"কিছু বাস্তবতা এবং আবেগময় ঐতিহ্য"

লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ২২ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:৪১:১৭ সকাল

একান্নবতী সংসার আর বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে বিরাট একটা মিল আছে।

সরকারী কর্মকর্তারা যার যেমন ইচ্ছা জনগনের সম্পদকে ভোগ করছে,

তেমনি একান্নবতী সংসারে ও চলে ইচ্ছামত ভোগের প্রতিযোগিতা।

ভোগ বিলাসী কর্মকর্তার যেমন স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকে না,তেমনি ভোগ প্রতিযোগিতার সংসার ও দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

সরকারী কর্মকর্তা যার দাপট বেশী সে বসে বসে ভোগ করতে পারে, তেমনি একান্নবতী সংসারে যার চাপার জোর বেশী সে ভোগ করতে পারে বেশী।

তবে তফাৎ একটাই-

সরকারি কর্মকর্তা অতি ভোগে যায় জেলে,

আর একান্নবতী সংসারে অতি ভোগে যায় পৃথক হয়ে।

তবে শুধু পৃথক হয়ে যাওয়াতেই শেষ নয়, চলে স্নায়ু যুদ্ধ অনেক ক্ষেত্রে স্নায়ু যুদ্ধ থেকে হাতের যুদ্ধ রুপ ধারন করে।

একান্নবতী সংসারে যতটুকু মধুরতা থাকে, সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার পরে মধুরতার চেয়ে শত্রুতা আরো দ্বিগুন আকার ধারন করে।

তবে কেন এই একান্নবতী সংসার?

কি প্রয়োজন?

কেন-ই বা আমাদের এমন হয়?

কথায় আছে-

ভাই বড় ধন রক্তের বাধন,

পৃথক যদি হয় নারীর কারন।

পুরুষ শাসিত সংসার পৃথক হওয়ার পিছনে নারীর ভুমিকা কতটুকু থাকতে পারে আমার বোধগাম্য হয় না।

সংসারের একজন পুরুষ সদস্য যখন বিয়ে করে নাই, তখন তাকে পরামর্শ দেয়ার মত কোন নারীর অবদান থাকে না।

বিশেষত প্রত্যেক নারী চায় তার স্বাধীনতা, সে চায় তার স্বামী সন্তানকে নিয়ে একটু আয়েশে থাকতে।

কিন্তু নারীর চাহিদার গুরুত্ব আমাদের সমাজে কতটুকু আছে তা সবারই জানা।

সুতরাং শুধু শুধু এখানে নারীকে দোষারুপ করা হচ্ছে।

একান্নবতী সংসার আমাদের সমাজে একটি ঐতিহ্য, বিশেষত আমাদের সিলেটে এই ঐতিহ্যকে লালন করি বেশি।

এই ঐতিহ্যকে লালন করতে আমরা সামাজিক অবক্ষয়ের মুখোমুখি হতে হয়। ভাই ভাই সম্পর্ক শত্রুতে পরিনত হয়, মা বাবার সাথে সম্পর্কের দুরত্ব অনেক বেড়ে যায়।

কিন্তু কেন?

এর একমাত্র কারন হলো ব্যাক্তি স্বার্থ, প্রতিহিংসা আর পক্ষ পাতিত্বের বৈষম্যতা।

সংসারে যদি পাঁচ ভাই বিবাহিত থাকে এবং এই পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই বিদেশে থাকে তাহলে বিদেশী বউদের আলাদা একটু ভাব থাকে। তাহলে পাঁচ বউ থেকে দুই বউয়ের কতৃত্ব আলাদা। শশুড় শাশুড়ীর কাছ থেকে আলাদা ভালবাসা পাবে বিদেশী দুই বউ একটু বেশী। কারনটা উল্লেখ না ই বা করলাম।

ক্ষেত্র বিশেষে দেশে থাকা ভাইদের সংসারে মুল্যায়ন করা হয় খুব কম, হয়তো বয়সে বড় হতে পারে কিন্তু মা বাবা মুল্যায়ন করে বেশী বিদেশে থাকা ছেলেকে। যদি মুল্যায়ন না করে তবে হয়তো এটি এম বুথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা খুব বেশী।

দেশে থাকা ভাই যদি দুর্দান্ত চালাক হয় তাহলে কৌশলে বিদেশে থাকা ভাইদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পায়তারা করতে থাকে, অবশেষে যখন হিসেবে গড়মিল প্রমানিত হয় তখন সংসারে ঘুর্নিঝড় সিডর বইতে থাকে।

যুক্তি অনেক আছে,

হয়তো যুক্তি গুলো অনেকের কাছে বিশ্রী লাগতে পারে, কিন্তু আমার দেখা যতটা যৌথ সংসার পৃথক হয়েছে প্রত্যেকটা সংসারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষগত সমস্যার কারনে পৃথক হয়েছে। শুধু পৃথক নয় এমন হয়েছে ভাই ভাইয়ের ছায়া দেখলে ও কোদাল দিয়ে কোপ দিতে চেয়েছে।

এমন ও দেখেছি পৃথক হওয়ার পর বাড়ির মাঝা মাঝিতে ইটের দেয়াল দেয়া হয়েছে যাতে একে অন্যের চেহারা না দেখতে পারে।

তাহলে পিছনের দিনগুলো নিয়ে গর্ব করার মত কি থাকলো?

তাই পরিবেশ অনুকুলে থাকতে সংসারে পৃথক হওয়াটা শ্রেয়, পরিবেশ প্রতিকুলে চলে গেলে মনমালিন্য অথবা রক্তপাত ছাড়া সমাধান অবাঞ্চনীয়।

বিষয়: বিবিধ

১৩১৪ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

346809
২২ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ১০:৫৮
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আমার কাছেও মনে হয় একান্নবর্তী পরিবারের চেয়ে আলাদা থাকটাই ভাল। এতে সন্মানবোধ ও সুসম্পর্ক দুটাই ভালভাবে থাকে। আর একান্নবর্তী ফ্যামিলিতে নারীদেরও পর্দা মানা হয়না।
২২ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০১:০৫
287972
অভিমানী বালক লিখেছেন : অন্যান্য দেশে বেশীরভাগ বিয়ে করেই আলাদা হয়ে যায়।
বিশেষত সৌদী আরব, মিশর, ইন্ডিয়া।
তাদের এই সাংসারিক ব্যাবস্থা আমার কাছে খুব ভালো লাগে, এবং তাদের সুসম্পর্ক এবং সম্মানবোধ যথেষ্ট ভালো।
346862
২২ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১৯
শেখের পোলা লিখেছেন : ব্যাক্তি স্বার্থ ত্যাগ ও ন্যায়ত আচরণ করলে কোন সমস্যা সমস্যাই নয়৷ ত্যাগেই ভোগের আনন্দ৷ 'দশের লাঠি একের বোঝা'৷ 'দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ'৷এ গুলো কি শুধুই ফাঁকা বুলি?
২৩ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৪:৪৮
288113
অভিমানী বালক লিখেছেন : আজকাল ওই বুলি গুলা পানসে হয়ে গেছে।
346997
২৪ অক্টোবর ২০১৫ রাত ০২:৩২
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।

বিশ্লেষনটা ভালো কিন্তু তারপরেও........

যৌথ না একান্নবর্তী সেই তর্কে যাবো না তবে পরশ্রীকতারতা মুক্ত মন,পরিবার ও সমাজ আজ খুব প্রয়োজন!

শুকরিয়া!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File