সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ (Socialism & Communism) একটি সিরিজ পোস্ট-১
লিখেছেন লিখেছেন ইসলামিক রেডিও ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১২:০৫:৫১ রাত
গতকাল আমার কাছে বাসদের সাধারণ সম্পাদক এসেছিলো। আমি ভালো করেই জানতাম এসব মতবাদের সাথে ইসলাম কখনো যায় না। কারণ আল্লাহর কাছে একমাত্র দ্বীন (মতবাদ) হলো ইসলাম। কথার ধাঁচ দেখে উনি ঠিকই অনুমান করলেন আমাকে তার দলে ভেরানো খুব একটা সহজ নয়। উপায় না দেখে খুব মিষ্টি ব্যবহার করলেন এবং হাতে একটা সাম্যবাদ পত্রিকা ধরে দিলেন। ইচ্ছা ছিলো নিজে থেকেই যখন ধরা দিয়েছে কুপোকাত করা জরুরী। কিন্তু সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আমার পূর্ণ জ্ঞান ছিলো না। এর উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, কোন কোন ক্ষেত্রে সংঘাত আছে ইত্যাদি। আলহামদুলিল্লাহ স্টাডি শুরু করে দিয়েছি। নিয়মিত চলবে এই সিরিজ। ইনশাআল্লাহ। তবে আমার যা মনে হলো তারা সমাজসেবা সমাজসেবা বলে মুখে ফেনা তুলে নিজেরা তো বিপদগামী হচ্ছেই পাশাপাশি তরুণ উঠতি বয়সের ছেলেদেরকে সমাজসেবার নানা মুখরোচক বাণী শুনিয়ে বিপদগামী করছে। মূলত সেইসব উঠতি বয়সের তরুণদের জন্যই এই উৎসর্গ করছি আমি। প্রকৃত মানবতা ও সমাজসেবার দৃষ্টান্ত ইতিহাসে বিরল রূপ যিনি দেখিয়েছেন সে তো তোমার আমার প্রিয় নবী ও পথপ্রদর্শক মুহাম্মাদ সা. তাই ইসলামের ছায়াতলে এসো বন্ধু।
সোশ্যালিজম ও কমিউনিজম এর সংজ্ঞাঃ
‘সোশ্যালিজম’(Socialism) তথা ‘সমাজতন্ত্র’ বা ‘সমাজবাদ’ বলতে বোঝায় সমাজে সকলের অধিকার সমান হওয়ার মতবাদ। কেউ কেউ ‘সোশ্যালিজম’ তথা ‘সমাজতন্ত্র’এর পরিচয় এভাবে দিয়েছেন যে, সমাজভূক্ত সকল ব্যক্তির হীতার্থে ভূমি ও কল-কারখানা প্রভৃতি উৎপাদনের সহায়ক সমস্ত কিছুই রাষ্ট্রের হস্তে ন্যস্ত হওয়া উচিৎ-এই মতবাদ। আর ‘কমিউনিজম’(Communism) তথা ‘সাম্যবাদ’ হলো সোশ্যালিজম বা সমাজতন্ত্র-এর চরম রূপ।
সোশ্যালিজম ও কমিউনিজম এর পার্থক্যঃ
এক.
সোশ্যালিজম ও কমিউনিজম উভয়েরই লক্ষ্য হল একটি স্বপ্নরাজ্য বা ইউটোপিয়া (Upotia) স্থাপন। অর্থাৎ, দেশের যাবতীয় ধন-সম্পত্তি থেকে ব্যক্তিগত অধিকার তুলে দিয়ে সমবায়করণ। এভাবে এমন একটি দেশ গড়ে উঠবে, যেখানে সকলের অধিকার সমান থাকবে। এটাকেই তারা বলে থাকে স্বপ্নরাজ্য ইউটোপিয়া (Upotia)।
তবে উভয়ের লক্ষ্য এক হলেও এই লক্ষ্যে পৌঁছার উপায় ও পদ্ধতি উভয়ের নিকট ভিন্ন ভিন্ন। সোশ্যালিজম বা সমাজতন্ত্র চায় শান্ত উপায়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে এই লক্ষ্যে পৌঁছতে, আর কমিউনিজম বা সাম্যবাদ চায় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এই উদ্দেশ্য সাধন করতে। এ হিসেবে বলা যায় কমিউনিজম হল সোশ্যালিজমে পৌঁছার মাধ্যম। আবার বলা যায় কমিউনিজম হল সোশ্যালিজম এর চরম রূপ।
দুই.
কমিউনিজম এমন একটি রাষ্ট্র বা সমাজ গড়ে তুলতে চায়, যেখানে কোন শাসক থাকবে না। নিজেরাই নিজেদের দেশের জন্য কাজ করবে এবং এভাবে দেশবাসীদের দ্বারা পর্যাপ্ত পরিমাণ সম্পদ বৃদ্ধি করে রাখা হবে, তারপর সেই সম্পদ হতে প্রয়োজনমত যার যা খুশী তা সে নিয়ে নিতে পারবে। তাই এ অর্থে কমিউনিজম পূঁজিবাদের সম্পূর্ণ বিরোধী। পক্ষান্তরে সোশ্যালিজম বা সমাজতন্ত্র বলেঃ রাষ্ট্র থেকে সকলকেই দেয়া হবে, তবে যে যত চায়, তাকে ততই দেয়া হবে না বরং যে যেমন কাজ করবে, তাকে তেমনই দেয়া হবে।
তবে সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ তথা সোশ্যালিজম ও কমিউনিজম-এর মধ্যে উপরোক্ত পার্থক্যসমূহ থাকলেও সমাজতন্ত্র (Socialism) ও সাম্যবাদ (Communism) শব্দ দুটি প্রায়শই সমার্থবোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দেশে দেশে সমাজতন্ত্রী যে সব দল রয়েছে তারা মূলত বিপ্লবের মাধ্যমেই তাদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ ক্ষেত্রে ‘সমাজতন্ত্র’ কথাটাকে তারা ‘সাম্যবাদ’ অর্থে ব্যবহার করছে।
সামনে আরো আসছেঃ
সামজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট
সোশ্যালিজম ও কমিউনিজম এর প্রতিষ্ঠাতা
বিভিন্ন দেশে সমাজতন্ত্রের বিস্তার
কমিউনিজম দর্শনের সারকথা
কমিউনিজম ও ইসলামের মধ্যে বিরোধ কোথায়?
সমাজতন্ত্র ও ইসলাম, বিরোধ নাকি সমন্বয়?
বাস্তবতার আলোকে সমাজতন্ত্র
ধন-বৈষম্য কথা ধনী গরীবের ভেদাভেদ তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে কমিউনিজমের ব্যর্থতা
পূঁজিবাদের উচ্ছেদ সাধনে কমিউনিজমের ব্যর্থতা
ফেসবুক পেইজে লাইক দিতে ভুলবেন না।
লাইক দিন এখানে
বিষয়: বিবিধ
৮০৫৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন