"প্রবাসীদের হয়রানির শেষ কোথায়?"

লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ২০ মে, ২০১৬, ১০:১৩:৪৭ রাত

সৌদী আরবের জেদ্দা থেকে সিলেটের দুরত্বের সময় ছয় ঘন্টা, যদি ও বিমান থেকে বলা হয় সাড়ে পাঁচ ঘন্টা।

বাংলাদেশ বিমানের যাত্রার সময়ের কোন সীমারেখা নেই, ক্ষেত্র বিশেষে ছয় ঘন্টার সময়ে বারো ঘন্টা ও লেগে যায়।

জেদ্দা বিমান বন্দরের সব প্রসেসিং শেষ করে যখন বিমানে বসলাম তখন নিশ্চিত হলাম হয়তো সময় মতো বিমান আকাশে উড়বে।

নির্ধারিত সময়ের ত্রিশ মিনিট সময় অতিবাহিত হতে চলছে, যাত্রীরা সবাই নিজ নিজ স্থানে বসে পড়েছে, কিন্তু বিমান উড্ডয়ন হচ্ছে না।

মনে বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন বিরাজ করছে, পাশ দিয়ে হেঠে যাওয়া এক বিমান বালাকে সুধাইলাম-

- আপু বিমান উড়তে দেরী হচ্ছে কেন?

- বিমানের দরজা বন্ধ হচ্ছে না।

আমার আশে পাশে থাকা যাত্রীরা চমকে গেলেন, নিজে ও মনে মনে ভাবছিলাম তাহলে আজ আর ফ্লাইট হবে না।

২০/২৫ মিনিট পর পাইলট ঘোষনা দিচ্ছেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে BG-0136 ফ্লাইট উড্ডয়নে বিলম্ব হবার কারনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবো।

অবশেষে যাত্রা শুরু হলো,

৬ ঘন্টা ১০ মিনিটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌছালাম।

দেহের ভেতর থেকে শান্তির নিঃশ্বাস বের হলো, কোন রকম সমস্যা ছাড়াই জন্মভুমিতে পা রাখলাম।

সবাই খুশিতে তাড়াহুড়া করে বিমান থেকে বের হচ্ছে, এদিকে বাহিরে থাকা স্বজনরা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

কিন্তু জন্মভুমিতে ফিরে আসার খুশিটা ম্লান হয়ে যায় বিমান বন্দরের দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের বিরুপ আচরনে।

ইমিগ্রেশন অফিসার থেকে শুরু করে গেইটের দারোয়ান পর্যন্ত সবাই শকুনের মত টানা হেচড়া শুরু করে প্রবাসীদেরকে নিয়ে।

লাইনে দাড়িয়ে যখন ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে পাসপোর্ট দিয়েছি ইমিগ্রেশনের জন্য, অফিসার অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করছিলো আমাকে।

যেমন-

- বাড়ি কোথায়?

- পাসপোর্ট তিনটা কেন?

- আপনার পুরাতন পাসপোর্ট এবং নতুন পাসপোর্টের ছবি মিল নেই কেন?

বলেছিলাম আপনার সবগুলা প্রশ্নের উত্তর আমার পাসপোর্টে দেয়া আছে।

অবশেষে বললেন স্যার চা নাস্তার কিছু দেন।

খুব সাবালীল ভাবে বললাম ভাই আমার পায়ে সেন্ডেল নয়, সু-জুতা পরা।

যদি সেন্ডেল থাকতো তাহলে কিছু দিতে পারতাম।

ইমিগ্রেশন অফিসার বসা থেকে দাড়িয়ে গেলেন, এমন ভাব নিচ্ছিলেন মনে হচ্ছিলো আমাকে খেয়ে ফেলবেন।

বললাম ভাই তাহলে কি আমি জুতাটা খুলে হাতে নেবো?

স্বাভাবিক এখানে একটা ঝটকা লাগার কথা, তাই হলো।

একজন ইমিগ্রেশন সুপারভাইজার এসে বিষয়টা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেন।

ব্যাগেজ চেকিংয়ে আমার ব্যাগেজটি খুব গুরুত্ব সহকারে চেক করা হলো, এমনকি ল্যাপটপ খুলে চেক করা হলো। বুঝতে পারলাম কেন আমার ব্যাগেজ এত যত্ন সহকারে তল্লাশি করা হচ্ছে!!

একজন ভদ্রলোক বলছিলেন,

"কুত্তার গায়ে ঢিল ছোড়ার চেয়ে কুত্তাকে একটা হাড্ডি দিয়েই বিদায় করা শ্রেয়।"

আফসোস হয় এমন একটা দেশের নাগরিক আমি/আমরা, যে দেশে ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করা সম্ভব নয়।

দেশের মানুষের উচিত প্রবাসীদেরকে নুন্যতম সম্মান দেয়া, কারন প্রবাসীরা হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে টাকা রোজগার করে দেশের মানুষকে সুখে শান্তিতে রাখার জন্য।

দেশের মানুষগুলো মনে করে প্রবাসীরা না জানি কত সুখে থাকে!!

তাই ইমিগ্রেশন থেকে শুরু করে পরিবারের লোক পর্যন্ত শকুনের মত প্রবাসীর মাথায় টোকর দিতে থাকে।

বিষয়: বিবিধ

১৪৩৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

369678
২০ মে ২০১৬ রাত ১০:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভাল করেছেন। এই ঘুষখোর সরকারি কর্মচারিরা মনে করে তারাই দেশের মালিক। আর প্রবাসি রা সব নিন্ম শ্রেনির।
369684
২১ মে ২০১৬ রাত ১২:৩১
awlad লিখেছেন : AssalamuAlaikum vai sotto likesen,jedeshe pion teke rasto prodan sobai gush kay,shedeshe ekmatro aadorshik viplob Sara kunu poriborton aasha Kora Jayna.
369699
২১ মে ২০১৬ সকাল ০৮:১৪
শেখের পোলা লিখেছেন : বর্তমান সরকারের এটা একটা বিরাট সাফল্য যে তারা আমাদের বিদেশে কামলা দেবার পথ করে দিয়েছে। তারা গর্ব করেই এ কথা বলে, তাই প্রবাসীদের উচিৎ স্যাণ্ডেল পরেই দেশে যাওয়া। ধন্যবাদ।
369705
২১ মে ২০১৬ সকাল ১০:১৪
হতভাগা লিখেছেন : সরকারী প্রতিটা সেক্টেরই লোকজন বসে আছে ''হা'' করে ঘুষ খাবার জন্য ।

সাধে কি বাংলাদেশ দূর্নীতি পর পর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ! এটা তো ইনাদের ধারাবাহিক দূর্দান্ত পারফরমেন্সের জন্যই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File