বাংলাদেশ ছাত্রলীগ - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন লিখেছেন একনিষ্ঠ এক্টিভিষ্ট ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৬:০১:২৬ সন্ধ্যা

কিভাবে আমাদের দেশের ছাত্র রাজনীতি চলছে তার একটু হালচাল বর্ণনা করব।

কেউ যদি আপনাকে প্রশ্ন করে যে আমাদের দেশে বর্তমানে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ছাত্র রাজনৈতিক দল কোনটি?নিশ্চয় বলবেন,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ।এরপর ছাত্রদল,শিবির আরো অনেক । শুরু করা যাক ছাত্রলীগ দিয়ে-

আমাদের দেশের সকল ছাত্র রাজনৈতিক দল যেই স্থানটিতে তাদের সর্বোচ্চ শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় তা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।এরপর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়,জেলা শহর,উপজেলা ইত্যাদি।সেই হিসেবে ছাত্রলীগের কোন অংশে কমতি নেই।আর বাংলাদেশের অতীত ইতিহা্সের দিকে তাকালে সকল রাজনৈতিক আন্দোলনের সফলতার পেছনে এই সংঘটনটির ভূমিকা অনেক।কিন্তু কি অবস্থা বর্তমানে এই দলটির-

বেশীকিছু কিছু ব্যাখ্যা করার দরকার নেই ।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে দলটি-

১.জনশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তারা যে নিয়ম ব্যবহার করে তা হল,হলে ১ম বর্ষের ছাত্ররা আসলে তাদেরকে অবশ্যই ছাত্রলীগ করতে হবে ।নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচীতে যেতে হবে,অন্যথায় সন্দেহ হলে "গেষ্টরুম" অথবা শিবির-ছাত্রদল বলে, মেরে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেওয়া হবে।এছাড়া তাদের, আদর্শ প্রচার করে জনশক্তি বৃদ্ধির ইতিহাস নেই বললেই চলে ।

২.১ম বর্ষের ছাত্রদের মত অন্যান্য বর্ষের ছাত্রদের একি রকম অবস্থা,তবে নেতার কাছের লোক হলে বা পরিচিত হলে প্রোগ্রামে কিছু ছাড় পাওয়া যায়।হলে পছন্দমত থাকা যায় ।

৩.কর্মসূচী চলাকালীন সময়ে কোন ছাত্রের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস থাকলেও কর্মসূচীতে যোগদান বাধ্যতামূলক ।অন্যথায় "গেষ্টরুম" ।

৪.নেতা বা বড় ভাইকে "সম্মান প্রদর্শনে" বা আনুগত্যে কোন সমস্যা হলে "গেষ্টরুম" ।

৫.কোন নেতা বা বড় ভাইয়ের সাথে ভুলবশত যদি কোন বেয়াদবি বা কোন অন্যায় হয় তাহলে "গেষ্টরুম" ।

৬.যে কর্মী নেতার খুব কাছে থাকতে পারবে,আদেশের চেয়ে বেশি আনুগত্য করবে, নানা ভাবে নেতার নানা চাহিদা পূরণ করতে পারবে সে পাবে ভাল মানের পোষ্ট ।

৭.আর্থিক সঙ্কট তাদের কোন সময় হয় না,বরং টাকা রোজগার করা যায় বিপুল পরিমাণ ।সেইটা হয় চাদাবাজি,ছিনতাই,চুরি,হাইজ্যাক ইত্যাদির মাধ্যমে ।এইসব টাকা নিয়ে মারামারি করে অনেকে খুনও হয়েছে ।

৮.নেতার আদেশ পালন করার জন্য তাকে যেকোন ধরনের "অনৈতিক কাজও" করা লাগে ।না বলার কোন সুযোগ নেই ।কেউ না বললে "গেষ্টরুম" ।

৯.অবসর সময় পার করে টিএসসি-তে আড্ডা মেরে,নেশা করে,মেয়েদের সাথে ফষ্টিনষ্টি করে ইত্যাদি ।

১০.নিজেদের মধ্যে মারামারি-কাটাকাটি,খুনাখুনি, সেতো নিত্যদিনের ব্যাপার ।

................................................................................................

আর কত লিখব,কেনো যেনো এদের সম্পর্কে লিখতে গেলে বদনাম ছাড়া অন্যকিছু আসে না । বদনাম ছাড়া আর কোন সত্য নেই,শুধু এদের জন্য ।

সূত্রঃ- দেশের সকল জাতিয় দৈনিক ও আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ।

"সম্মান প্রদর্শন"-একটি হলের নিয়ম বলি,তা হল জিয়া হল । বড় ভাইকে দেখলে সালাম দিতে হবে,তবে একটু ভিন্ন ভাবে ।সালামের সময় সামনে না দাঁড়িয়ে পাশে দাড়াতে হবে, বামহাত পেছনে,ডানহাত দিয়ে মুসাফা করার সময় জোরে চাপ দিয়ে ধরা যাবে না,ঝাকি দেয়া যাবে না ।ভাই গাড়িতে বা বাইকে থাকলে সালাম দেওয়া যাবে না ।আরো কত কয়েদি স্টাইলে সম্মান প্রদর্শন করা লাগে জানলে আজব বনে যবেন ।

"অনৈতিক কাজ"-চাঁদাবাজি করা,কাউকে উঠিয়ে নেওয়া, মারধর করা,পেট্রোল বোমা মারা,কাউকে খুন পর্যন্ত করা হয়।মেয়েরা তাদের পোষ্ট পাওয়ার জন্য নিজেদের বিলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করে ।

"গেষ্টরুম"-সে এক ভয়াবহ জায়গার নাম ।এখানে ছাত্রলীগের দলীয় নিয়ম কানুন শিখানো হয় রাত ১২ টা পর্যন্ত ।কোন ছেলেকে সন্দেহ হলে তাকে সেখানে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রিমান্ডস্টাইলে ।নেতাকে সালাম না দেওয়া বা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরন না করা,প্রোগ্রামে না যাওয়া,আনুগত্য লঙ্ঘন ইত্যাদি ছোট-বড় নানা অপরাধে এখানে এনে শাস্তি দেওয়া হয় ।শাস্তির মধ্যে আছে চর-থাপ্পর,লাথি,লাঠির বারি,চাপাতির কোপ আরো অনেক ।আর কেউ যদি গেস্টরুমের নির্মমতার শিকার হওয়ার পরও তাদের কোন নিয়ম অমান্য করে তাহলে সর্বশেষ তাকে শিবির পরিচয়ে খুন অথবা পুলিশে হাতে সোপর্দ করা হয় ।

আজ একটাতে থাকলাম,পরে বাকিদের নিয়ে আসব ।

বিষয়: বিবিধ

১৪২৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File