আস্তিক বনাম নাস্তিক
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ০২ জুলাই, ২০১৫, ১১:৪১:৩৪ সকাল
একজন মায়ের গর্ভে দুটি ছোট্ট জমজ শিশু বড় হচ্ছিল। একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করছে, তুমি কি ডেলিভারির পরে আরেকটি জীবনে বিশ্বাস করো?
অন্যজন বলল, কেন, অবশ্যই করি। ডেলিভারির পরবর্তী জীবনে কিছু একটা আছে। সম্ভবত পরবর্তী জীবনের জন্য আমাদেরকে এখানে তৈরি করা হচ্ছে।
“ননসেন্স” বলল প্রথমজন। ডেলিভারির পরে আসলে কোন জীবনই নেই। কি ধরনের জীবন হতে পারে সেখানে?
দ্বিতীয় জন বলল, আমি জানি না কিন্তু এখানের চেয়ে পরবর্তী জীবনটা অনেক আলোময় হবে। সম্ভবত আমরা আমাদের নিজের পায়ে হাঁটতে পারবো এবং নিজের মুখ দিয়ে খেতে পারবো। সম্ভবত আমরা সেখানে নতুন একটা অনুভূতি পাবো যেটা এখন বুঝতে পারছি না।
প্রথম জন প্রতুত্যরে বলল, এটা অযৌক্তিক। হাঁটা একবারেই অসম্ভব। আর আমাদের মুখ দিয়ে খাবার খাবো? কি হাস্যকর কথা!! আম্বিলিকাল কর্ডের (নাড়ি) মাধ্যমেই তো আমরা প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং আর যা কিছু প্রয়োজন সবই পেয়ে থাকি। কিন্তু এই আম্বিলিকাল কর্ড টাও তো খুব ছোট। তার মানে ডেলিভারির পরে জীবনের সম্ভাবনা যৌক্তিকভাবেই বাতিল হয়ে যায়।
দ্বিতীয় জন জোরের সাথে বলল, ভালো। তবে আমি মনে করি সেখানে কিছু একটা আছে যেটা এখান থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সম্ভবত আমাদের নাড়ি বা খাদ্যনালীটির আর প্রয়োজনই হবে না।
প্রথম জন প্রতুত্যরে বলল, ননসেন্স!!! যদি সেখানে কোন জীবন থেকেও থাকে, তাহলে সেখান থেকে এখানে কেউ ফেরত আসে না কেন? ডেলিভারিই হচ্ছে এই জীবনের পরিসমাপ্তি, এবং সেখানে অন্ধকার, নিরবতা আর বিস্মরণ ছাড়া আর কিছুই নেই। আসলে বিষয়টি এমন ছাড়া আর কিছুই না।
ভালো, আমি এটা জানি না, দ্বিতীয়জন বলল। কিন্তু অবশ্যই আমরা আামাদের মায়ের সাথে সাক্ষাত করবো এবং সে আমাদের আগলে রাখবে।
প্রথম জন উত্তরে বলল, মা?? তুমি কি আসলেই “মা” তে বিশ্বাস করো?? এটা হাস্যকর!! যদি “মা” থেকেও থাকে, তাহলে সে কোথায় এখন?
দ্বিতীয়জন বলল, তিনি আমাদের চারপাশেই আছেন। তিনি আমাদেরকে চারপাশে ঘিরে রেখেছেন। আমরা তারই সত্ত্বা। আমরা তার মধ্যেই বাস করি। তাকে ছাড়া পৃথিবীর কিছুই থাকতে পারে না।
প্রথম জন বলল, ভালো, আমিতো তাকে দেখছি না, তাই এটিই যৌক্তিক যে, তার কোন অস্তিত্ব নেই।
দ্বিতীয় জন উত্তরে বলল, মাঝেমাঝে আমরা যখন নিরব থাকি তখন তুমি যদি সত্যিই মনযোগের সাথে শুনতে চেষ্টা করো, তুমি তার উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে, এবং তুমি তার ভালোবাসপূর্ণ কন্ঠ শুনতে পাবে, সর্বখানে।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৯ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একটি কাল্পনিক কথোপকথন, মন চাইলে শিক্ষনীয় হিসেবেও নিতে পারেন
নূন্যতম "সংগৃহীত" কথাটা লেখাও কিন্তু শিষ্ঠাচারের মধ্যে পরে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন