আম্মু নিজেই তো নামাজ পড়েনা, আমাদের বলবে কি?
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ১২ জুন, ২০১৫, ১০:০৬:২৯ রাত
মসজিদে নামাজি লোকের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি মসজিদ বিমুখী বেনামাজীদের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে!!
প্রথম সংখ্যাটা চোখে পড়লেও দ্বিতীয় সংখ্যাটা আমাদের চোখে তেমন পড়েনা। মসজিদে লোকের সংখ্যা কিছুটা বাড়তি দেখেই আমরা ইসলামিষ্টরা আত্মতুষ্টিতে ভুগি। কিন্তু জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে সে হারে যে মসজিদে নামাজী লোক বাড়ছেনা সেদিকে আমাদের খেয়াল নেই।
আজকে টিউশনি বাসায় নতুন এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম। দুইটা ছাত্রকে পড়াই। একটা ক্লাস সেভেনে পড়ে আরেকটা ফাইভে। ওরা দুই ভাই। কথায় কথায় নামাজের কথা উঠলে জিজ্ঞেস করলাম তোমরা কোন মসজিদে নামাজ পড়ো? জবাব শুনে আমি পুরাই অবাক!! তারা নাকি নামাজই পড়েনা। অন্য নামাজ তো দূরের কথা শুক্রবারেও মসজিদে যায়না!! এমনকি একজন আরেকজনকে দোষারোপ করে বলতেছে ওতো নামাজ পড়তেই জানেনা!!
এমন সময় তাদের মা এলো। ওনাকে বললাম, ওরা নামাজ পড়েনা কেনো? শুক্রবারেও নাকি মসজিদে যায়না। এটা কেমন কথা? ওদেরকে মসজিদে পাঠাননা কেনো? আপনি জানেন না দশ বছর বয়সে নামায পড়তে বাধ্য করার জন্য পিতা-মাতার প্রতি নির্দেশ রয়েছে।
কথার মাঝখানেই হঠাৎ ছোট ছাত্রটা বলে উঠলো- “আম্মু নিজেই তো নামাজ পড়েনা, আমাদের বলবে কি?”
এমন কথার জন্য মহিলা একটুও প্রস্তুত ছিলেননা। লজ্জায় মাথা নিচু করে ভিতরে চলে গেলেন।
আমি আর কি বলবো.... চুপ করে রইলাম। পরে জানতে পারলাম তাদের বাবারও একই অবস্থা। শুধু শুক্রবারে মাঝে মাঝে মসজিদে যান।
মুসলিম নামধারী পরিবারের এমন অবস্থা দেখে আশ্চর্যই হলাম!! আসলে ওদের দাদা দাদীও নিশ্চই এমনই ছিলো, কিংবা এমন না থাকলেও ওদের আম্মু আব্বুকে নামাজ শেখায়নি, পড়তে তাগিদ দেয়নি। এজন্য ওরাও ওদের সন্তানদের নামাজ শেখাচ্ছেনা। বংশানুক্রমিক এটা চলে আসছে। এটা পরিবর্তন তো এত সহজে সম্ভব নয়।
নিজের সন্তানের জন্য যে ওদেরকে পরকালে জবাবদিহী করতে হবে সেই চিন্তা তারা করবে কি, জবাবদিহীতা যে হবে সেটােই তো তারা জানেনা!!
এসব পরিবারগুলোর জন্য শিবিরসহ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনগুলো আসলেই আল্লাহর বিশাল এক রহমত।
জামায়ত- শিবিরসহ ইসলামী দলগুলো না থাকলে বাংলাদেশে এমন পরিবারের সংখ্যা যে আরো কত শত গুণ বেশি হতো সেটা ভাবলেই গা শিউরে উঠে।
রাসূল সা: ও সাহাবীরা তখকার সময় কাফেরদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিতেন। কিন্তু এখন মুসলমানদেরই(জন্মসূত্রে) দাওয়াত দিয়ে কুল পাওয়া যাচ্ছেনা।
এই দাওয়াত কখনো শেষতো হবেইনা, বরং দাওয়াতের সাথে পাল্লা দিয়ে নামধারী মুসলিমদের সংখ্যাও যেনো দিন দিন বাড়ছে!!
আল্লাহ ইসলামী আন্দোলনকে ফরজ না করলে মুসলমানদের মুসলমানিত্বের ছিটেফোটাও যে আজ অবশিষ্ট থাকতো না, এটা নিশ্চিত!!
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যদিও আপনার সামনে ছোট্ট শিশুটি মাকে অপমানবোধে পেললেন!
নামাজের জন্য অবশ্যই গুরুত্ব দেতে হবে প্রতিটি পরিবার থেকে। ধন্যবাদ সচেতনতা মুলক পোস্টটির জন্য।
এসব পরিবারগুলোর জন্য শিবিরসহ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনগুলো আসলেই আল্লাহর বিশাল এক রহমত।জামায়ত- শিবিরসহ ইসলামী দলগুলো না থাকলে বাংলাদেশে এমন পরিবারের সংখ্যা যে আরো কত শত গুণ বেশি হতো সেটা ভাবলেই গা শিউরে উঠে।
ঠিকই বলেছেন ভাইজান। অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন