আপনি কি বিবাবিত? জেনে নিন কীভাবে দাম্পত্য জীবনে সুখী হবেন
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামিক রেডিও ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১১:৫৩:২৯ রাত
স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের অর্ধাঙ্গ। মানুষ যেমন তার অর্ধেক অঙ্গ নিয়ে পূর্ণ জীবনের সাধ পেতে পারে না, তেমনই একজন লোক একজন ভালো স্বামী বা স্ত্রী ছাড়াও পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারে না। একে অপরকে যতোটা বুঝতে পারবে তাদের জীবন ততটাই সুন্দর ও মধুময় হবে। একজন পুরুষের জীবনে যেমন অন্যতম আশা থাকে ভালো একজন স্ত্রী পাওয়া, তেমনিভাবে একজন মেয়েরও জীবনে সবচেয়ে বড় চাওয়া-পাওয়া হলো ভালো একজন স্বামী ভাগ্যে জোটা। কিন্তু ক’জনের ভাগ্যেই বা জোটে এমন জীবনসঙ্গী?
মন মতো জীবন সঙ্গী না হলে দেখা দেয় বিপত্তি। লেগে থাকে দ্বন্ধ-বিরোধ। ঘটে যায় ঝগড়া-বিবাদ। এক সময় ভাঙ্গনের মুখে পড়ে দাম্পত্য জীবন।
এই বিরোধ-বিবাদ আর ঝগড়ার অনুঘটক হিসেবে কাজ করে অনেক উপাদান। বৈষয়িক চাহিদার লেজেগোবরে অবস্থা, যৌনচাহিদার তারতম্য, মন মতো সন্তান না হওয়াসহ আরো অজস্র কারণে ঘটে এই বিরোধ-বিবাদ। বর্ণিত আছে, আরবে একজন শাসক ছিলেন। তার উপনাম ছিল আবু হামযাহ্। সে এক মহিলাকে বিবাহ করে। তার মনোবাসনা ছিল যেন তার পুত্র সন্তান হয়। কিন্তু স্ত্রীর গর্ভে তার কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। জাহেলী যুগে প্রথা ছিল- তারা কন্যা সন্তান জন্ম নেয়াকে কটু দৃষ্টিতে দেখতো। এমনকি কন্যা সন্তানকে জীবিত কবরস্থ করাকে তারা গৌরবের বিষয় মনে করতো। যাই হোক, আবু হামযাহর ঘরেও কন্যা সন্তান জন্ম নিলে সে ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বললো। স্ত্রী চলে গেল। দূরে অন্য এক ঘরে সে অবস্থান করতে থাকলো। এক বছর পর আবু হামযাহ্ সেই ঘরের পাশ দিয়ে কোথাও যাচ্ছিল। ইত্যবসরে শুনতে পেল, তার স্ত্রী তার কন্যার সাথে গুনগুনিয়ে নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করে যাচ্ছে-
‘আবু হামযাহর কী হলো! সে আমাদের কাছে আসছে না! অন্য ঘরে থাকছে। আমাদের ওপর সে অসন্তুষ্ট এ জন্য যে আমরা কন্যা সন্তান জন্ম দিই। অথচ এটি তো আমাদের এখতিয়ারে নেই। আমরা তো কেবল সেই নেয়ামত- যা আমাদেরকে দান করা হয়, তা নিয়ে থাকি। আমরা তো ক্ষেতের মতো। কৃষক সেখানে যে বীজ বুনে ক্ষেতে তো তা-ই উৎপন্ন হবে।’
আবু হামযাহ্ এ বয়াতটি শুনলে তার ভেতর পিতৃমমতার উদ্রেক হয়। স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহারের চিন্তা এসে ভর করলো। তৎক্ষণাত সে ঘরে এসে স্ত্রী ও কন্যাকে চুমু দিয়ে ঘরে নিয়ে গেল।
সুতরাং বোঝা গেল, বহু সময় অতি সাধারণ কথাবার্তার মাধ্যমেও মনে ভীষণ দাগ কাটে। স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়ে প্রশান্তির প্রবাহ বইতে থাকে। এমন সময়ে যদি কারো ক্ষেত্রে ঝগড়া-বিবাদের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, চুপ থেকে পরিস্থিতি সহজে সহ্য করা গেলে পরবর্তীতে স্বামী নিজ ভুল বুঝতে পেরে স্ত্রীকে আগের চেয়ে বেশি আপন করে নেয়।
আদর্শ স্ত্রী তারা- যারা সু-সময় ও সুন্দর পরিস্থিতিতে স্বামীর সংশোধনের পন্থা খোঁজে। আদর্শ স্ত্রী তারা- যারা প্রশস্ত মনের অধিকারী। স্বামীর অশোভন ও আপত্তিকর কথাগুলো যে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে। পরিস্থিতি সহ্যসীমায় পৌঁছার আগ পর্যন্ত যে চুপ থাকে। আদর্শ স্ত্রী তারা- যারা জানে যে, স্বামী তাকে বিবাহ এ জন্যই করেছে যে সে তাকে ভালোবাসে। সে তার প্রয়োজনেই শাদি করেছে। আদর্শ স্ত্রী তারা- যারা স্বামীর মনোরঞ্জনের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে থাকে। স্ত্রীর মনোপুতঃ নয়- এমন কথা বললেও স্বামীর প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসায় সে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করে না। আদর্শ স্ত্রী তারা- যারা প্রত্যেক বিতর্ক ও ঝগড়ার সময় নিজেকে কন্ট্রোল করে রাখে। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে, স্বামী কেন আমাকে এমন বললেন? আমার কী ত্রুটি হয়ে গেল? আমি কেন এমনটি করলাম? সে অন্যজন দোষগুলো সুধরে দেবার আগেই নিজেকে সংশোধন করে নেয়। নিজের ভুলের ওপর পড়ে থাকা পর্দাগুলো সরিয়ে সে ভাবতে থাকে এবং উত্তোরণের পন্থা খুঁজতে থাকে। মনে মনে ভাবে ‘আমি সে সময় চুপ থাকলেই কি ভালো হতো না?’ ‘আদর্শ স্ত্রী’রা এমনই হয়। সে স্বামীর সাথে এমন আচরণ করে, যাতে প্রতীয়মান থাকে যে, সে কিছুতেই স্বামীর থেকে অমুখোপেক্ষী নয়। সর্বদা সে স্বামীর অনুগত ও অধীন
লেখাটির বাকি অংশ পড়ুনঃ এখানে
বিষয়: বিবিধ
৮৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন