সংলাপ ও সমঝোতা

লিখেছেন লিখেছেন শান্তির দূত ১২ মার্চ, ২০১৫, ০৭:৩৬:৪৫ সকাল

"সংলাপ ও সমঝেতা"

মুহাম্মাদ মহিউদ্দিন

ইসলাম আল্লাহ মনোনীত একমাত্র জীবন ব্যাবস্থার নাম।ব্যাক্তি,পরিবার,সমাজ ও রাস্ট্রের সকল সমস্যার সমাধানের মূলনীতি রাসুলের জীবনীতে রয়েছে। রাসুলের স: জীবনে এই ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে সরকার ও বিরুধীদল উভয়ে শিক্ষা নিয়ে চলমান সংকট সমাধান করতে পারে।

"আল্লাহর রাসুল স: স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হয়ে ৬ষ্ট হিজরীর যুলকাদা মাসে কুরবানীর চিহ্ন "কিলাদা "গোলায় লটকিয়ে ৭০টি উট সাথে নিয়ে নিরস্র,ইহরাম পরিহিত ১৪০০শত আত্মোৎসর্গী সাহাবী সাথে নিয়ে ওমরা করার উদ্দেেশ্য রাওনা দিলেন।

ইতিপূর্বে বদর,ওহোদ সংগঠিত হয়েছে। বিগত ছয় বছরে মুসলমানদের জন্য কাবার পথ বন্ধ ছিল। হজের সময়ও তারা ঘেষতে দেয়নি। গতবছর সম্মিলিত মহাজোট পরাজয়ের গ্লানী নিয়ে ফিরে এসে মক্কায় প্রতিশোধের আগুনে যখন জলছিল ঠিক তখন বিনা অস্রে মুসমানদের এই যাত্র হতবাক করেছিল আরববিশ্বকে এবং তারা তাকিয়ে ছিল আসলে কী ঘটতে যাচ্ছে।

শতবছরের ঐতিহ্য হল আরবে পবিত্র মাসে যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ।মুশরিকরা চিন্তা করল, বাধা দিলে আরববিশ্ব তাদের বিরুদ্ধে চলে যাবে আর বাধা না দিলে জনগন দুর্বল,শক্তিহীন বলে হেয় করবে। সর্বশেষ তারা জাহেলী চেতনায় উজ্জিবিত হয়ে বাধা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

বনী কাব গোত্রের একজন গুপ্তচরকে কুরাইশদের গতিবিধি লক্ষ করার জন্য আগে থেকেই রাসুল স: পাঠিয়েছিলেন। উসফান নামক স্থানে পৌছার পর রাসুল স: জানতে পারলেন,তারা পূর্নপ্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে আর খালিদের নেতৃত্বে ২০০ অশ্বারোহী সৈন্য তাঁর গতিরোধ করার জন্য অগ্রে প্রেরিত হয়েছে। এরপর পথ পরিবর্তন করে দুর্গম পথে অত্যান্ত কষ্ট করে হারাম শরীফের সীমান্তে হুদায়বিয়ায় রাসুল স: পৌছলেন।

মুশরিকদের উদ্দশ্য ছিল,হামলা করে মুসলমানদের উত্তেজিত করে যুদ্ধ লাগিয়ে তারা প্রচার করবে,"ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে মূলত তারা যুদ্ধ করার জন্য আসছে"।সাহাবাদের ধৈর্য,সংযম এবং রাসুলের স: বিচক্ষনতা ও দূরদৃষ্টি তাদের সকল অপচেষ্টা ব্যার্থ করে দেয়। তাদের ৪০/৫০জনের একটা গ্রুপ হঠাৎ রাতের বেলায় কংকর ও তীর নিক্ষেপ করে।সাহাবা তাদের আটক করে। রাসুল স: তাদের ছেড়ে দেন।আরেক দিন ঠিক ফজর নামাজের সময় ৮০ জনের একটি দল হামলা করলে সাহাবারা তাদের আটক করে।রাসুল স: তাদের ছেড়ে দেন।

তারা মক্কার আশেপাশের গোত্রপতিদের পাঠিয়ে চেষ্ট করল যেন রাসুলকে স: ফেরত পাঠানো যায় আর ফেরত না গেলে যেন রাসুলে স: বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে নিজেদের পক্ষে তারা চলে আসে।এই পরিকল্পনায় তারা খুজায়া গোত্রের নেতা বুদায়েল,আহাবিশদের নেতা হুসাইল বিন আলকামা, কুরাইশদের পক্ষ থেকে উরওয়া বিন মাসুদ সাকাফীকে প্রেরন করল।রাসুল স: প্রত্যেককে প্রকৃত অবস্থা বুঝালেন,এতে সবাই সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর পক্ষ নিলেন।

অবশেষে রাসুল স: কুরাইশদের বুঝানোর জন্য হযরত ওসমানকে রা: প্ররন করলে তারা তাকে আটক করে হত্যার গুজব রটিয়ে দেয়। যাত্রা পথে নানাবিধ চক্রান্ত ধৈর্য সহকারে মোকাবিলা করলেও দূত হত্যা করার মত অপরাধ আর মেনে নেয়া যায় না। অগত্য রাসুল স: সাহাবাদের নিয়ে বদলা নেয়ার শপথ গ্রহন করলেন।

কেন্দ্র, মদীনা থেকে ২৫০ মাইল দুরে,মক্কার সীমান্তে,মক্কার মুশরিকরা আশেপাশের গোত্রসহ সম্মিলিতভাবে মাত্র ১৪০০ নিরস্র সাহাবাদের ঘিরে আক্রমন করতে পারতো। এত সমস্য থাকা সত্ত্বেও সবাই দ্বিধাহীন চিত্তে জীবনের ঝুকি নিয়ে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তুত হয়ে গেল। আল্লাহর প্রতি নিবেদিত প্রান হওয়ার জন্য এর থেকে বড় প্রমান আর হতে পারেনা। ইতিহাসে এটি বায়আতে রিদয়ান নামে প্রসিদ্ধ।

সাহাবাদের এই সিদ্ধান্তে মুশরিকরা ভয় পেয়ে গেল। হযরত ওসমান রা: ফিরে আসলেন। সন্ধি করার জন্য মুশরিকদের পক্ষ থেকে সুহাইল বিন আমরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল আসল। সন্ধি হল ১০বছরের পরিবর্তে মাত্র ২বছরে মুসলমানরা বিজয় লাভ করল।

উভয় পক্ষ ছাড় দিয়ে সমঝোতা ও সন্ধি করেছিল। মুশরিকরা তাদেরকে প্রবেশ করতে না দেয়ার জিদ থেকে ফিরে আসল।অন্যদিকে মুসলমানরা বিগত ছয় বছর সুযোগ না পেলেও আগামী বছরে নিরাপত্তার সাথে সুযোগ পাবে। এই বছরই করতে হবে, এমন নির্দেশনা না থাকায় কোন সমস্যা থাকল না।

বাংলাদেশে সংকট সমাধানে অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তি উভয়দলকে ছাড় দেয়ার আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু প্রায় দুই মাস আন্দোলন চলার পরও কোন সমাধান হচ্ছেনা।

প্রশ্নবিদ্ধ,হাস্যকর, সমালোচিত,গঠনতন্ত্র হত্যাকারী অবৈধ সরকার ইসলাম, দেশ,জাতী,জনগন সবার জন্য ক্ষতিকর। লক্ষ,লক্ষ জনতার মধ্যে তৌহিদী, স্বাধীনচেতা,দৃঢ়চেতা,দেশপ্রেমিক ১৪০০ জনতাই এই সরকারের পতনের জন্য যতেষ্ট।

এজন্য প্রয়োজন যথাযথ বলিষ্ট নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত।

বিষয়: বিবিধ

১০৮৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

308486
১২ মার্চ ২০১৫ দুপুর ০২:৩৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File