“আনিসুল হকদের মানুষ করো, বাঙালিকে সভ্য”
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ ফিরোজ ১৭ এপ্রিল, ২০১৫, ০৯:৫৩:৪১ রাত
বাসে যাতায়াতের সময় প্রায় সময়ই ওনাদের দেখা মেলে....
ওনারা ব্যপক দরদী মনের মানুষ!
তবে সেই দরদ কোনো মানবের জন্য নহে, ওনাদের সকল দরদ কেবলমাত্র এবং একমাত্র মানবীর জন্যই বরাদ্ধ!!
মানবী দেখিলেই নিজের সিটখানা ছেড়ে তাহাদিগকে বসিতে দিতেই ওনাদের তোড়জোড়।
মানবীর কষ্ট একেবারেই সহ্য করতে পারেন না তারা!!
অথচ, শতবর্ষি বুইড়া মানব ঘন্টা অব্দি ওনার নাকের ডগায় বাসের লোহার হেন্ডেলে ঝুলে থাকিলেও ওনাদের দরদ একটু খানি নড়াচড়াও করেনা!!
তাই ওনাদেরকে মানবদরদী না বলে ‘মানবীদরদী’ নামে ভূষিত করা লাগে।
ভূপেন হাজারিকা আজ বেঁচে থাকলে হয়তো এসব মানবীদরদীদের তরে গাইতেন-
“মানব মানবীর জন্য, জীবন জীবনের জন্য;
এতটুকু সহানুভূতি কি মানব পেতে পারেনা ও মানবী....”
সর্বদা মানবীর সহানুভূতি প্রত্যাশী তেমনি একজন মানবীদরদী হচ্ছেন প্রথম আলো খ্যাত সাহিত্যিক আনিসুল হক সাহেব।
বর্ষবরনে নারীকে বিবস্ত্র করার ঘটনা নিয়ে তিনি আজ প্রথম আলোতে একটি কলাম লিখেছেন
লেখাটির শিরোনাম- ‘পুরুষকে মানুষ করো, বাঙালিকে সভ্য’
লেখায় সেদিন ছাত্রলীগের কিছু বিকৃত রুচির বখাটের নিকৃষ্ট কর্মকান্ডকে তিনি চাপিয়ে দিলেন পুরো 'পুরুষ' জাতির উপর!!
পুরুষ জাতিকে তাই মানুষ হওয়ার জন্য বললেন।
অথচ বিবস্ত্র করা সেই নারীকে একজন পুরুষই রক্ষা করেছিলো। নিজের গায়ের শার্ট পরিয়ে তার লজ্জা নিবারনের চেষ্টা করেছিলো।
এভাবেই তারা মূল অন্যায়কারীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে। কারন এই কুলাঙ্গাররা যে ওনাদেরই চেতনার ধারক।
অন্যদিকে নারীকে বানালেন ধোয়া তুলসি পাতা!!
কারন নারীর সুনাম গাইলে তাদের কাছে সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়, সহানুভূতি পাওয়া যায়!!
ঠিক বাসের সেই মানবীদরদীর মত!!
বহুদিন আগে ২৫ বছরের এক তরুণী নাকি তাকে বলেছিলো, আপনারা পুরুষেরা কখনোই আমাদের বেদনাটা বুঝবেন না। ধরুন, বিদ্যুৎবিহীন চৈত্রের রাত ১১টায় তীব্র গরমে আপনারা পুরুষরা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে রাস্তায় পায়চারি করতে পারেন, কিন্তু আমরা মেয়েরা কি এটা করতে পারবো এই দেশে?
সেদিন ঐ নারীকে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেন নি। জবাব দিতে না পারার সেই বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছেন আজো!!
নারীকে রাস্তায় যেতে হবে কেনো? বাড়ির বারান্দা আছে, উঠান আছে, ছাদ আছে, যেখানে ইচ্ছা তিনি যেতে পারেন, সমস্যা কোথায়?
স্যান্ডো গেঞ্জি পরে বাইরে গেলেই এসব মানবীদরদীদের মনোবাসনা পূরনে সুবিধা হবে!!
নারীদেরকে স্যান্ডো গেঞ্জি পরিয়ে রাস্তায় নামাতে না পারার সেই বেদনায়ই উনি ব্যথিত। যেই বেদনা উনি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন!!
তাইতো তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে নারীদের উলঙ্গ করে রাস্তায় নামানোর সেই চেষ্টা আজো চালিয়ে যাচ্ছেন!!!
অবশ্য ওনার শিরোনামের প্রথম অংশের সাথে দ্বিমত থাকলেও দ্বিতীয় অংশের সাথে সম্পূর্ণ একমত।
কারন অসভ্য হিন্দুয়ানী সংস্কৃতির পুজারী আনিসুল হকদের মত বাঙালিরা সভ্য হোক, এটা আমরা বাংলাদেশীরা সবাই কামনা করি।
আমরা কখনোই অসভ্য বাঙালি নই, আমাদের জাতীয়তাবাদ বাংলাদেশি। আমরা সভ্য বাংলাদেশি।
আমরা সভ্যই আছি। ওনাদের মত তথাকথিত কুসংস্কারাচ্ছন্ন সংস্কৃতির ধারক বাহক বাঙালিরাই মূলত বাংলাদেশিদের অসভ্য বানানোর চেষ্টা করছে।
তাইতো জাতীয় স্বার্থেই ওনার শিরোনামটার সাথেই মিল করে বিধাতার কাছে আর্জি-
‘আনিসুল হকদের মানুষ করো, বাঙালিকে সভ্য’
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৪ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তসলিমা তো সেই তরুনির আগেই বইলা গেছেন!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন