“আমি দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে ধমক দিয়া বসাইয়া দিবেন”
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১২:২৭:০৭ দুপুর
“আমি বার বার দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে ধমক দিয়া বসাইয়া দিবেন। লোকে দেখুক, আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই, হি...হি...।”
স্কাইপ ক্যালেঙ্কারিতে ফাঁস হওয়া এই বিখ্যাত উক্তির কথা নিশ্চই সবার মনে আছে। মনে না থাকলে কিছুটা বলে মনে করিয়ে দিচ্ছি।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক বেলজিয়াম প্রবাসী জিয়াউদ্দিনের সাথে স্কাইপি সংলাপে সরকার পক্ষের প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম সম্পর্কে বলেছিলেন,, ‘আমি মালুমকে কোনো কারণ ছাড়াই ধমক দিয়ে বসিয়ে দিছি। পরে আবার রুমে ডাকছি। মালুম বলছিলেন, এইডাই ঠিক আছে। আমি বার বার দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে ধমক দিয়া বসাইয়া দিবেন। লোকে দেখুক, আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই, হি...হি...।’
পুরনো কাহিনীটা নতুন করে সামনে আনার কারন হচ্ছে, বর্তমানে আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদও পুরনো সেই নিজামুল হকের চরিত্রে অভিনয় করছেন।
গত পরশু পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিএনপির প্রতি সদয়, আওয়ামী লীগের প্রতি নির্দয়।’
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছুক্ষণ পরই সিইসি রকিব সাহেব বললেন, “সব দলের কিছু না কিছু অসুবিধা হচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে আমরা অ্যাকশন নিচ্ছি। আমাদের অবস্থান নিউট্রাল। ”
কি বুঝলেন? ঐ যে মালুম সাহেব বলেছিলেন, আমাকে ধমক দিয়ে বসিয়ে দিবেন, লোকে দেখুক, আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই!! এক্ষেত্রে হানিফ সাহেব মালুমের মতই আজাইরা লোক দেখানো অভিযোগ তুলে দাঁড়িয়ে গেলেন আর রকিব সাহেব নিউট্রালের ধমক দিয়ে বিচারক নিজামূল হকের ভুমিকায় অভিনয় করলেন!!
পাবলিকরে ওরা ভোদাই মনে করে। তাইতো পাবলিকরে দেখানোর জন্য এবং নিরপেক্ষতা বুঝানোর জন্য ওরা বার বার সেই পুরনো নাটক মঞ্চায়ন করে!!
আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের ভয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় নামতে পারছেনা বিরোধীপক্ষ। সাবেক মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে কেউ বাদ পড়েনি তাদের হামলা থেকে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গাড়িতে পর্যন্ত হামলা করলো। বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে পিটালো, তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিলো। জোর করে বিরোধী পক্ষের প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করাচ্ছে। ঠুনকো কিংবা অযাচিত অভিযোগে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হচ্ছে। অভিযোগের পাহাড় অথচ নামমাত্র তদন্ত করে কিংবা না করেই বলে দেয়া হচ্ছে এটা ভিত্তিহীন!!!
পত্রিকায় শিরেনাম হচ্ছে, অভিযোগের পাহাড়, ইসি বলছে ‘ভিত্তিহীন’ !!
সরকার দলীয়দের সহিংশতায় প্রাণ পর্যন্ত হারিয়েছে একজন। এরপরেও ইসি বলছে তারা নাকি নিউট্রাল!!! এটা নিউট্রাল নাকি নিউ টাল(মাতাল)??
মিডিয়াকে ভোটগ্রহন সরাসরি সম্প্রচারে বারন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে ব্যপক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এমনকি এবারের নির্বাচনে নাকি কোনো পর্যবেক্ষকও নেই!! এবার তো তাইলে বাধাহীন নিরাপদ এবং অপ্রকাশ্য ভোট ডাকাতি চলবে।
সরকারের শরিক এরশাদ সাহেব বলেছেন, সকাল ৯টার মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে ভোট । জনগনও বলাবলি করছে বেলা ১১টার মধ্যে ভোট হয়ে যাবে
হবেও তাই।। বিএনপি বলছে নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তারা আন্দোলনে নামবে
আমি বলি সেই মুরোদ কি আর বিএনপির আছে? কারন আন্দোলনের নামে তারা যতবারই দাঁড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছে, ততবারই সরকার ক্রসফায়ার, গুম, খুনের ধমকে তাদেরকে বসিয়ে দিচ্ছে। এবার চেষ্টা করলেও সেটাই হবে।
কারন নির্বাচন তো আসলে নামে। নির্বাচনের নামে মুলত সরকার মাথা ছাড়া দিয়ে উঠা নেতাগুলা চিহ্নিত করে ক্রসফায়ারের লিষ্ট তৈরি করছে।
বিষয়: বিবিধ
৯৪৮৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহমত
আর মালুম নিজামুলের কথাগুলো খুব মনে আছে।
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্য করতে লগইন করুন