আজব আইন
লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৫:৫৪:৫৫ সকাল
হ্যালো হ্যালো রিমন আমার কথা কি শুনতে পাচ্ছিস না,হ্যালো হ্যালো.......
হ্যালো হ্যালো......নেটওয়ার্কে এতো সমস্যা করে কেন?
-না আান্টি আমি শুনতে পাচ্ছি,নেটওয়ার্কের সমস্যা না।
আচ্ছা আমার রিমন কোথায়?
তিনদিন ধরে বার বার ফোন দিচ্ছি ফোন ধরতেছে না ফোন ব্যাক ও করতেছে না,
কোথায় রিমন কোথায়?
তুমি কে?
-রিমন এখন কথা বলতে পারবে না,একটু পরে আমি আপনার সাথে কথা বলবো।
না এখন বলো আমার রিমনের কি হয়েছে?
-রিমন এখন হাসপাতালে আছে।
কি বলো আমার রিমন হাসপাতালে কেন?
-ফোন কেটে গেল,যা ভাবছিলাম তা ই হলো,কিন্তু কি করবো কি বলবো কিছুই ভেবে পাচ্ছিলাম না,একদিকে রিমনের অবস্তা আশংকাজনক,অন্যদিকে নিজে ও শারিরিক মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আছি।
রাস্তায় পড়ে থাকা একটা লোককে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম,তার পরিচয় জানিনা,শুধু এটুকু বুঝতে পেরেছিলাম ছেলেটা বাংলাদেশী।
এখনো সৌদি আরবে আজব কিছু আইনের মধ্যে একটি হলো গাড়ির দুর্ঘটনার কোন লোককে পুলিশ না আসা পর্যন্ত কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।
আমি টিকই পুলিশি মামলায় জড়িয়ে গেলাম,হাসপাতাল থেকে আমার আইডি কার্ড পুলিশ নিয়ে গেলো এবং আমার নামে সৌদি আইন অবমাননার মামলা হলো।
কিন্তু নিজেকে নিয়ে ভাবছিলাম না,শুধু চিন্তা করছিলাম ছেলেটা সুস্ত হবে তো!
ছেলের আম্মা বার বার ফোন দিচ্ছেন,বিরক্ত হয়ে বলছিলাম প্লিজ আপনি এভাবে যদি বিরক্ত করেন তাহলে আমি দিশেহারা হয়ে যাবো,দোয়া করেন।
নয় দিন পর রিমন একটু একটু কথা বলতে পারছিলো,কিন্তু ডাক্তার মানা করেছে কথা বলতে।
তবু ও ডাক্তারের কথা উপেক্ষা করে রিমনকে বললাম যদি সম্ভব হয় তোমার আম্মার সাথে একটু কথা বলো,উনি তোমার জন্য খুব কাদতেছেন।
৪০ দিন পর হাসপাতাল থেকে রিমন রিলিজ পেলো,কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এই ৪০ দিন ওর কোনো আত্নীয় তাকে দেখতে এলো না,কারন একটা ই এটা নাকি পুলিশ কেইস।
আমার মামলার রায় হয়েছিলো,কিন্তু রিমনের মানবিক দিক বিবেচনা করে আমাকে মুক্ত রাখা হয়েছিলো,
কিন্তু আমার আইডি কার্ড আমাকে ফেরত দেয়া হয় নাই,শাস্তি সরুপ আমাকে তিনদিন জেল হাজতে থাকতে হবে।
সৌদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে স্বেচ্ছায় তিনদিন জেল হাজতের স্বাদ উপভোগ করলাম।
বিষয়: বিবিধ
১১৩৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে বেশ ভালো কিছু আইন ও আছে তাদের দেশে।
ভাইয়া আরেকটা কথা আপনার নাম অভিমানি বালক না হয়ে অভিমানি বাবা হলে ভাল হত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন