পেশোয়ার, ফেইসবুকীয় মুজাহিদ উর্ফ কম্বলিস্ট !!!
লিখেছেন লিখেছেন ফারাসাত আলী খান ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৩:০৬:০৫ দুপুর
প্রতি মাসেই কুরআন ক্লাশ কে ঘিরে আমাদের মাঝে তুমুল এক যুদ্ধ লেগে যেত। এই যুদ্ধ হল, কে কার চেয়ে বেশী উত্তমরূপে আয়াতের ব্যাক্ষ্যা দিতে পারে। এ মাসের কুরআন ক্লাশের বিষয়বস্তুবস্তু ছিল সূরা আল আনকাবূত এর ১ম হতে ৭ম আয়াত। কালক্ষেপণ না করেই লেগে পড়লাম অনুসন্ধানে। কিছুদূর এগুতেই তৃতীয় আয়াতে এসে আটকে গেলাম। পড়লাম এক মহা মুসিবতে। কিছুতেই মাথা আর কাজ করছেনা। এ সূরার তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করবেন, কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী। কিন্তু প্রশ্ন হল, আল্লাহ্ তো মহাজ্ঞানী, তিনি তো সবকিছুই জানেন, আমাদের ভেতরে অথবা বাহিরে এমন কিছুই নেই যেটা তার দৃষ্টির অগচরে। তাহলে আল্লাহর কী প্রয়োজন পরীক্ষার মাধ্যমে এটা যাচাই করার যে, কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী?
কোনভাবেই যখন এর উত্তর মেলাতে পারছিলামনা ঠিক তখনই আমাদের ফেবু কম্বলিস্ট ভাইদের এক পোস্ট নজরে আসলো। সেখানে উনারা সম্প্রতি পেশোয়ারে ঘটে যাওয়া হত্যাযজ্ঞকে ইসলামী শরীয়াত সম্মত বলে প্রমান(!) করেছেন। তারা যুক্তি দেখিয়েছেন, "১৮ এবং ২৫ বছর বয়সের যেই যুবক(!) ছেলেদের হত্যা করা হয়েছে সেই যুবক ছেলেরাই ভবিষ্যতে তাদের পিতার পদে আসীন হয়ে, পাকিস্তানে সীমান্তবর্তী অসহায় গোত্র (FATA এলাকার) এবং সারা দেশজুড়ে পারিচালিত সেনা অভিযানে অংশ নিতো। এজন্যই তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে"। মানে বিষয়টি কিছুটা কোন এক বাংলা সিনেমার ডায়লগের মতো, "তুই আমার দুশমন তাই তোর পোলাও বড় অইলে আমার দুশমন হবে, হেরজন্যি তোর পোলারে খতম কইরা একটা ভবিষ্যৎ দুশমনরে কমায়া দিলাম"। মাথা মোটা কম্বলিরা কবে যে বুঝবে, বাংলা সিনেমা দেইখা ইসলামী আন্দোলন করন যায়না।
ঠিক তখনই মাথায় আসল, কোনো ব্যাক্তির যদি অন্যায় ভাবে কাওকে হত্যা করার যোগ্যতা থাকে শুধুমাত্র একারণেই কি তাকে হত্যার অপরাধে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে? কখনোই না। যতক্ষণ তার যোগ্যতার কার্যত প্রকাশ না হয় ততোক্ষণ ইনসাফ ও ন্যায়নীতির দৃষ্টিতে সে কোনো শাস্তির যোগ্য হতে পারে না। তাই আল্লাহ তার অদৃশ্য জ্ঞানের ভিত্তিতে একজনকে শাস্তি দেবেন, এটা তার ইনসাফের পরিপন্থী। কে মুমিন আর কে ফাসেক এটা আল্লাহ ভালো করেই জানেন কিন্তু যতক্ষণনা তাদের পরীক্ষায় অবতীর্ণ করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাদের পুরষ্কার অথবা শাস্তি কোনোটাই দেবেননা। যেমনঃ অমুক ব্যাক্তির মধ্যে চুরির প্রবণতা আছে, সে চুরি করবে অথবা করতে যাচ্ছে, এধরণের জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহ বিচার করেননা। বরং সে চুরি করেছে-- এ জ্ঞানের ভিত্তিতে তিনি বিচার করেন। সয়ং আল্লাহ যেখানে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার পরেও তাদের আগাম শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত থাকে সেখানে আমাদের দেশীয় কম্বলিস্ট ভাইয়েরা নিজেদেরকে আল্লাহর উর্ধে মনে করে (নাউযুবিল্লাহ) তাদের আগাম শাস্তি দেওয়ার পক্ষে কথা বলেন। (বিঃদ্রঃ উদাহরণসমূহ তাফহিম থেকে চুরি করা হয়েছে।)
বিষয়: আন্তর্জাতিক
৯৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন