"জীবন সঙ্গী ধার্মিক নাকি তথাকথিত আধুনিক জরুরী?"

লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১১:০৮:১৬ সকাল

বিয়ের জন্য মা বাবার পছন্দ করা ছেলে / মেয়ে অনেকেই সহজে মেনে নিতে পারে না।

অনকের ধারনা বিয়ে আমি করবো তাই আমার জীবন সঙ্গী আমি নিজেই বেছে নিবো। কিন্তু নিজের বাছাই করা জীবন সঙ্গী নিয়ে কয় জন সুখী হতে পারে!!!

মা বাবার পছন্দ করা দাড়িওয়ালা ছেলেটিকে মোটেই পছন্দ হয়নি নীলার।

নীলা মধ্যবিত্ত পরিবারের হলে ও ভার্সিটি লাইফে পশ্চিমাদের স্টাইলে চলা ফেরা করতো।

তাই এমন একটা ছেলের প্রস্তাবে নীলা রিতীমত মা বাবার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বললো-

আমার জীবন নিয়ে চিনিমিনি খেলার অধিকার তোমাদের নেই, আমি তোমাদের মেয়ে, তাই বলে যাকে তাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিবো তা হতে পারে না। আমার ও তো একটা পছন্দ আছে।

আমার পছন্দের মুল্য কি তোমাদের কাছে নেই??

বিয়ে যদি করতে হয় তাহলে আমার পছন্দের ছেলেটিকে বিয়ে করবো, কিন্তু ওই রকম একটা দাড়িওয়ালা গেয়ো আনস্মার্ট ছেলেকে আমি নীলা বিয়ে করতে পারবো না।

তবু ও মা / বাবা বিনয়ের স্বরে বললো-

দেখ মা আমরা তোর ভালো চাই, পৃথিবীর কোন মা বাবা চায়না তার মেয়ে সাংসারিক জীবনে অসুখী হোক।

নীলা অগ্নিশর্মা হয়ে বললো-

তাই বলে এমন একটা আনস্মার্ট ছেলেকে আমার জন্য বাছাই করেছো?

যে কিনা শীত গ্রীষ্মে একটা লম্বা বোরকা পরে থাকবে!!

ছেলেটা ধার্মিক, নামায রোজা করে, আল্লাহকে ভয় করে।

আমি দুঃখিত বাবা তোমার সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিতে পারলাম না।

মা বাবার আর কিছুই বলার থাকলো না, আধুনিক সমাজে কিছু কিছু মা বাবারা বড় অসহায়।

মা বাবা নিরুপায় হয়ে নীলার পছন্দ করা ছেলের সাথেই বিয়ে দিতে বাধ্য হলেন।

আনস্মার্ট দাড়িওয়ালা ধার্মিক ছেলেটি ও অন্য একজনকে বিয়ে করে নিলো।

আধুনিক স্মার্ট বর নিয়ে নীলার সংসার ভালই চলছিলো।

হটাৎ একদিন নীলার আধুনিক স্বামী মদের বোতল হাতে নিয়ে আবোল তাবোল বক বক করে ঘরে ডুকলো, বিয়ের আগে মদ খেতে এখন ও খাচ্ছে।

কয়েকদিন পর আবার ও আধুনিক স্বামী তার পুরাতন এক্স গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে বাড়িতে আসলো।

বিয়ের আগে ও গার্লফ্রেন্ড বাড়িতে নিয়ে আসতো, এখন ও তাই করছে।

কারন এইটাই আধুনিকতা,

মদ না খেলে কি আধুনিক হওয়া যায়?

এক্স গার্লফ্রেন্ড না থাকলে কি স্মার্ট হওয়া যায়?

নীলা তার স্বামীর এমন আচরনে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবাদ করলো, কিন্তু আধুনিক স্বামী তো আর মা বাবার মত নয় অগ্নিশর্মা হলে চুপচাপ বসে থাকবে।

প্রতিবাদের জবাব হিসেবে নীলার আধুনিক স্বামী নীলাকে আচ্ছা মত আধুনিক স্টাইলে রাম ধুলাই দিলো।

অসহায় নীলা দুঃখ প্রকাশ করার মত জায়গা নেই, কারন নিজের ইচ্ছায় সমুদ্রে সাতার কাঁটতে নেমেছে।

একাকিত্বে নীলা চেখের জল ঝরাচ্ছে আর ভাবছে মা বাবার পছন্দের ছেলেটিকেই বিয়ে করা উচিত ছিলো।

আজ আমার আধুনিক বর যে আচরন করতেছে দাড়িওয়ালা ধার্মিক বর হয়তো এমন আচরন করতো না।

যখন আমার আধুনিক বর মদের বোতল হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছে, সেই সময়ে হয়তো ধার্মিক বর তার স্ত্রীর জন্য ধর্মীয় বই হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছে।

আমার আধুনিক বর যখন এক্স গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে বাড়ি ফিরছে, সেই সময়ে হয়তো দাড়িওয়ালা বর তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে জাগাচ্ছে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করার জন্য।

সত্যিই তো ওই ধার্মিক দাড়িওয়ালা ছেলেটি আমার জন্য নয়, আমি নিজে আধুনিক পশ্চিমাদের অনুসারী ছিলাম।

আধুনিক স্বামী চেয়েছিলাম, পেয়েছি ও বটে।

ভার্সিটি লাইফে আমার ও তো এক্স বয় ফ্রেন্ডের কমতি ছিলো না।

অনুশোচনায় কাঁটছে নীলার জীবন।

আধুনিক মেয়েদের বুঝা উচিত-

দাড়িওয়ালা মানে গেয়ো ব্যাকডেটেড না,

ধার্মিক মানে আনস্মার্ট না,

ধার্মিক ছেলেদের মধ্যে ও আধুনিকতা আছে, সেটা খুজে নিতে পারার মধ্যে রয়েছে সুখের ঠিকানা।

আধুনিকতা মানে নগ্নতা না,

তবে এটা সত্য যার চরিত্র যেমন তার জীবনসঙ্গী ও তেমন হবে।

মহান রাব্বুল আল পবিত্র কোরআনের সুরা আল নূর এ বলেছেন-

নিশ্চয় দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য,

দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য।

মুমীন নারী মুমীন পুরুষের জন্য,

মুমীন পুরুষ মুমীন নারীর জন্য।

বিষয়: বিবিধ

২৩০৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

359189
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ১১:৩৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যে পিতামাতা কন্যাকে অবাধ স্বাধিনতা দিয়েছেন তাদের উচিত নয় এমন দাড়িওয়ালা ছেলের সাথে সেই মেয়ের বিয়ে দিয়ে তার জিবন নষ্ট করার।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:২৭
297848
হতভাগা লিখেছেন : দুর্দান্ত বলেছেন
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৫:২২
298312
অভিমানী বালক লিখেছেন : অভিভাবকদের অবশ্যই ছেলে মেয়েদেরকে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন।
359199
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪
হতভাগা লিখেছেন : মেয়ে আধুনিক হোক কিংবা পিছিয়ে (ধার্মিক) - বিয়ের পর সব মেয়েই আধুনিক হয়ে যায় । চাকচিক্যকে পেতে চায় ।

এতদিন তার আরও ভাই বোন থাকাতে বাবার কাছ থেকে সে একচেটিয়া পেত না , ভাই বোনদের সাথে ভাগাভাগি করে তাকে মানিয়ে চলতে হত । বিয়ে হবার পর সেটার ঝাল মেটাতে স্বামীর উপর আগ্রাসী হয়ে ওঠে ।

তার এসব ক্ষুধা মেটাতে পারে আধুনিক ছেলেরাই । দাঁড়িওয়ালা ছেলেরা এতটা স্মার্ট হয় না বউদের এই সামান্য(!) চাওয়া পূরণ করতে ।
মেয়েদের সবকিছুতে শো-অফ করা লাগবেই । ধর্ম কর্মও তাদের কাছে যতটা না সৃষ্টিকর্তার আদেশে অবশ্য পালিত বিষয় তার চেয়ে বেশী কোনটা করলে তার চেহারায় ধার্মিক একটা লুক আসবে এবং লোকজন তাকে ''পর্দা করে'' বলবে সেটার দিকেই তারা বেশী অস্থির ।

তাদের এই অবিমৃশ্যকারিতার জন্য পুরুষেরা তাদের সংসারে শান্তির আলো দেখতে পায় না , যেটা সে ডিজার্ব করতো ।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৫:২১
298311
অভিমানী বালক লিখেছেন :
নিশ্চয় দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য,

দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য।

মুমীন নারী মুমীন পুরুষের জন্য,

মুমীন পুরুষ মুমীন নারীর জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File