়োগ দেন।৭ই মার্চ টিক্কা খান ঢাকায় পৌছানের পর ২৫শে মার্চ অধিবেশন বসার ঘোষনা দেন ইয়াহিয়া খান।

১১)রাজনৈতিক সমঝোতার জন্য ১৫ই মার্চ ঢাকায় এসে ১০দিন ধরে আলোচনা চালিয়ে যান।সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পূর্বের ছকে ফিরে যান। ২৩ ই মার্চ পাকিস্থান দিবসে সর্বত্র বিক্ষোভ ও বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়।

১২)১০ই মার্চ কর্নেল আতাউল গনি ওসমানীকে বঙ্গবন্ধু সামরিক উপদেষ্টা নিয়োগ দেন।২২শে মার্চ অবসরপ্রাপ্ত সেনা,নৌ ও বিমান বাহীনির কর্মকর্তাদের নিয়ে বায়তুল মোকাররামে সমাবেশ করেন। যুদ্ধ মোকাবেলায় "চিন্তা কর না,আমরা অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে ট্যাংক প্রতিহত করবো" ওসমানীর এই বক্তব্যে তারা হতাশ হয়েছিল।

১৩)২৫ শে মার্চে শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার না হলে,ক্ষয় ক্ষতি কম হত,যুদ্ধের সময় কম লাগত,অভাব ও অবিশ্বাস থাকতো না,নেতৃত্ব ঠিক করা নিয়ে সমস্যা হত না।

১৪)২৫-২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু তার বাসায় থাকবেন?গ্রেফতার হবেন? দলের নেত কে হবেন? কী করনীয়? কর্মসূচী কি? কিছুই স্পষ্ট করেননি বঙ্গবন্ধু।

১৫) ২৫ শে মার্চ রাতে তাজউদ্দিন বঙ্গবন্ধুর সাথে দেখা করে স্বাধীনতার জন্য একটি লিখিত বক্তব্য রেকর্ড করার অনুরোধ করলে বঙ্গবন্ধু বলেন,"আমার বার্তা প্রচার হলে,পাকিস্থানীরা আমাকে দেশদ্রোহী বলবে"

১৬) ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রাম বেতারকেন্দ্র থেকে মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা করেন।

এই ঘোষনার মাধ্যমে দিশাহীন জাতী দিকনির্দেশনা পেল। দেশ মুক্ত করতে দেশবাসী ঝাপিয়ে পড়ল।

★তথ্যসূত্র:১৯৭১ ভেতরে বাহিরে। এ কে খন্দকার।

বিষয়: বিবিধ

১১৬৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

311092
২৫ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:৩০
হতভাগা লিখেছেন : বোঝাই যাচ্ছে যে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে একচেটিয়া ভোট পাবার ফলে গোটা পাকিস্তানে সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে । ফলে শেখ মুজিবের গোটা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবার সুযোগ আসে ।

ভুট্টোসহ পশ্চিম পাকিস্তানীরা সেটা হতে দিতে চাইছিল না ।

তাহলে কথা আসে যে , যদি কোন সমস্যা না হত ভুট্টোদের তাহলে শেখ মুজিবই হতেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী । তাহলে তো বাংলাদেশে নামে কোন রাষ্ট্র বের হয়ে আসতো না । আমাদের আজীবন পশ্চিম পাকিস্তানীদের জুতা সাফ করতে হত ।

৭ই মার্চ যদি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণাই দেন তাহলে ৮-২৫ মার্চ কি নিয়ে ইয়াহইয়া-ভুট্টোর সাথে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন ?
311096
২৫ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:০৯
পললব লিখেছেন : বাংলাদেশের স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় অবদান ভুট্টর! ভূট্টসহ পাকিস্তানের নেতারা যদি গাদ্দারী না করত তাহলে শেখ মুজিবই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হত। এটা দিবালোকের মত স্পষ্ট নির্বাচনের অর্থই হচ্ছে নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনা করা। কেউই বলবে না নির্বাচিত হয়ে দেশে স্বাধীনতা ঘোষণা দিব। এর জন্য কোন রাজনৈতিক গবেষক হওয়ার দরকার নেই। আওয়ামী ১৯৭০ সালে অখন্ড পাকিস্তানের আনুগত্য স্বীকার করে নির্বাচনে করেছে এটাই চিরসত্য! চিরবাস্তব। বরং বাংকরলে লাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস আওয়ামীগের উচিত্‌ ১৯৭০ সালের নির্বাচনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
311108
২৫ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:২৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : আমার মনে হয় পৃথিবীর বুকে একমাত্র বাংলাদেশই এমন একটি দেশ, যারা পয়তাল্লিশ বছর আগে কি হয়েছে না হয়েছে তা নিয়েই সারা জিবন ব্যায় করছে। সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোন মানসিকতা এদের নেই। কেই বাপের অবদান গাইতে থাকে, কেই স্বামীর অবদান গাইতে থাকে। এই গাওয়াতে সোনারদেশ চোরের দেশে পরিনত হচ্ছে। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File