“ডিসমিসড” শব্দটা বুঝি কলবেই জারি করা?
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ১৯ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৯:২৫ রাত
ব্যাক্তিকে হত্যাই যদি হয় রাষ্ট্রযন্ত্রের একমাত্র লক্ষ্য,
তবে কি লাভ “ডিসমিসড” বিচারককে শুনিয়ে যু্ক্তি তর্ক??
শুধুমাত্র এবং কেবলমাত্র “ডিসমিসড” শব্দটি বলেই যখন প্রধান বিচারক একজন মানুষের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে দেন, তখন বুঝতে আর বাকি থাকেনা যে যুক্তি তর্কের কোনো বালাই আসলে তার কাছে নেই। “ডিসমিসড” শব্দটা বলার অপেক্ষায়ই ছিলেন। “ডিসমিসড” শব্দটা যেনো রিভিউ আবেদনের আগে থেকেই তিনি কলবে জারি রেখেছেন!!
সমস্যা হলো, ফাঁসি তো কেবল একটি অভিযোগে। অন্তত দুটি অভিযোগ হলেও অন্তত একটিতে সামান্য কমিয়ে যাবজ্জীবন করে জনতার সম্মখে কিছুটা ন্যয়বিচারের আইওয়াশ করা যেতো। সেই সুযোগটাও এটাতে ছিলোনা। কারন, দাদাদের কসম, গদির কসম, ৫ জানুয়ারির সিলেকশনের কসম, ক্রসফায়ারের কসম, গুমের কসম, বাকশালের কসম, ফেসবুকের কসম..... ফাঁসি যে দিতেই হবে!!
মোট ৭টি অভিযোগের মধ্যে ৬নং অভিযোগে মুজাহিদকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। একটু দেখা যাক ৬নং অভিযোগে কি ছিলো:
অভিযোগ নং -৬: একাত্তরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প তৈরি করে। পরবর্তীতে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনের পর সদস্যরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতেন। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি হওয়ার সুবাদে ওই আর্মি ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ছিল মুজাহিদের। সেখানে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করতেন তিনি। এ ধরনের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী নিধনসহ গণহত্যার মতো ঘটনা সংঘটিত হয়।
অভিযোগে বলা হলো তিনি আর্মি ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এই কথা প্রমানের জন্য তাকে বানানো হলো আলবদর কমান্ডার। অর্থাৎ তিনি আলবদর কমান্ডার হিসেবে সেখানে যেতেন।
মুজাহিদ সাহেব যে কখনো আলবদর নেতা বা কমান্ডার ছিলেন না, এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ দিয়েছেন এই মামলার সরকারপক্ষের তদন্ত কর্মকর্তা (আবদুর রাজ্জাক খান) নিজেই। তিনি ট্রাইব্যুনালে জেরার জবাবে খুবই স্পষ্ট করে বলেছেন, এই মামলার পুরো তদন্তকালে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বা শান্তি কমিটির কোনো তালিকাতেই মুজাহিদের নাম ছিল না বা পাওয়া যায়নি। এছাড়া অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা আরও স্বীকার করেছেন যে, মুজাহিদ রাজাকার বা আলবদরই ছিলেন না।
এছাড়া সরকারপক্ষের অন্য একটি ডকুমেন্ট ‘আলবদর’ নামক বইতেও কোথাও মুজাহিদের নাম নেই। যেখানে আলবদর বইটিই লেখা হয়েছে, আলবদরদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সেখানে কমান্ডার হিসেবে মুজাহিদের নাম থাকবে না, এটা কীভাবে সম্ভব?
মুলত আলবদর ছিলো তখন সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত একটি শাখা। এটি সম্পূর্নরুপে সেনাবাহিনীর তথা এ কে নিয়াজীর আওতাধীন ছিলো। এটা আমার কথা নয়, এটা মুনতাসির মামুনের বইয়ে এ কে নিয়াজীর ইন্টারভিউতেই উল্লেখ আছে। যেই মুনতাসির মামুন পারলে এখনই কারাগারে গিয়ে নিজ হাতে মুজাহিদ সাহেবের ফাঁসি কার্যকর করে আসে!!
এবার যদি আমি ধরেও নেই যে মুজাহিদ সাবে তাদের ক্যাম্পে যেতেন এবং তাদেরকে পরামর্শও দিতেন। তাহলে তার এই পরামর্শের খবর কি হঠাৎ করে এখনই সবাই জানতে পারলো?? আগে কেউ জানতো না??
জেনে থাকলে বুদ্ধিজীবি হত্যায় এ পর্যন্ত সর্বমোট ৪২টি মামলা হয়েছে। এই ৪২টি মামলার একটি মামলাতেও মুজাহিদ সাহেবকে আসামী করা হয়নি কেনো??
বলা হচ্ছে যেহেতু তিনি পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি ছিলেন, সেহেতু তিনি সুপিরিয়র পাওয়ার হিসেবে বুদ্ধিজীবি হত্যাকান্ডে পরামর্শ দিয়েছেন। আমার প্রশ্ন এই ৪২টি মামলা করার সময় এসব যেহেতু সেহেতু তত্ত কোথায় ছিলো??
সুনির্দিষ্টভাবে কোনে অভিযোগেই তাকে অভিযুক্ত না করে কেবলই ধারনার উপর ভিত্তি করে একজন মানুষকে কিভাবে ফাঁসি দেয়া যায়??
আমার এসব প্রশ্ন সরকার কিংবা বিচারকদের প্রতি নয়। এসব প্রশ্ন সাধারন মানুষ এবং দালাল মিডিয়ার গোয়েবলসীয় প্রচারণায় বিভ্রান্ত হওয়া তরুন যুবাসহ সকলের প্রতি।
সবার প্রতি অনুরোধ, বিবেকটাকে একটু কাজে লাগান। দালাল মিথ্যাবাদী মিডিয়ার শেখানো বুলি অন্ধেরমত নিজেদের কলবে জারি করবেন না প্লীজ....!!!!
বিষয়: বিবিধ
২৮৯৭ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমরা অতটুকুও বলব না ঐ জালিমদের ক্ষেত্রে
অপি বাইদানকে ব্লগ করেন প্লিচ
কসম ঝঞ্ঝাবায়ুর। ১
অতঃপর বোঝা বহনকারী মেঘের। ২
অতঃপর মৃদু চলমান জলযানের, ৩
অতঃপর কর্ম বন্টনকারী ফেরেশতাগণের, ৪
পথবিশিষ্ট আকাশের কসম। ৭
সূরা আত তুর(৫২)
কসম তূরপর্বতের, ১
এবং লিখিত কিতাবের, ২
প্রশস্ত পত্রে,৩
কসম বায়তুল-মামুর তথা আবাদ গৃহের ৪
এবং সমুন্নত ছাদের, ৫
এবং উত্তাল সমুদ্রের, ৬
আল্লার পেয়ারা মুমিন মুজাহিদকে বাঁচানোর কোন কসমই কাজে এল না। রাজাকার মুজাইদ্দা অক্ষম আল্লা ভাইরাসকে বাদ দিয়ে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রান ভিক্ষা চেয়ে আরো কিছু দিন বেঁচে থাকতে চায়।।
আর আমি আশাকরি আপনার মনেও একসময় আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন হবে। যেমনভাবে এতদিন ধরে ভুলভাবে জানা আইএস মুসলিম সংগঠন নয় এবং এটা ইসরাইলের তৈরি কথাটাকেও বিশ্বাস করা শুরু করেছেন। এই বিশ্বাসটা আমাদের মাঝে আগে থেকেই ছিলো। এবং এটা সত্য বলেই ছিলো। যেমন সত্য আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসটাও আমাদের মনে আছে।
ফ্যাক্টসচুয়াল লজিক্যাল উপস্থাপনা। শতভাগ পাগল, শতভাগ অনৈতিক, শতভাগ বিক্রি হয়ে যাওয়া কোন মানুষ ও এ সকল ফ্যাক্টেস এর আলোকে অমন রায় দিতে পারবে না।
কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায় কে যখন ফাঁসির রায়ে পরিনত করা হল এবং সে ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হল - আমার মনে হয় পৃথিবীর তাবৎ মুসলমান (যে প্রতারিত হয় নি) এই বিচারের প্রতারনা শতভাগ বুঝেছে। আমার দুঃখ হয়, কষ্ট হয় এ দেখে যে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব ও এর দলীয় আইনজীবিরা সে প্রতারনা বুঝতে পারেনা, বুঝেনা - তারা তথাকথিত বিশ্ব মিথ্যুক ও প্রতারক ইউকে, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার আশ্বাসে আশ্বস্থ, তাঁরা গায়ে তথাকথিত জংগী তকমা লাগার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্থ। তাঁরা সবসময় বলে আসছেন - এই কোর্ট এর উপর ওনাদের আস্থা আছে। আল্লাহু আকবর। সাধারন মানুষের কাছে অমন অসভ্য, বর্বর কোর্টকে কি সার্টিফাই এ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন। কাল কেয়ামতের দিন এমন অন্যায় এর মূর্ত প্রতিষ্ঠানকে এমন সার্টিফিকেট প্রদানের জন্, সাধারন মানুষকে ভুল বোঝাবার জন্য - নিশ্চয়ই ওনারা জিজ্ঞাসিত হবেন - আমি প্রত্যাশা করি আল্লাহ ওনাদের আনসার টাকে কবুল করুক কিংবা ভুল হলে ক্ষমা করুক।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি জামায়াতের অসংখ্য কর্মী তাদের চোখের সামনে তাদের নিরাপরাধ নেতাদেরকে একে একে ঝুলে পড়তে দেখছে, মনোবল হারাচ্ছে। মনোবল হারানো কোটি কর্মী সমর্থকের চেয়ে - মনোবল সহ খুনীকে নিবৃত করার যুদ্ধ মুসলিমের কাছে অনেক অনেক লাভজনক ছিল। যদি জামায়াতের লিডারশিপ তা আমলে নিত। তবে অসংখ্য মানুষ জান্নাতের সুবাস পেত। কারন গনতন্ত্রের জন্য মরার চেয়ে কোটি কোটি গুন উত্তম ছিল কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামানদের প্রান রক্ষার জন্য ফাইট করে শহীদ হওয়া। আল্লাহ ভাল জানেন।
আমি ভুল হতে পারি, আমার জ্ঞান ও জামায়াতে ইসালামীর লিডারদের তুলনায় অনেক কম - তারপর ও একজন মুসলিম হিসাবে সৎ উপদেশ দেবার সেন্স হতে বলতে পারি
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের উচিত, ওনারা কিংবা তারা কি চায় - তা সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময় প্রথমে বিবেচনায় না নিয়ে - আল্লাহ আর আল্লাহর রাসুল সঃ ঐ সমস্যা সমাধানে 'কি চায়' তা মুখ্য হিসাবে গ্রহন করুক। আর তারপর বাকিরা কে কি চায় তা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিক। আদার ওয়াইজ সব সময় ই প্রতারিত হবে। ওনাদেরকে (লিডার) ভালবাসেন বলে, ওনাদেরকে সন্মান করে বলে সাধারন মুসলমানরাও প্রতারিত হতে থাকবেন - এবং এক সময় নিবেদিত প্রান কর্মী কাছ হতে অমন গালি ই শুনবে এই সকল সাধারন মানুষ যে, দূর্বল ঈমানের লোকেরাই হতাশ কিংবা মনোবল হারায়।
ধন্যবাদ আপনাকে। আসসালামুআলাইকুম।
কারন,'তাদের থেকে তারা কেবল একটি কারণেই প্রতিশোধ নিয়েছে। আর তা হচ্ছে, তারা সেই মহাপরাক্রমশীল আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি সর্ব প্রশংসিত, যিনি আকাশ ও পৃথিবীর অধিকারী।'(সূরা বুরুজ : ৮-৯)
‘তোমরা কি একজন লোককে শুধু এ কারণেই হত্যা করবে যে, সে বলেছে, আল্লাহ আমার রব?’ (সূরা মুমিন : ২৮)
জাযাকাললাহ খায়ের
মন্তব্য করতে লগইন করুন