মেয়েরা কি কষ্টের মুল?
লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ১৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০৯:৪১:৩১ সকাল
যে মেয়েটাকে দেখলাম একটা অপ্রাপ্ত-বয়স্ক ছেলের সাথে কথা বলতে থুত থুত করে, লজ্জায় ওড়না এমন ভাবে চিবুকে চেপে ধরেছে মনে হচ্ছিলো ওড়নাটা হয়তো খেয়ে ফেলতে পারে। লজ্জায় নাকের ডগায় শিশিরের মত ঘাম জমে নাকের ডগা লাল হয়ে গেছে।
সেই মেয়েটা হঠাৎ করে এভাবে পাল্টে গেলো কেমন করে?
মেয়েটাকে আজকাল দেখলে মনে হয়না লজ্জা শরম আছে বলে কিছু।
এত রাতারাতি পরিবর্তন কেমন করে সম্ভব?
মাত্র মাধ্যমিক পাশ করেছে। নবম শ্রেনীতে থাকাকালীন সময়ে ও দেখলাম তার অত্যন্ত নম্র ভদ্র চলাফেরা, কিন্তু এখন তো দেখি পতিতালয়ের মেয়েদের মত কথা বলে।
খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করতে হঠাৎ তোমার এত পরিবর্তন কেন?
পরিবর্তন স্বাভাবিক, কিন্তু পরিবর্তনে যদি অধঃপতন থাকে তাহলে অস্বাভাবিক।
নিজের আগ্রহ থামিয়ে রাখতে পারছিলাম না, তাই মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম।
দেখা করার জন্য একটা স্থান নির্ধারন করলাম মেয়ের ইচ্ছামত।
যেই কথা সেই কাজ,
নির্দিষ্ট স্থানে দুজনই হাজির,
কুশল বিনিময়ে ব্যাগ থেকে একটা গোলাপ বের করে দিয়ে বললো যদি গ্রহন করেন খুশি হবো।
হ্যা অবশ্যই, কেন নয়?
ভাই বোনের মধ্যে ও তো গোলাপ বিনিময়ে সম্পর্ক গভীর হয়।
চোখ বড় করে বললো শুরুতেই বাকা কথা।
তা যাই হোক কেন ডেকেছেন শুনি?
ইতিমধ্যে ওয়েটার এসে হাজির, স্যার আপনাকে কি দেবো?
ম্যাডাম আপনাকে আজ কোনটা দেব?
তার মানে ম্যাডাম কি এখানে প্রতিদিন আসেন?
না স্যার সপ্তাহে ৩/৪ দিন আসেন ম্যাডাম।
আমার সন্দেহের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো, একটা কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সপ্তাহে ৩/৪ দিন চায়নিজে এসে আড্ডা দেয় এত টাকা কোথায় পায়।
অর্ডার নিয়ে ওয়েটার চলে গেলো,
কি বলবো মনে মনে ভুমিকা সাজানোর চেষ্টা করছিলাম। তবে মেয়েদের পেট থেকে কথা বের করতে হলে দুইটা কৌশল অবলম্বন করতে হয়।
মেয়েরা নিজের প্রশংসা খুব পছন্দ করে,
এবং অন্য মেয়েকে হিংসা করে হোক সে বান্ধবী অথবা বোন।
তাই আমি উনার প্রশংসা শুরু করে দিলাম, এবং উনার এক বান্ধবীকে নিন্দা করতে লাগলাম।
আমি লক্ষ্য করছিলাম মেয়েটা খুব খুশি হচ্ছিলো।
সুযোগ বুঝে আমার প্রশ্ন শুরু করে দিলাম।
উত্তর দিতে দ্বিধাবোধ করছিলো, আমার আশ্বাসে বলতে শুরু করলো।
- নবম শ্রেনীর অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন ছিলো, বাড়িতে ফিরে দেখি আমার বড় আপু উনার দেবর নিয়ে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আপুর দেবর বয়সে আমার চেয়ে বড়। তাদের আর্থিক অবস্থা আমাদের চেয়ে ভালো। সেই সুবাদে লিটন ভাই ভালো মোবাইল ব্যবহার করতো।
আমি মোবাইলে গেম খেলাতে বেশ পছন্দ করতাম। তাই আমাকে বললো রিতা নতুন গেম লোড করেছি গেম খেলবে?
আমি দপাং করে মোবাইল নিয়ে আমার রুমে গিয়ে গেম খেলা শুরু করে দিলাম। কিছুক্ষন পর লিটন ভাই এসে মোবাইল নিতে চাইলে আমি বললাম বস গেমটা শেষ করে দিচ্ছি।
আমি গেম খেলছি আর লিটন ভাই আমাকে এটা সেটা বলছে, এভাবে কতক্ষন চলে গেছে আমার ঠিক মনে নেই। হঠাৎ দেখি লিটন ভাই আমার উরুর উপরে শুয়ে আছে। আমি চমকে উঠে বললাম এটা কেমন ভদ্রতা?
উনি রাগ না করে নরম স্বরে বললেন রিতা আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি, আরো অনেক কথা যে কথায় আমি ও উনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি।
এভাবে খানিকটা সময় কেটে গেলো, উনি মোবাইল নিয়ে চলে গেলেন। কিন্তু এই খানিক সময়টাকে আমি ভুলতে পারছিলাম না। আমি অনুভব করছিলাম আই এম ইন লাভ।
সন্ধ্যার পর থেকে শুধু উনার অপেক্ষা করছি,কিন্তু উনি রাত নয়টায় বাড়িতে আসছে। অপেক্ষায় ছিলাম কখন আমার রুমে আসবে। ঠিক ১৫ মিনিটের ভিতরে আমার রুমে চলে আসলো এবং আমার জন্য একটা গল্পের বই ও কিছু আচার নিয়ে আসছে।
আবেগাপ্লুত হয়ে ওর কাছাকাছি বসার চেষ্টা করতে চাইলাম, কিন্তু সুযোগে আমাকে বুকে ঠেনে নিয়ে কিছুক্ষন জড়িয়ে ধরে ঠোটে চুমু খেতে লাগলো। আমি নিজেকে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়ে উনাকে ধাক্কা দিয়ে মুক্ত হলাম।
তবু ও কেন জানি উনাকে আমার খুব ভালো লাগছে, কিন্তু এই ভালো লাগা যে আমার জন্য কাল হয়ে দাড়াবে ভাবতে ও পারিনি।
সকাল বেলা আপু নানীকে দেখতে যাবে সাথে মা। বাড়িতে কেউ নেই বলে আমি বাড়িতে থাকতে হলো। লিটন ভাই তখন ও ঘুমে।
লিটন ভাইর জন্য নাস্তা আমাকে তৈরী করতে হয়েছে, ঘুম থেকে উঠে যখন শুনলো কেউ বাড়িতে নেই তখন তাকে খুব খুশি খুশি লাগছিলো। শুধু বললো আজ আমরা দুজনে অনেক গল্প করবো।
গল্পের এক পর্যায়ে বললো জানো আমার মোবাইলে ছবি খুব সুন্দর হয়, এই দেখো তোমার ছবি কি সুন্দর হয়েছে।
একটা দুইটা করে অনেক ছবি উঠাচ্ছে এবং আমার ও ছবি উটানোর জন্য আগ্রহ বেড়ে গেছে। আবেগ মানুষকে কত অধঃপতন করতে পারে তা আমার চেয়ে বেশী কেউ বলতে পারবে না।
লিটন ভাই যেভাবে বলছে সেভাবেই আমি ছবি তুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছি। ভাবছিলাম একজন মানুষ আমাকে ভালবাসে আমি ও তাকে ভালবাসি তাই ছবি তুলবে সেটা কি আর এমন ক্ষতি। দুপুর গড়িয়ে শেষ প্রান্তে চলে এসেছে তখন ও আমরা দুজন একই রুমে আবদ্ধ। ইতিমধ্যে লিটন ভাই আমাদের দুজনের কিছু অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি তার মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করে ফেলেছে। কিছু ভিডিও করেছে আমার অজান্তে আমি টের পাইনি।
এভাবে দুই দিন থাকার পরে আপু এবং লিটন ভাই আমাদের বাড়ি থেকে চলে যায়। ৫/৬ দিন পরে আমার জন্য একটা মোবাইল কিনে এনে দেয় আমাদের দুজনের যোগাযোগের সুবিধার্থে। যা আমার পরিবারের কেউ জানেন না। প্রয়োজন মত মোবাইলে কথা বলে আবার মোবাইল লুকিয়ে রেখে দিতাম।
কিছুদিন পরে ইন্টারনেট সংযোগে শুরু হলো ভিডিও কল। কথা যেন আমাদের থামেনা, অনেকদিন এমন হয়েছে সারা রাত কথা বলেছি সকালে শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে স্কুল কামাই করে দিনভর ঘুমাতাম।
এক সময় আমাদের সম্পর্ক এমন হয়েছে যেন একজন আরেকজনকে ছাড়া বাচবো না। লিটন ভাই বেচে গেছে ঠিকই আর আমি জ্যান্ত মরে আছি।
ভিডিও কলের স্ক্রীনশর্ট করে লিটন ভাই ছবি গুলা তার মোবাইলে জমা করে রাখতো আমি জানতাম না।
প্রেম গোপন থাকে না,তাই হঠাৎ একদিন আমার বিকৃত ছবি লিটন ভাইয়ের মোবাইলে দেখে ফেলে আমার আপু। আমার জীবনে নেমে আসে ঘুর্নঝড় সিডর। আপুর সাথে লিটন ভাইয়ের অনেক বাক বিতন্ডা হয়, আমাদের বাড়িতে এসে আপু আমার গায়ে হাত ও তুলেছে। কিন্তু আপু ছবি গুলা দেখে যদি মোবাইল থেকে রিমোভ করে দিতো তাহলে হয়তো আমি এই রাস্তায় পা বাড়াতাম না। লিটন ভাই আপুর অপদস্তের কথা ভুলে নাই।
আমাদের স্বাভাবিক যোগাযোগ চলতে থাকে।
তখন আমি এস এস সি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছি। কলেজ আমাদের বাড়ি থেকে দুরে তাই কলেজের হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করেছিলাম, এখনো আছি।
হঠাৎ একদিন লিটন ভাই ফোন করে বললো চলো আগামী পরশু কক্সবাজার বেড়াতে যাবো আমরা দুজন।
হঠাৎ করে কোন প্রস্তুতি ছাড়া কেমনে যাবো?
কিন্তু না যেতেই হবে, লিটন ভাইয়ের কথায় রাজি হয়ে গেলাম।
কক্সবাজার আমরা তিনদিন থাকবো বলে সিদ্ধান্ত নিলাম, একই রুমে একটা ডাবল বেডে একসাথে থাকতে বাধ্য হলাম।
হঠাৎ করে লিটন ভাইয়ের কথাবার্তার পরিবর্তন-
লিটন ভাই বললো আজ আমাদের বাসর রাত!!!!
আকাশ ভেঙ্গে মাথায় পড়লো, এ আমি কি শুনছি?
লিটন ভাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু কিছুতেই বোঝতে চায়না, তার চেহারা আচরন দেখে মনে হচ্ছিলো পাগলা কুত্তা হয়ে গেছে। নিরুপায় হয়ে বলছিলাম ঠিক আছে এমন যদি করতে হয় তাহলে কাজী অফিসে চলেন, বিয়ে করে আমরা বাসর রাত উদযাপন করবো।
গড়গড় করে অশ্লীল বাক্য বের হচ্ছে উনার মুখ থেকে যা আমি আগে কখনও শুনিনি। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, রুম থেকে যে বের হবো তা ও কোন সুযোগ নেই।
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুমে ও আমার শরীর থেকে ঘাম ঝরাচ্ছে, গলা শুকিয়ে যেন কাঠ হয়ে গেছে। পানি খেতে চাইলাম কিন্তু পানির বোতল খুলতে কি এক বিশ্রী দুর্গন্ধ আসছিলো। মুখে নিয়ে নাক বন্ধ করে এক ডোগ গিলে ফেললাম গলা ভিজানোর জন্য, কেমন অসহ্য লাগছিলো, বুক জ্বালা পোড়া করতেছে।
চোখে ঘুম ঘুম ভাব, ক্রমশ শরীর নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে, খানিক পরে আমি কোথায় আছি বুঝতে পারছিলাম না।
শুরু হলো লিটন ভাইয়ের নির্যাতন, কতক্ষন এভাবে চলছিলো সঠিক জানা নেই তবে ভোর চারটায় আমি চেতন ফিরে পাই এবং অনুভব করতে পারি আমি ধর্ষিত হয়েছি।
বসতে চাইলে বসতে পারছিনা, শুধু চোখ মেলে দেখলাম উনারা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
সহযোগিতা চাইলে লিটন ভাই এগিয়ে এসে আমাকে উটে বসতে সাহায্য করলো, সাদা বিছানার চাদরে রক্তের দাগ স্পষ্ট ভেসে উঠেছে।
আমার বোঝতে বাকি থাকলো না কেমন ঝড় বয়ে গেছে, বাথরুম সেরে নিজেকে স্বভাবিক করার চেষ্টা করলাম।
লিটন ভাই বললো একটু পরে আমরা সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবো রেডী হয়ে নাও। মনে মনে বললাম তা ই তো ভালো।
সিলেটে আসার পরে লিটন ভাই shareit করে আমার মোবাইলে কক্সবাজারে ঘটে যাওয়া ছবি এবং ভিডিও গুলা দিয়ে বললো বেশ কিছু ভিডিও আছে বাসায় গিয়ে দেখে নিও, এবং ঘটনা কাউকে বলার চেষ্টা করবে না, যদি কাউকে বলার চেষ্টা করো তাহলে সবগুলা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবো।
আর হ্যা ভালো কথা- আজ থেকে আমার সাথে তোমার সম্পর্ক এখানেই সমাপ্তি, এবং আগামী সপ্তাহে আমি লন্ডন চলে যাবো। এই সব অনাকঙ্খিত ঘটনার জন্য তোমার বড় বোন দায়ী।
নিজেকে খুব ঘৃনা হচ্ছিলো এবং অসহায় মনে হচ্ছিলো, কি চেয়েছিলাম কি পেলাম।
এটা কি ভালবাসার প্রতিদান?
প্রতিশোধ নেয়াকে কি ভালবাসা বলে?
দৈহিক খোরাক মেটানোকে কি ভালবাসা বলে?
অনেকবার চেষ্টা করেছি পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে, তা ও ব্যার্থ হয়েছি।
বিশ্বাস করতে পারিনা পৃথিবীর মানুষগুলোকে তাই আমি ও এখন প্রেমের নামে ছলনা করি।
প্রেমের ফাদ পেতে ছেলেদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে আমার প্রধান কাজ, যেই ছেলেদের কারনে আমি নষ্ট হয়েছি সেই সব ছেলেদেরকে নষ্ট করাই আমার টার্গেট।
আমার মতে-
মেয়েরা সর্বপ্রথম বোকা থাকে,
তাকে চালাক বানায় পুরুষরা।
আর সেই পুরুষরা তাদের কাছে
ধরা খাইয়া বলে বেড়ায় মাইয়ারা
যত কষ্টের মূল।
বিষয়: বিবিধ
১৭৫৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন