আর কতজনকে কোপালে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হবে?

লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ০৪ অক্টোবর, ২০১৬, ০৮:৪১:০২ রাত



প্রবাদে আছে চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী। অর্থাৎ চোরকে যতই ধর্মের কাহিনী শুনানো হোক না কেনো, সে চুরি করবেই। অবাক করা ব্যপার হলো, আজকাল চোরই আমাদেরকে ধর্মের কাহিনী শুনাচ্ছে। সন্ত্রাসী নিজেই সন্ত্রাস বিরোধী বুলি আওড়াচ্ছে। জঙ্গি নিজেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছে!!

সিলেটে ছাত্রীকে কোপানো ছাত্রলীগ নেতা বদরুল এর জ্বলন্ত উদাহরন। যে কিনা নিজে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিজেই জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে!! উপরের ছবিতে আমরা তাই দেখতে পাচ্ছি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকান্ডের এমন জ্বলন্ত উদাহরণগুলোর পরিমান এত বেশি যে, অন্য কোনো ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে এর এক দশমাংশ থাকলেই তারা ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ হয়ে যেতো।

খুন, ছিনতাই, রাহাজানি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, ছাত্রী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি-দখলবাজিসহ এমন কোনো জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ড নেই যা ছাত্রলীগের দ্বারা সংগঠিত হয়নি। মায়ের পেটের অপরিণত শিশু পর্যন্ত তাদের হিংস্রতার হাত থেকে রেহাই পায়নি।

প্রশ্ন হলো, আর কত অপকর্ম করলে বা কতজনকে কোপালে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হবে? বিশ্বজিৎ কিংবা খাদিজার মত আর কতজনকে প্রকাশ্যে লাইভ কোপালে টকশোজীবিগন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলবেন?

জাফর স্যার ছাত্রলীগ নামক আগাছাকে তার কাছে পাঠিয়ে দিতে বলেছেন, তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর দিয়ে নাকি তিনি ফূলগাছে পরিণত করবেন। এই বুঝি তার ফুলগাছের নমুনা?? বদরুল তো তার কাছেই ছিলো, তার প্রতিষ্ঠানেরই ছাত্র!! ফুলের চারার নাম করে গাঁজার চাষ করেছিলো জাহাঙ্গীরনগরের ছাত্রলীগ নেতা। জাফর স্যারের ফুল গাছের রহস্যও কি তাহলে এমনই??

জাফর স্যাররা আর কতিপয় নিকৃষ্ট মিডিয়ার অযাচিত প্রশ্রয় পেয়ে ছাত্রলীগ আজ এক দানব সংগঠনের পরিণত হয়েছে। জাফর স্যারদের ফিল্টারে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস আর জঙ্গিবাদ নগণ্য বখাটেপনা হয়ে ধরা দেয়। আর বাংলানিউজের মত কিছু নিকৃষ্ট মিডিয়ায় ছাত্রলীগের চাপাতির কোপ হয়ে যায় বখাটের কোপ!! অথচ অন্য ছাত্রসংগঠনের হাতের সামান্য প্লাষ্টিকের পাইপ তাদের চোখে ভয়ংকর পাইপগান হয়ে ধরা দেয়!!



বদরুল আলম শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সহসম্পাদকের মত এত বড় নেতা হওয়া স্বত্বেও তারা তাকে বখাটে হিসেবে উপস্থাপন করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে। অথচ বিরোধী কোনো ছাত্রসংগঠনের বেলায় সংগঠনের সাথে দূরতম কোনো সংশ্লিষ্টতাকেও তারা ফলাও করে প্রচার করে!! নিষিদ্ধের দাবিতে হাঁকডাক শুরু করে। অথচ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের এক দশমাংশও বাংলাদেশের কোনো ছাত্রসংগঠন করেনি।

নারীবাদিরাও আজ নিশ্চুপ!!! একজন নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে কোপানোর পরও তাদেরকে সোচ্চার হতে দেখা যাচ্ছেনা!! ইডেন কলেজের সাধারন ছাত্রীদেরকে ছাত্রলীগ তাদের নেতাদের মনোবাসনার জন্য উপঢৌকন হিসেবে পাঠালেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, বর্ষবরনের দিনে ছাত্রলীগ নারীর শ্লীলতা হানি করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, ছাত্রলীগ নেতা ধর্ষণের সেঞ্চুরি করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদেরকে নামাজ পড়া কিংবা হিজাব পড়তে বাধা দিয়ে নারীর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করলেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে, রাস্তায় প্রকাশ্যে নারীকে কোপালেও তাদের চেতনা ঘুমিয়ে থাকে!!

কিন্তু যেখানেই ধর্মের কোনো সংশ্লিষ্টতা তারা পাবে, কিংবা হিজাব পড়তে বাধ্য করার সংবাদ পাবে, কিংবা মেয়েদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার সংবাদ পাবে সেখানেই তাদের চেতনা হুড়মুড় করে জেগে উঠে। ইসলাম প্রচারকারী সংগঠন ছাত্রীসংস্থাকে নিষিদ্ধের দাবিতে তারা চেঁচামেচি করেছিলো। এবং মিথ্যা অযুহাতে আংশিকভাবে সরকার নিষিদ্ধও করেছে। অথচ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ত্রাস, খুনি, ধর্ষক, নারীর শ্লীলতা হরণকারী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি এই নারীবাদিরা একটিবারও তুলেননি।

এখনো সময় আছে। আমরা আশা করি নারী জাতির স্বাধীনতা, সতিত্ব ও নিরাপত্তার হুমকী ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও জঙ্গি কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে নারীবাদি এবং টকশো বক্তারা এখনই সোচ্চার হবেন। ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলবেন।

জঙ্গি ছাত্রলীগকে এখনই না থামালে, তাদের সন্ত্রাস কিংবা চাপাতির কোপ থেকে আপনি কিংবা আপনার সন্তানকেও রক্ষা করতে পারবেন না। কারন ইসলামী নামধারী জঙ্গিরা একটি নির্দিষ্ট কারনে এবং শুধুমাত্র পুরুষদের উপর চাপাতি চালালেও ছাত্রলীগের জঙ্গিদের চাপাতি কোনো কারন, কোনো সময় কিংবা নারী পুরুষের ধার ধারেনা।

সুতরাং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ও দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত করতে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।

বিষয়: বিবিধ

৬২৬৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378291
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৯:০৯
হতভাগা লিখেছেন : ফ্রান্কেনস্টাইন নাকি তার সৃষ্টিকারীকে হত্যা করেছিল !

এর কিছুই হবে না , কারণ এ রাজতিলকধারী ছাত্রলীগের নেতা ।

ছাত্রলীগ কিছু ঘটালে সেটার কোন উপযুক্ত বিচার না হওয়াতে ছাত্রলীগ কাউকেই পরোয়া করে না ।

আমাদের প্রগতীশীল , সুশীল ও নারীবাদীরা এখন কেউই কিছু বলবে না কারণ এটা তাদের পছন্দের দলের লোকই করেছে ।
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৯:২৯
313484
আহমেদ ফিরোজ লিখেছেন : নারীবাদীদের সন্তানরা কি ছাত্রলীগের চাপাতি থেকে নিরাপদ??
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:১০
313485
হতভাগা লিখেছেন : বছর দুয়েক আগে জাফর স্যারের স্ত্রীকে যখন ছাত্রলীগের পোলাপানেরা হেনস্তা করেছিল তখন উনি বৃষ্টিতে ভিজে একটা পার্ট নিয়েছিল । পরে ছাত্রলীগের পোলাপানদের শিশু বলে রেহাই দিতে চেয়েছিলেন ।

তার সেই শিশু ছাত্রলীগ কি এখনও বড় হয় নি ?
০৪ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:৪৯
313486
আহমেদ ফিরোজ লিখেছেন : বদরুল তার প্রতিষ্ঠানেরই তরুণ ছাত্রলীগ, যাকে তিনি মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে চাপাতি শিক্ষা দিয়েছেন।
378296
০৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:২৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ছিছি!!! কি যে বলেন! ওরাত শিশু। ছুড়ি নিয়ে থেলতে গিয়ে একটা সামান্য এক্সসিডেন্ট ঘটাইছে!!
378305
০৫ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১২:৪০
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : Excellent brother, Keep writing

378309
০৫ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৯:৫৬
রাশেদ বিন জাফর লিখেছেন : সারা দেশবাসি আজ বদরুল জংগির ফাশি চায়।
ফাসি না হলে,
জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File