যে কারণে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে মাঠে যাননি প্রধানমন্ত্রী
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ৩০ জুন, ২০১৫, ০৩:১১:০৪ দুপুর
জিম্বাবুয়ে ও পাকিস্তানকে টাইগারদের হোয়াইট ওয়াশ উদযাপন করতে মাঠে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি গ্যালারিতে বসে খেলা দেখা এবং পুরস্কার বিতরণীর পর ক্রিকেটারদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ফটোসেশনও করেছেন।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যপার হলো, ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের কোনো ম্যাচই দেখতে মাঠে যাননি প্রধানমন্ত্রী। এমনকি পুরস্কার বিতরণীতেও তাকে দেখা যায়নি!!
সবাই আশা করেছিল, প্রধানমন্ত্রী অন্তত এই মহা আনন্দের দিনে সিরিজ বিজয়ীর ট্রফিটা টাইগারদের হাতে তুলে দেবেন। কিন্তু না, সবার সেই আশায় গুড়েবালি!!
আমাদের ক্রিকেটপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য ব্যপারটা কেমন অস্বাভাবিক দেখায় না? যদিও ওনার ক্রিকেটপ্রীতি কেবল রাজনৈতিক কারনেই!! কারন এর মাধ্যমে ক্রিকেটপ্রেমী জনতার সাময়িক সিমপ্যাথি অর্জন করা যায়। এটা অবশ্য খারাপ কিছুও নয়। সিমপ্যাথি অর্জনের এই ব্যপারগুলোতে খালেদা সবসময়ই হাসিনার কাছে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে আসছে!!
সে যাই হোক, বাংলাদেশের সাথে ভারতের করুন পরাজয় দেখতে শেখ হাসিনার মাঠে না যাওয়ার পিছনে কারন হিসেবে সবাই তার অতিরিক্ত ভারতপ্রীতিকেই তুলে ধরছেন!!
তবে এটাই একমাত্র কারন না হলেও কারনটা একেবারে ফেলনা নয়। কারন ওনার মনের অন্তর্নিহিত ভারতপ্রীতি(ক্ষমতার স্বার্থে) প্রায় সময়ই জনসম্মুখে প্রকাশ পেয়েছে। যেভাবে প্রকাশ পেয়েছিলো নিচের এই ছবিটিতে...
অবশ্য মাঠে না যাওয়ায় জনমনে যে অনেক সন্দেহের সৃষ্টি হয়েঠে সেটা তো আর আমাদের চতুর প্রজ্ঞাবান প্রধানমন্ত্রীর অজানা নয়। তাই গতকাল সংসদে মাঠে না যাওয়ার পেছনে একটা গোজামিল কারনও দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তিনি নাকি ‘একটু’ অসুস্থ ছিলেন!! তাই প্রবল আশা থাকা সত্বেও মাঠে যেতে পারেননি!!
এটা কি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়? ম্যাচ হয়েছে তিনটা। তিন ম্যাচের সময়ই তিনি অসুস্থ ছিলেন? প্রথম ম্যাচে জয়ের প্রাক্কালে যেতে পারতেন, অসুস্থ থাকলে দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিজ জয়ের প্রাক্কালে যেতে পারতেন, সেক্ষেত্রেও অসুস্থ থাকলে তৃতীয় ম্যাচে পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যেতে পারতেন। তিন দিনেই তিনি অসুস্থ ছিলেন, এটা কেউ বিশ্বাস করবে?
আমিসহ অধিকাংশ মানুষই ভেবেছিলো হয়তো রমজানের তারাবির নামাজের কারনেই তিনি মাঠে আসতে পারেননাই। যেহেতু খেলাগুলোর ফল নির্ধারন হয়েছিলো তারাবির সময়ই। যিনি তাহাজ্জুত নামাজ বাদ দেননা, তিনি নিশ্চই তারাবির নামাজও বাদ দেননা। তাই হয়তো মাঠে আসতে পারেননাই!!
তারাবির কথা বললেও আমরা কিছুটা বিশ্বাস করতাম। কিন্তু তিনি মিথ্যা অসুস্থতার অযুহাত দেখালেন!!
তার মানে জনমনের আশঙ্কাকেই কি সত্য বলে ধরে নিবো?
দুদিন আগেই যেই মনিবের সফরে জানপ্রাণ উজাড় করলেন, নি:স্বার্থে সব বিলিয়ে দেয়ার চুক্তি করলেন, একসাথে বসে হাসলেন, সেই মনিবের দেশের পরাজয়ে কি উল্লাশ করা যায়?
এটা খুব ফালতু কথা মনে হতে পারে। কিন্তু দালাল মিডিয়ার কিছু নির্লজ্জ কাজ কারবার এসব কথার যৌক্তিকতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে!!
সেদিন এটিএন নিউজের দুটি বিশেষ রিপোর্ট দেখলাম। ভেবেছিলাম ভারতের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের একদিন পর ক্রিকেট নিয়ে বিশেষ রিপোর্ট মানেই টাইগারদের সাফল্য আর বিরত্বগাথা রিপোর্ট হবে। কিন্তু দেখার পর আমি পুরাই অবাক!!
রিপোর্ট দুটি দেখে মনে হলো যেনো এটি বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল নয়, ভারতের কোনো চ্যানেল। তাই সিরিজ হারার মনোকষ্টে প্রতিপক্ষ দেশের নানা দোষ ত্রটি তুলে ধরে মনকে সাময়িক বুঝ দেয়ার চেষ্টা চলছে!!
প্রথম রিপোর্টে ভারতের ফ্যান সুধীর গৌতমের উপর মিথ্যা হামলার কাহিনী তুলে ধরে গ্যালারির বাংলাদেশি দর্শকদের নীতি নৈতিকতা ভদ্রতার তুলোধুনা করা হলো। আর দ্বিতীয় রিপোর্টে মোজোর ব্যাম্বো ইজ অন বিজ্ঞাপনের নীতি নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে তথ্যমন্ত্রী ইনুর মতামত নিয়ে বিজ্ঞাপনটি নিষিদ্ধের দাবি তুললো!! মনে হলো মোজোর ব্যাম্বো যেনো এই দালালদের পশ্চাতেই অন করা হয়েছে!!
এছাড়া সুধীর গৌতমের উপর মিথ্যা হামলা প্রচার করে প্রথম আলোর দালালী তো আছেই!!
ভারতের করুন পরাজয়ে ছোটখাটো দালালদেরই যদি এমন মনোবেদনার সৃষ্টি হয়,দালালনেত্রীর কি অবস্থা হবে সেটা সহজেই অনুমেয়!!
অসুস্থতার মিথ্যা অযুহাত কেবলই ভাওতাবাজি!!
বিষয়: বিবিধ
১২৯০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন