বাংলাদেশে "একমাত্র ইসলামী দল" আওয়ামীলীগ এর ইসলাম সেবার নমুনা।
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১০:২৯:৪৭ সকাল
ভুলে গেলে চলবে না, আওয়ামীলীগের সেই বিখ্যাত ডায়ালগ, "জামায়াতী ইসলামী নিজামীর উম্মত, বিএনপি জিয়ার উম্মত, আর আওয়ামীলীগ নবীজির উত্তম" . তো চলেন, নবীজির উম্মতদের কাজ কারবারের কিছু নমুনা দেখি।
১. মুসলিম লীগ থেকে ভেঙ্গে নাম রাখল আওয়ামী মুসলীম লীগ (১৯৪৯)
২. কিছুদিন পরে ভারতীয় দাদা-বাবুদের মন যোগাতে "মুসলিম" শব্দ বাদ দিয়ে নামকরণ করলো আওয়ামীলীগ (১৯৫৩).
৩. ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে তাদের ভাষায় "ইসলামী ভূত" বাদ দিয়ে নাম করলো "কাজী নজরুল ইসলাম কলেজ" (১৯৭২). নজরুল ইসলামের নামের সাথে ইসলাম থাকায় "নবীজির উম্মতদের" মাথা গরম হয়ে যায়, এইবার ইসলাম বাদ দিয়ে নজরুল কলেজ করলো। বেচারা নজরুল ইসলাম সুস্থ থাকলে হয়তো affidavit করে নাম পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়তো, নয়লে জাতীয় কবিত্ত্ব কেড়ে যুদ্ধপরাধের খাতায় নাম দেয়ার হুমকি তো আছেই। নাম পরিবর্তনের ইতিহাস কাল্পনিক নয়, শামসুর রহমান, আল্লাহর একটা মহত নামের সাথে কিছুটা মিল আছে তাই নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ প্রমান করতে "রেহমান" করার উদাহরণ আমাদের সামনে আছে।
৪. ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মনোগ্রাম থেকে কুরআনের আয়াত ‘রাব্বি জিদনী এলমা’ (আল্লাহ আমাকে জ্ঞান দাও) বাদ দিয়ে দিল আরেক দফা ইসলামের সেবা করলো "নবীজির উম্মতরা" ।
৫. জাহাঙ্গীর নগর মুসলিম ইউনিভার্সিটির নাম থেকে "মুসলিম শব্দ" বাদ দিল (১৯৭২). সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে মুসলিম বাদ দিল (১৯৭২). আমার যতটুকু জানা আছে, নবীজির উম্মতদের কাছে নাকি মুসলিম আর ইসলাম শব্দ খুব প্রিয়, আর ইবলিশের কাছে নাকি খুব ডিস্টার্ব সৃষ্টিকারী। আওয়ামীলীগের মুসলিম আর ইসলাম শব্দ নিয়ে এতো চুলকানি আমার মনে খানিকটা সন্দেহ সৃষ্টি করছে আসলে নবীজির উম্মত নাকি ইবলিসের উম্মত।
৬. দলের নাম থেকে মুসলিম বাদ দিয়ে দাদাদের মন পায়নি, এখন সংবিধান থেকে জাতির মুসলিম পরিচয় বাদ দিয়ে সেক্যুলার পরিচয় গ্রহণ করলো (২০১২)। ভারতে হিন্দু ধর্ম শতকরা হার ৮০ এর নিচে সেখানে ভারতকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র বলে থাকে, বাংলাদেশে ৯০% এর কাছাকাছি মুসলিম, সেখানে বাংলাদেশের সংবিধানে মুসলিম থাকলে আওয়ামীলীগের রামায়ন অশুদ্ধ হয়ে যাবে।
৭. কোরআনের সরাসরি আয়াত বিরোধী (সুরা নিসাআ, আয়াত ১১) উত্তরাধিকার আইন করলো। আপনাদের মনে আছে কিনা জানিনা, আমি তখন ছোট, বিটিভির সামনে মাথায় পট্টি বেঁধে শেখ হাসিনার কান্না। আবার গতবারের নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগ নির্বাচনী ওয়াদা করেছিলো ক্ষমতায় গেলে ইসলাম বিরোধী কোনো কর্মকান্ড বা আইন করবো না। আমি যদিও ওই মন্ত্র কিনিনি, বরং আমাকে কনভিন্স করতে হলে ওয়াদা করা উচিত ছিলো, সকল কর্মকান্ড ও আইন ইসলাম অনুযায়ী, ইসলামের নীতি অনুযায়ী করবো। তবে ইসলামের বিরোধী করবো না বলে মানুষকে ঘোল খাওয়ানোর চেষ্টা করলে-ও সেই কথা রাখেনি আওয়ামীলীগ। এই আয়াতের শেষে আল্লাহ বলছেন, একদল জালেম ছাড়া আল্লাহর এই আইনের ভঙ্গ কেউ করতে পারে না। কোরআনের তাফসীর তাফহিমুল কোরআন নিষিদ্ধ করলো।
৭. সর্বশেষ, সংবিধান থেকে "মহান আল্লাহর উপর ঈমান ও আস্থা" তুলে দিলো (২০১৩)। আমি যতটুকু জানি, যারা আল্লাহর উপর ঈমান ও আস্থা তুলে নেয় তাদেরকে কাফের বলে। কাফের মানেই হচ্ছে যার আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা নেই। আবার রাজনৈতিক দলের যাদের সংবিধানে "সাবভৌমত্বের মালিক আল্লাহ" তাদেরকে এটা পরিবর্তন না করলে নিষিদ্ধ করার আইন করলো।
এখন বিচার আপনিই করুন, তারা নবীজির উম্মত নাকি ইবলিসের উম্মত। এখানে উল্লেখিত ঘটনা গুলো সবগুলোই ফ্যাক্ট, ৬ই মে রাতে ৫ জন মেরেছে নাকি ৫ হাজার মেরেছে এমন ঘোলাটে পূর্ণ কোনো ডাটা নেই। এখন আপনি বিচার করেন একজন মুসলিম হয়ে এমন একটি দলকে সমর্থন করা ঠিক হবে কিনা। আমি স্বাধীনতাকে ভালবাসি, ৭১ কে ভালবাসি, কিন্তু তার সবার চেয়ে আল্লাহকে, রাছুলকে, ইসলামকে বেশি ভালবাসি। আমি মনে করি আমার বা আপনার সমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় যেয়ে যদি আওয়ামীলিগ এই কাজগুলো করে তাহলে এই কাজগুলির জন্য আমি আপনি সমান দায়ী। আর এর জন্য কিয়ামতে অবশ্যয় আল্লাহর কাছে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। আপনি রাজনীতি করেন ভালো কথা, কিন্তু রাজনীতির মারপ্যাচে পড়ে আখিরাতকে নষ্ট করবেন না। বারাক আল্লাহু ফি কুম। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে আলোচনা বা সমালোচনা গ্রহণ করবো।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন