সবার নানা রকম পথ খোলা, জামাত খোলা রেখেছে মরণেরটা ই

লিখেছেন লিখেছেন যুথী ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৭:২০:৩৪ সকাল



এটা আমার স্বামীর কথা। আমি বল্লামঃ যুক্তি দাও। তিনি বল্লেনঃ ‘বি এন পিকে মরতে দেবেনা কেও। আমেরিকা না, বৃটেইন না, রাশা? তাওনা, মিনমিনে চীন ও না। এমন কি সৌদী আরব ও না। কারণ তাতে গণতন্ত্র টিকবেনা। আওয়ামী একদলীয় শাসন হবে, যেটা পৃথিবীর কেউ চাইবে না’।

‘বলো কী’! চেঁচিয়ে উঠলাম। তিনি স্বভাবসুলভ সক্রেটিসের মত মাথা চুলকিয়ে বললেনঃ হাঁ রে যুথী, এখন সবাই চাচ্ছে জামায়াতকে শেষ করার এই সুযোগ টা কোন ভাবেই হাতছাড়া করবে না। বিভিন্ন দিক দিয়ে এবং নানা ফ্রন্টে দূর্বল করে, তারা জামায়াত কে শেষ করবে।

আমি ঘেমে উঠছি; আমার বাবা, চাচা, আমার চৌদ্দ গোষ্ঠির মৃত্যুর পরোয়ানা যেন সামনে আযরাঈলের বেশে আসছে আর যাচ্ছে। মোল্লা চাচার রক্ত তার নাক দিয়ে নয়, আমার চোখ দিয়েই যেনো বইতে শুরু করলো। গোলাম আযম স্যারের নিষ্পাপ চেহারা, মাওলানা ইউসুফ সাহেবের অভিমানি মুখ আর শত শত শিবির কর্মীর লাশ মূহুর্তে আমার কাছে সরব মনে হলো। আমি বললামঃ দেখো রায়্যানের বাবা, এই সব নিয়ে আর ফাজলামি করোনা। বি এন পি কর, নেতাদের বুঝাও, জামায়াতের পাশে দাঁড়াক।

স্বামী, সেই পুরানো শিবির করা মানুষ, আমার কথায় নিরব হয়ে গেছেন। ‘শোন’, গম্ভির গলায় তিনি বললেনঃ ‘এই দেশ হতে ইসলাম বিরোধী শক্তিকে উপড়ে ফেলতে কিছু লোককে মরতে হবে। এখন গয়স্বর মরলে ইসলামের কোন উপকার নেই। খোকারা বা আব্বাসেরা অনেক ধুরন্ধর, ওদের মরলে ‘ইসলাম পন্থীরা মরেছে’ এ কথা কেও বলবে না। আর ফালুর যা সম্পদ, ঐ সব ছেড়ে মরার প্রস্তাব দিলেই হেসে ওঠে বলেঃ মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভূবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই।

লোকটার সব সময় হাসি ঠাট্টা। আমি বিরক্ত বোধ করলাম। তিনি সেটা লক্ষ্য করে বললেনঃ আসলে জামায়াত সব গুলো দরোযা বন্ধ করে ফেলেছে। এখন সামনে তার এগুনো ছাড়া আর ফেরার পথ নেই। এযিদের বাহিনি সব দিকে দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। ওদের ৮% লোক নিয়ে এখন মরলে সুবিধা হবে। এযিদের রক্ত আমাষয় শুরু হবে। এবং সে বসংবদ শেষ হবে। আর যদি ফেরার চেষ্টা করে সেখানেও তাদের আদর্শের মৃত্যু হবে। ২০০৬ এর দিকে আমরা বলেছিলেম ফিরতে, হিজাযে থাকতে চায়নি জামায়াত। আর এখন ফোরাত নদীর একদম কিনারে ছেলে মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দাঁড়ায়ে গেছে জামায়াত। সৈয়দ মহসিন আলী নামক সিমারের হাতে পেট্রল দেখেছো? ওটা নাকি কার গায়ে ঢেলে দিয়ে হত্যা করবে।

আমি একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে গেলাম। তাহলে সত্যি কি জামায়াত সব পথ বন্ধ করে ফেলেছে?!



রায়্যানের বাবা বললেনঃ তবে তাদের সামনে জান্নাতের পথটা কিন্তু খোলা। এরা নিহত হয়ে জান্নাতের একটু লোভ করলেই কিন্তু বাকী বিজয়টা এসে যায়। ওদের দেহ শুন্য মাথা দেখার আসায় বসে আছে নিযুত জাতীয়তা বাদীরা, আর মাথা কাটার জন্য রামদা নিয়ে আর পেট্রোল নিয়ে বসে আছে ইবনে যিয়াদের লস্করেরা। এখন এই পথ ছাড়া জামায়াতের সামনে সব দুয়ার রুদ্ধ হয়ে গেছে।

আমি গুন গুনিয়ে উঠলাম, চোখে আমার বেদনার বারিধারাঃ

কোন দিকে পথ নেই চারিদিকে বন্ধ দুয়ার

কোন দিকে আলো নেই চারিদিকে ছেঁয়েছে আঁধার

তবু ও চলতে হবে সামনে যেতেই হবে

পথ নেই মুক্তি পাবার..................

বিষয়: বিবিধ

১৭০৩ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

305421
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৩৬
আবু জারীর লিখেছেন : অসাধারণ আপু, মাশা’আল্লাহ কলম সেরকম শাণিত। হার কারবালাকা বাদ, ইসলাম জিন্দা হোতাহ্যায়। বাংলার এ ক্ষুদ্র জমিন আল্লাহ অবশ্যই তাঁকে সেজদা করার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত মুমিনদের জন্য উন্মুক্ত রাখবেন, ইনশা’আল্লাহ। ধন্যবাদ।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৮:৪০
247089
যুথী লিখেছেন : আবু জারীর ভাই, আপনার মত এত বড় মাপের ব্লগার আমার গরীবের ঘরে পাড়া দিয়েছেন! ওরে কে আছিস, পানি নিয়ে আয়, নিয়ে আয় হাত পাঙখা। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনারা আসলেই মহান।
305430
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৫৪
গাজী মিজান লিখেছেন : Happy
305432
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:২৩
হতভাগা লিখেছেন : জাশি এখন মাইর খাবে , এটাই তাদের নিয়তি ৭১ এর কাজের।

নিজেরা নিজেরা যতই কাটাকাটি করুক না কেন ছাত্রদল আর ছাত্রলীগ একটা জায়গায় তারা একাট্টা যে শিবিরকে কোন প্লট দেবে না ।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:৪৯
247107
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন ভাইয়া ভাগ্যবান।Love Struck
305439
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:৪৭
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : খুব সুন্দর অবতারণা। সমাধান নেই। পাঠকদে পথ বাতলিয়ে দেবার জন্য রাস্তা করে দিয়েছেন। কেউ হতাশ হয়ে বিদায় নেবে। কেউ মনের ঝাল মিটাবে। কেউ গোড়ামীর ছলে নিজেকে মিছে শান্তনা দেবার জন্য খোড়া যুক্তি দেবে।
অন্ধ আনুগত্য আর সীমিত গন্ডির মাঝে গড়ে উঠা আমরা কোন কিছুই সহ্য করতে পারিনা। সোয়াবের নিয়মে অন্য কোন পত্রিকা্ও পড়িনা। এতে পরিবেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষন করে কিছুই বলতে পারিনা।

৭১ সালে জামায়াতের এত বড় বিপর্যয় ঘটার পরও শিক্ষা নেয়নি জামায়াত। চিনতে চেষ্টা করেনি আম্লীগকে। যাইহোক, সব বিজয়ের আগেই কঠিন মুহর্ত অাসে। এটি দিব্যি সত্যিই ্ও বুঝা যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত জনগনের জন্য যে বিপ্লব সে বিপ্লবে জনগন থাকা চাই। কয়টি গ্রাম বা থানায় আমরা নিজেদেরকে মডেল বানাতে পেরেছি। বর্তমানে যে সস্তা জনসমর্থণ জামায়াতের রয়েছে তা শেষ করতে বিরোধীদলের এক সপ্তাহ লাগবে।
তৃতীয়ত আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরীতে জামায়াত কি আশানুরুপ কাজটি করতে পেরেছে?
একজন আরবাকান বানাতে পারিনি। ্ও সরি। তারতো আবার দাড়ী নেই। সেতো জামায়াতের প্রাথমিক সদস্য হবার যোগ্যতা রাখেনা। এসব বললে জামায়াত বিরোধী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয় খুব ত্যাগী একজন জামায়াতীক্ওে। এখন সময় এসেছে এসব ভাববার। তুরস্কে একদিনে বিজয় অাসেনি। সময় এসেছে তুরুস্ককে ফলো করার অনেক রক্ত ঝরার আগে। ধন্যবাদ। খুব কষ্ট থেকে কথা গুলো রেখে গেলাম।
১৩ মার্চ ২০১৫ সকাল ১০:৫৫
249663
আহমদ মুসা লিখেছেন : একজন আরবাকান বানাতে পারিনি। ও হ্যাঁ সরি। তারতো আবার দাড়ী নেই। সেতো জামায়াতের প্রাথমিক সদস্য হবার যোগ্যতা রাখেনা। এসব বললে জামায়াত বিরোধী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয় খুব ত্যাগী একজন জামায়াতীক্ওে। - এ ব্যাপারে জামায়াতীরা কিছুটা উদার হলেও আমাদের দেশের রক্ষণশীল সনাতনপন্থী আকাবেরভক্তদের প্রভাব প্রতিপত্তি ও শেকড় কত গভীর সেটা কল্পনা করাই কঠিন! জামায়াত উদারতা দেখাতে গিয়েও ঘরের শত্রু বিভিষণের মতো আকাবেরপন্থীরা নিচ থেকে টেনে পড়নের কাপড় খোলে পশ্চাতের শুকনো গুতে পানি ঢালার মধ্যেই ইসলামের খেদমত ও ঈমানের গভীরতা খুজে বেড়ায়। জামায়াতের প্রধান দূর্ভাগ্য মূলতঃ এখানেই। আওয়ামী লীগ বিএনপি কিংবা অন্যন্যা ভোগবাদী অস্থায়ী রাজনৈতিক শক্তিগুলো জামায়াতের জন্য প্রকৃত কোন সমস্যা নয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জামায়াতের প্রকৃত সমস্যা হচ্ছে ইসলামকে খন্ড খন্ডভাবে চর্চাকারী "দ্বীনের হকপন্থী" গ্রুফগুলো। একবার চিন্তা করে দেখুন তো- তুরাগ নদীর তীরে প্রতি বছর প্রায় অর্ধকোটি মানুষ জড়ো হয় "দ্বীনের স্বার্থে, ঈমান-আমল ও আকিদাকে মজবত রাখার স্বার্থে"। অথচ এসব লোকগুলো দেশের বেশীর ভাগ জনগোষ্টীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের দায়িত্ববান অবলম্বন মনে করে সেকিউলারপন্থী ভোগ বিলাসবাদী আওয়ামী লীগ নতুবা বিএনপিকে। ক্ষেত্রে বিশেষে দেখা যায় অনেক বামপন্থীরাও মরনের পড়ে কবরের শান্তি নিশ্চিত করার জন্য ঈমান আমলের ঝোলা মাথায় নিয়ে তাবলীগ জামায়াতে যোগদান করে। অথচ এই লোকগুলোই একদিকে রাজনীতিতে জামায়াতের অবদানকে অশ্বীকার করে অন্যদিকে "দ্বীনের ক্ষেত্রে জামায়াতকে ভ্রান্ত মওদুদীবাদী, গনতন্ত্রপন্থী জাহেল" বলে বিদ্বেষ ছড়ায়। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি খন্ড খন্ড ভাবে দ্বীন চর্চাকারীদের সাথে শক্তভাবে সেতু বন্ধন করতে পেরেছে সফলভাবে। অপর দিকে জামায়াতের জন্য হয়েছে এসব শক্তিগুলো চরম বৈরী! এখানেই জামায়াতের ব্যর্থতা! জামায়াত এসব ধর্মীয় ও সামাজিক শক্তিগুলোর সাথে সেতু বন্ধন করতে পারেনি। যিনি মাসের পর মাস তাবলীগে সময় লাগায় তিনি আবার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চিন্তার দিক থেকে জামায়াতের কাছাকাছি না হয়ে আওয়ামী মতাদর্শের অতি নিকটে হয় কি ভাবে? জামায়াতের নীতির্নিধারকরা কি এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করে?
305440
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ১১:৪৮
আব্দুল মান্নান মুন্সী লিখেছেন : এই পথই জান্নাতের সর্টকাট...,অনেক ধন্যবাদ বোন অসাধারন লেখাটির জন্য।
305449
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৫৩
আশাবাদী যুবক লিখেছেন : অন্ধকারের মধ্যে আমরা আছি সন্দেহ নেই ৷ কিন্তু সে অন্ধকার যে কাটবেনা তা কিন্তু ভুল ৷
জামায়াতের অদ্যবদি পথচলায় রয়েছে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা ৷ এর মাধ্যেই অতিতে সব প্রতিকূলতা থেকে আল্লাহ মুক্ত করেছেন ৷ এই অন্ধকার থেকেও তিনি বের করে আনবেন, ইনশাআল্লাহ ৷ তবে কিছু ত্যাগ হয়তো আরো বাকি আছে ৷
308667
১৩ মার্চ ২০১৫ সকাল ১০:৫৬
আহমদ মুসা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File