জিঘাংসা “ জয় হাসিনা”র 'সুযোগ্য পরিচালনায় চলিতেছে পূর্ণ দৈর্ঘ জমজমাট প্রতিহিংসা -পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে !!
লিখেছেন লিখেছেন মহুয়া ২৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:৪০:২০ রাত
সভ্যতার ইতিহাসে মানব জাতি আজ পর্যন্ত যত অপরাধ করেছে তার মধ্যে খুন হচ্ছে জঘন্যতম। আদিম সময়ে নেবুচাদ নেযার এর বিধানেও অপরাধের এর শাস্তি ছিল কৃত অপরাধের সমান। কেউ একশ টাকা চুরি করলে তার শাস্তি ১০০ টাকাই ! দাঁতের বদলে দাঁত বা চোখের বদলে চোখ - বাইবেলের আইনের কথা! সুবিচারের কোড ! কুরআন ও তাই বলেছে; তবে আরও উত্তম ভাবে; খুনের বদলে খুন করতেই হবে এমন নয়, রক্তপণ দিয়ে বাদী পক্ষের দাবি পূরন করা যায়; আবার চূড়ান্ত ভাবে যোগ করেছে - ‘ক্ষমা আরও মহত্তম গুণ!
অনেক সময় অপরাধ সংঘটিত হয়ে যায়, দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এ ধরনের ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত খুন’ থেকে আলাদা করা হয়। এখানে খুনের উদ্দেশ্য অনুপস্থিত, তবে খুন হয়ে গেছে। যেমন একজনকে কেউ ধাক্কা দিয়েছে, সে পড়েছে পাথরের উপর, মাথায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু হয়েছে! বিচারে এ ধরনের খুনের শাস্তি ‘লঘু হয়।
আর যারা পরিকল্পিত ভাবে খুন করে, তাদের শাস্তি হবে - বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে খুন ! খুনের বদলে খুন। এক ধরনের প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের আবহ উঠে আসে এখানে! সমস্যা হল, যদি ‘সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ না করা যায়, কিন্তু বিচারে খুন এর বদলে ‘খুন করা হলে (ফাঁসী বা অন্য কোন ভাবে হলেও- এটা খুনই, অন্য কিছু নয়), পরে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় – ‘অপরাধী আসলে নিস্পাপ, তখন আর ‘সংশোধনের সুযোগ থাকে না! এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে। খুনের শাস্তি রহিত করে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান এর জন্য, সভ্য দেশ গুলোতে প্রচেষ্টা চলছে। অনেক দেশেই ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট – হিসেবে ‘ফাঁসী বন্ধ হয়ে গেছে!
বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে এক হত দরিদ্র দেশ। বিদেশী সাহায্যের ‘স্যালাইন আর ‘প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়ে কোন ভাবে টিকে আছে এই দেশটি! বিশ্বের কাছে ‘সর্বোচ্চ দুর্নীতি পরায়ণ দেশগুলোর প্রথম কাতারে অনেক বারই বাংলাদেশের নাম উঠে এসেছে! দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়/ সচিবালয়, প্রশাসন, বিচার –আদালত- পুলিশ –রাজনীতিক- এমন কোন সেক্টর নেই যারা দুর্নীতিপরায়ণ নয় !!
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্থান হয়েছে পৃথিবীর মানচিত্রে! বর্তমানের সরকার প্রধানের ভুমিকায় যে মহিলা- তিনি এর আগেও ক্ষমতায় ছিলেন! আগে থেকেই তিনি ঝগড়াটে, আগ্রাসী- প্রতিহিংসা পরায়ণ, নীচু ধরনের মানসিকতার জন্য’ সুবিখ্যাত ! কিন্তু এবার ‘অবৈধ ভাবে ক্ষমতা দখলের পর, তিনি যেন তার অবৈধ কর্তৃত্ব শক্ত করতে আরও বেশী বেশী প্রতিহিংসার ‘প্রদর্শনী করে চলেছেন। গুম, খু্ন, অবিচার- নির্লজ্জ দলবাজি –উন্মুক্ত মিডিয়ায় নির্জলা মিথ্যাচার –বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে তার ‘রাজত্বে! হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী / পাতি মন্ত্রী গুলোর একটাও সত্য বলার সৎসাহস রাখেনা। তারা এই উন্মাদ মহিলার পায়ে তেল মেখে আর চামচামি করে নেহায়েত আখের গুছানোতে ব্যস্ত! দেশের জনগণের কোন সুযোগ নেই- সহ্য করা ছাড়া! ‘সরকারী পুলিশ আর রাজনৈতিক আশীর্বাদ পুষ্ট গুন্ডা যাদের কাজের ধারা এখন একই রকম হয়ে গেছে- তারা তাদের ‘লুটের মাল একত্রে ভাগাভাগি করে হরদম!
এই অবস্থার মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের জন্যই নয়, দেখে মনে হয় শুধু ব্যাক্তিগত ‘প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ‘পরিকল্পিত খুনের ঘটনা ঘটছে! বাংলাদেশ একটা ‘ বিচারের নামে পুরো ‘আদালতের সিস্টেম এখন ‘দুর্নীতিগ্রস্থ, আর এ দুর্নীতি ঘটেছে পুরোপুরি রাজনৈতিক বা সরকারী ছত্রছায়ায়!
একটা দেশের কাঠামো গড়ে উঠে এর বিচার ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। দেশের বড় বড় মানুষ গুলো যখন বিবেক বিবেচনা হারিয়ে বসে তখন সেটা হবে- ‘মগের মুলুক! অবশ্য এখন এটাকে নূতন বাগধারায় ‘ হাসিনা মুলুক’ বললে ভুল হবে না! বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন রকমের ব্যর্থতা থাকে- কিন্তু কোন একটা দেশ যদি তার জনগণের জন্য ‘নিরপেক্ষ বিচার’ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করতে পারে – তাহলে নিঃসন্দেহে ‘ সেটা ব্যর্থ রাষ্ট্র- FAILED STATE! গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশে এই “নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা” গড়ে উঠতে পারে নি! এটা হয়ে উঠেছে “ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার!
‘বিচার বোধ’ বা বিবেচনা বোধ- মানুষকে দেয়া সৃষ্টি কর্তার এক নেয়ামত! একটা গরু যখন মাঠে ফসল খায়- সে নিজের মালিক আর অন্যের ফসলের মধ্যে প্রভেদ দেখে না! কিন্তু মানুষ দেখে ! বিচার বোধের অভাব বা নির্বুদ্ধিতার উদাহরণ এর একটা গল্প মনে পড়ে গেল!
কোন এক ব্যক্তিকে তার পিতা উপদেশ দিলেনঃ বাবা, যে দেশেই যাও, যদি দেখতে পাও সেখানে ঘি আর তেলের এক দাম- সে দেশে থেকো না!
কেন ? জানতে চাইল পুত্র!
বাবা জানালেন, যে দেশের মানুষের ঘি আরে তেলের মধ্যে পার্থক্য করার মত বিবেচনাবোধ থাকে না, তারা ‘অসভ্য । পশু পর্যায়ের ! যত দ্রুত সম্ভব এদের সংশ্রব এড়িয়ে দূরে চলে যেও!
পিতা গত হয়েছেন! জীবিকার উদ্দেশ্যে এই ব্যাক্তি অন্য দেশে পাড়ি জমালেন। এখানে সবকিছু সস্তা, আইন কানুন মনে হল খুব কড়া নয়, ঢিলে ঢালা! সমস্যা হল, তেল ও ঘি এর দাম এখানে এক! প্রয়াত পিতার উপদেশ মনে পড়ে গেল! কিন্তু নানাবিধ প্রলোভনে সে উপদেশকে আর গুরুত্ব দিল না এই ব্যাক্তি; এখানেই বাস করতে থাকল!
একদিন ভোরে শহর কোতোয়াল (অর্থাৎ এখনকার ‘পুলিশের ) করাঘাতে তার ঘুম ভাঙ্গল! দরজা খুলে বাইরে এসে -কি বিষয় জানতে চাইল সে!
পুলিশ তাকে সময় দিল না! তড়িঘড়ি বেঁধে ফেলে শহরের কেন্দ্রের দিকে নিয়ে চলল তাকে! বিচারক অপেক্ষা করছে ! ফাঁসী কাঠ তৈরি সেখানে! খুব অবাক হয়ে গেল এই ব্যাক্তি ! সে কোন অপরাধ করেনি, জ্ঞাত অজ্ঞাত ভাবেও কোন অপরাধের সাথে সে জড়িত নয়!
তার শেষ ইচ্ছের কথা জানতে চাওয়া হল! (বহু শতাব্দী পার হলেও – এখনও নাকি এই ‘শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়! ফাঁসী দেয়ার আগে মুজাহিদ সাহেব বা সা.কা. চৌধুরীর কাছেও তা জানতে চাওয়া হয়েছে কিনা, সংশ্লিষ্টরা বলতে পারবেন! ) ।
প্রথা ভেঙ্গে সে জানতে চাইলঃ মহামান্য আদালত! আমার অপরাধ কি – যদি জানাতেন?
তাকে বলা হল, গত কাল একজন এই বাজারে খুন হয়েছে! তার শাস্তি হিসেবে একজনের ফাঁসী হওয়া দরকার! তুমি বিদেশী – কাজেই কোন আত্মীয় স্বজন কেউ নেই- রাষ্ট্রীয় কাজে কেউ বাধা দিতে পারবে না! এজন্য তোমাকে তুলে আনা হয়েছে! অপরাধের শাস্তি তো কাউকে না কাউকে পেতে হবে! এখন এ কারণে তোমাকে ফাঁসীতে ঝুলতে হবে! বিচারক ‘জোর দিয়ে বললেন!
এই বার তার প্রয়াত পিতার ‘উপদেশ মনে পরে গেলে! যে দেশে ঘি আর তেল -----! কিন্তু অনেক দেরী হয়ে গেছে ততক্ষণ ! সময় মত উপদেশ না শুনলে সে উপদেশ তো ‘ পদ্ম পত্রে নীর!
কেউ অপরাধ করলে সে শাস্তি পাবে এতে কারো কিছু বলার নেই! কিন্তু বিচার এর নামে প্রহসন করে কাউকে ‘ফাঁসীতে ঝূলালে তা –‘পরিকল্পিত খূণের আওতায় পরে! এ অপরাধে বর্তমান সরকারের বিচার ব্যবস্থার সাথে জড়িত, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, বিচারক থেকে সাংসদ – এমনকি পুলিশ পর্যন্ত সবার বিচার হওয়া দরকার! তারা যা করছে তা ‘রাস্তার আদালতের কাজ; কোন সভ্য দেশের বিচার ব্যবস্থায় যা কাম্য নয়!
শূন্য থেকে শুরু করে- পৃথিবীর অনেক দেশই সামনে এগিয়ে গেছে। সিংগাপুরের মত এক টুকরো একটা দেশ, এখান থেকে থুথু ফেললেও অন্য দেশে গিয়ে পড়বে; পিপাসার পানি টুকুর জন্যও এক সময় মালয়েশিয়ার উপর নির্ভর করতে হয়েছে, তার অবস্থা এখন কোথায়? আর বাংলাদেশের ইতিহাস ? ৭১ থেকে শুরু করে এখনো ৭১ এ আটকে আছে! ৭১ এর বিচারের নামে চলছে ‘অবিচার আর দুর্নীতির লাইভ প্রদর্শনী, ২০১৫! এর মধ্যে কিছু ‘ছাগল আবার হাত তালি দিছে – এতে মজা করছে বাহবা দিয়ে ‘নিজের ধান্ধা বাজীর রাস্তা পরিষ্কার করছে! ( আরে ছাগল- তোকেও তো একদিন একই ভাবে ঝুলানো হতে পারে-যেখানে বিচার নেই- সেখানে সব হতে পারে!!) । এর শেষ কোথায়! আর কত –দিন এদেশের মানুষকে এমনটা সহ্য করে যেতে হবে! এর থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে কি মানুষ ভাববে না!
একটা উত্তম নেতৃত্বের গুণ হল- দেশের জনগণকে বা জনমতকে একত্রিত করা; – কোন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে, দল মত নির্বিশেষে তাদেরকে নেতার অনুগামী করে তুলা । জনমতকে বিভাজিত করা নয়! জনমতের বিভাজনে লাভ হয় কেবল ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর, যারা দুই দলের কোন্দলের মধ্যে আখের গুছায়। এক সময় ‘পরাশক্তি ইংরেজ এই ‘গেম খেলেছে – Divide and Rule ফর্মুলায়! কিন্তু "সুযোগ্য, কল্যাণমুখী নেতৃত্ব করবে উল্টোটা! তারা জনমতকে একীভূত করবে, দেশের উন্নয়নে জনমনের এই ‘একমুখী গতি অতি জরুরী! বাংলাদেশে একবার ৭১ আর ৭৮ এর পরে একবার এমনটা ঘটেছিল – এর পরে আর ঘটে নাই! বর্তমান রাজনীতিতে - অতীতে ব্রিটিশ এর শেখানো সেই Divide and Rule ফর্মুলার প্রয়োগ দেখে মনে হয়- কে খেলছে এ গেম?– কার স্বার্থে খেলা হচ্ছে!
আমরা অপেক্ষায় আছি - কবে আবার সে সুযোগ্য নেতৃত্বের আবির্ভাব হয়, যে অপার সম্ভাবনাময় এ দেশটাকে পিছিয়ে আবার ৭১ এ নয়, সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে! এ দেশটার মানুষদেরকে ভারতীয় টাইম লাইনে ‘বিভক্ত না করে – একত্রিত করতে পারবে; – উন্নতির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য! এই সেই দেশ - যেখানে বছরে তিনবার ফসল হওয়ার মত উর্বর জমি আছে-আছে ৩০ কোটী হাত! এমন উর্বর মাটি খুব বেশী দেশে নেই!
আমার তো জানি –united we stand, divided we fall!! দেশের মানুষ পূরোপুরি বিভাজিত হয়ে গেছে! এখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ঘটলে – 'ভবিষ্যৎ এর ক্ষমতাসীন দল যদি আবারো এই ধরনের প্রতিহিংসায় মেতে উঠে? – বর্তমানের চলচিত্রের ‘অভিনেতা ও হিরো হিরোইনরা ভারতের 'মোদীর পশ্চাৎদেশের ধুতির তলে আশ্রয় নিয়ে বাঁচতে পারবেন বলে মনে হয় না!
আর কত জনকে এই প্রতিহিংসার বলী হয়ে প্রাণ দিতে হবে? রাজনৈতিক প্রতিহিংসার এই খূণোখুনি চলতে থাকলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হবে!
দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই-আমরা বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ হওয়া দেখতে চাই! অপেক্ষায় আছি! সেদিনের জন্য!
বিষয়: বিবিধ
১৬২১ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেকদিন পর চমৎকার একটি লিখা নিয়ে এলেন।
গল্পটি অসাধারণ লাগলো।
লিখাটির কিছু অংশ মনে হলো রিপিট হয়েছে।
জাযাকিল্লাহ আপু!
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ!
হ্যাঁ, এডিট করে দিয়েছি।
আবারো ধন্যবাদ আপনাকে!
বিশ্ব যখন চলছে এগিয়ে আমরা হঠছি পিছে
বিবি তালাক এর ফতোয়া খুঁজছি ফেকা ও হাদিস চষে!
মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক!
ফিকাহ চর্চা দোষের কিছু নয়, তবে যার যেটা কাজ সেটা সঠিক ভাবে করলে মানুষের উপকার হত!
এরকম লিখাগুলোর খুব প্রয়োজন বর্তমানে।
সুন্দর, ঘুছানো, ঝরঝরে, বিবেকবোধ জাগ্রত করার মত লিখা। ভাল লাগলো পড়তে।
ভবিষ্যত লক্ষ্য বিনির্মানের পরামর্শ ও সিংগাপুরের উদাহরন বাদে অবশিষ্ট লিখার সাথে পুরোপুরি একমত পেয়েছি নিজেকে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!
উটপাখী
Posted: মার্চ 20, 2011 in সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
0
সুধীন দত্তের এ কবিতাটি আপনাকে উপহার দেওয়া হলঃ
আমার কথা কি শুনতে পাও না তুমি?
কেন মুখ গুঁজে আছ তবে মিছে ছলে?
কোথায় লুকাবে? ধূ ধূ মরুভূমি;
ক্ষ’য়ে ক্ষ’য়ে ছায়া ম’রে গেছে পদতলে।
আজ দিগন্তে মরীচিকাও যে নেই;
নির্বাক, নীল, নির্মম মহাকাশ।
নিষাদের মন মায়ামৃগে ম’জে নেই;
তুমি বিনা তার সমূহ সর্বনাশ।
কোথায় পলাবে? ছুটবে বা আর কত?
উদাসীন বালি ঢাকবে না পদরেখা।
প্রাকপুরাণিক বাল্যবন্ধু যত
বিগত সবাই, তুমি অসহায় একা।।
ফাটা ডিমে আর তা দিয়ে কী ফল পাবে?
মনস্তাপেও লাগবে না ওতে জোড়া ।
অখিল ক্ষুধায় শেষে কি নিজেকে খাবে?
কেবল শূন্যে চলবে না আগাগোড়া।
তার চেয়ে আজ আমার যুক্তি মানো,
সিকতাসাগরে সাধের তরণী হও;
মরুদ্বীপের খবর তুমিই জানো,
তুমি তো কখনও বিপদপ্রাজ্ঞ নও।
নব সংসার পাতি গে আবার চলো
যে-কোনোও নিভৃত কণ্টাকাবৃত বনে।
মিলবে সেখানে অনন্ত নোনা জলও,
খসবে খেজুর মাটির আকর্ষণে।।
কল্পলতার বেড়ার আড়ালে সেথা
গ’ড়ে তুলব না লোহার চিড়িয়াখানা;
ডেকে আনব না হাজার হাজার ক্রেতা
ছাঁটতে তোমার অনাবশ্যক ডানা ।
ভূমিতে ছড়ালে অকারী পালকগুলি,
শ্রমণশোভন বীজন বানাব তাতে;
উধাও তারার উড্ডীন পদধূলি
পুঙ্খে পুঙ্খে খুঁজব না অমারাতে।
তোমার নিবিদে বাজাব না ঝুমঝুমি,
নির্বোধ লোভে যাবে না ভাবনা মিশে;
সে-পাড়া-জুড়নো বুলবুলি নও তুমি
বর্গীর ধান খায় সে ঊনতিরিশে।।
আমি জানি এই ধ্বংসের দায়ভাগে
আমরা দু জনে সমান অংশীদার;
অপরে পাওনা আদায় করেছে আগে,
আমাদের ‘পরে দেনা শোধবার ভার।
তাই অসহ্য লাগে ও-আত্মরতি।
অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?
আমাকে এড়িয়ে বাড়াও নিজেরই ক্ষতি।
ভ্রান্তিবিলাস সাজে না দুর্বিপাকে।
অতএব এসো আমরা সন্ধি ক’রে
প্রত্যুপকারে বিরোধী স্বার্থ সাধি ;
তুমি নিয়ে চলো আমাকে লোকোত্তরে,
তোমাকে, বন্ধু, আমি লোকায়তে বাঁধি।।
ইন্টারেস্টিং কবিতা। কবিতা এত রহস্যময়, এত লুকায়িত ভাব ধারন করে - পুরোপুরি সেন্স আত্বস্থ করতে আমি ব্যার্থ হই। তারপর ও যা পেলাম - যে সেন্সটি এলো - মনে হল আজকের আমাদের বহুদা অবস্থান এর এক প্রতিচ্ছবি আর তা ভেদ করার এক দূর্নিবার আহ্বান বুঝি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন