গর্ভের শিশু গুলি খাওয়ার পর এবার ১১ মাসের শিশুর কারাবাস!!
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৩৬:২৭ সকাল
সকালে ফেসবুকে ডুকার সাথে সাথেই ওয়ালে একটা নিউজের লিংকে নজর পড়লো।
নিউজটার শিরোনাম: ১১ মাসের শিশুর ১৯ ঘণ্টা হাজতবাস
নিউজটা প্রথম বিশ্বাস হলো না। ১১ মাসের শিশু তো কথাই বলতে পারেনা, সে আবার কোন অপরাধে কারাবরণ করবে?? তাছাড়া ফেসবুকে চমকপ্রদ অনেক ভুয়া নিউজের লিংক দিয়ে মূলত অন্য সাইটে ভিজিট করানো হয়। কিন্তু নিউজের নিচে দেখলাম প্রথম আলো লিখা!! তারপরও বিশ্বাস হলো না। কারন, প্রথম আলোর নাম ব্যবহার করেও ইদানিং নকল লিংক তৈরি করা হচ্ছে। যেটাতে ক্লিক করলে অন্য সাইটে ডুকে যায়। দেখার জন্য ক্লিক করলাম।
আমাকে অবাক করে দিয়ে সত্যিকারের প্রথম আলোর সাইটই চলে আসলো। এবং নিউজের শিরোনামটাও হুবহুই আছে!!!
নিউজ পড়ে আমি বাকরুদ্ধ। এ কোন দেশে আমি বাস করছি?? ১১ মাসের শিশুকেও দীর্ঘ ১৯ ঘন্টা কারাবরণ করতে হলো!! পুলিশ কর্তৃক অপহৃত(বাবাকে না পেয়ে তার সন্তানকে নিয়ে যাওয়া এক প্রকার অপহরণই) ১১ মাসের এই শিশুটি অবশেষে ৪২ হাজার টাকা মুক্তিপনের(ঘুষ) বিনিময়ে ছাড়া পেলো!!!!!!
কিছুদিন আগেই ছাত্রলীগের গুলিতে ক্ষত বিক্ষত হয়েছিলো মায়ের গর্ভে থাকা শিশু!!! আজ আবার ১১ বছরের শিশুর ১৯ ঘন্টার কারাবাস!!! হিউম্যানিটি ধর্মের অনুসারী মানবতাবাদীরা এই অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবেন কি??? নাকি মানবতা সবার জন্য নয়, গুটিকয় গোষ্ঠির জন্য বরাদ্ধ??
দেশের এমন অবস্থা চলতে থাকলে দুদিন বাদে বিশ্বমিডিয়ায় কেবল সিরিয়ার শরণার্থীদের খবরই আসবেনা..... বাংলাদেশের শরণার্থীদের করুণ অবস্থার কথাও শুনতে হবে দেদারছে!!! আল্লাহ আমাদের জালিমের হাত থেকে রক্ষা করুন।
পুরো নিউজটি হুবহু এখানে তুলে ধরা হলো:
রয়েলের বয়স ১১ মাস। বুধবার রাতে তার বাবাকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। না পেয়ে ধরে নিয়ে আসে তার মাকে, সঙ্গে তাকেও। এরপর মা ও শিশুপুত্রকে ১৯ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় থানাহাজতে।
ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার। রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদের অভিযোগ, স্ত্রী-সন্তানকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে ৪২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে পুলিশকে। তবে পুলিশের অভিযুক্ত কর্মকর্তা এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছুই বলছেন না।
মহেশপুর উপজেলার বাসিন্দা রাজু আহম্মদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর নামে একটি মামলা ছিল। তবে ১৬ দিন আগে তিনি ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। বুধবার রাতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার লাটিমা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি। রাত আটটার দিকে মহেশপুর থানার টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই) আমির হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। পুলিশ তাঁর নাম ধরে ডাকাডাকি করতে থাকলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। তারা তাঁকে আটক করতে না পেরে তাঁর স্ত্রী ও ১১ মাসের ছেলে রয়েলকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রাজুর অভিযোগ, আটকের সময় তাঁর স্ত্রীকে মারধর করা হয়। নারী পুলিশ না থাকায় পুরুষ পুলিশরা সন্তানসহ তাঁর স্ত্রীকে টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যান। বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে থানাহাজতে আটকে রাখা হয়। এরপর গতকাল সকালে থানার টিএসআই আমির হোসেন তাদের ছাড়তে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। একপর্যায়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে বেলা তিনটার দিকে তাদের মুক্ত করেন। ধারদেনা করে টাকার জোগাড় করে চাচা আবদুল আজিজের হাত দিয়ে টাকা পৌঁছে দেন।
আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, রাজু মুঠোফোনের মাধ্যমে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকার চুক্তি করেন। তিনি টাকা নিয়ে থানায় যান। সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা আমিরের হাতে টাকা তুলে দিয়ে বৌমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টিএসআই আমির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজু আহম্মদ মামলায় জামিন নিলেও তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। যে কারণে তাঁকে আটক করতে গিয়েছিলাম। পুলিশ দেখে রাজু পালিয়ে যান। এরপর তাঁর স্ত্রীকে একা অন্যের বাড়িতে রেখে আসলে কেমন হয়, তাই নিরাপত্তার জন্য মা-ছেলেকে থানায় এনে রাখা হয়।’
টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আমির হোসেন পরে কথা বলবেন বলে জানান। বারবার প্রশ্ন করলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান।
বিষয়: বিবিধ
১০৯৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন