জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদের কিছু ধারা ও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী (শেষ অংশ)
লিখেছেন লিখেছেন মানবাধিকার চা্ই ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১২:২২:২৫ দুপুর
ধারা- ৯ কাউকে খেয়াল খুশিমত গ্রেফতার আটক ও নির্বাসন করা যাবে না এবং দোষী প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত অপরাধি বলা যাবে না ।
রাসূল স: বলেছেন : যতদূর সম্ভব নাগরিক কে শাস্তি থেকে অব্যাহতি দাও, সুযোগ থাকলে তাকে ছেড়ে দাও । অপরাধীকে ভুল বশত ক্ষমা করে দেওয়া ভুল বশত শাস্তি দেওয়ার চেয়ে উত্তম । তিরমিযী
বাচানোর কোন পথ পাওয়া গেলে মানুষকে শাস্তি থেকে মুক্তি দাও । ইবনে মাজা
জুহায়না গোত্রের শাখা গামেদ গোত্রের একটি স্ত্রীলোক মহানবী স: এর নিকট উপস্থিত হয়ে চার বার যেনার স্বীকারোক্তি করল এবং জানাল যে, সে এর ফলে গর্ভবতী হয়েছে । প্রথম বার শুনে রাসুল স: বললেন ফিরে যাও এবং আল্লাহর নিকট তওবা কর, ক্ষমা প্রার্থনা কর । কিন্তু সে বলল হে আল্লাহর রসুল ! আপনি কি আমাকেও মায়েযের ন্যায় ফিরিয়ে দিতে চান ? আমি তো যেনার কারণে গর্ভবতী হয়েছি । আচ্ছা তুমি সন্তান প্রসবের পর এসো । সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে শিশু সহ তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, এখন আমাকে পাক পবিত্র করুন । তিনি বললেন ফিরে যাও, শিশু দুধ ছাড়ার পর এসো । দুধ ছাড়ার পর সে শিশু সহ আবার এলো এবং সাথে এক টুকরা রুটিও আনলো----------মহানবী স: শিশুর লালন পালনের ভার এক ব্যক্তির উপর অর্পন করলেন এবং তাকে রজম করার নির্দেশ দিলেন ।
একবার তিনি মসজিদে নববীতে রাসুল স: ভাষন দিচ্ছিলেন, ভাষন চলাকালে এক ব্যক্তি দাড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল আমার এক প্রতিবেশিকে কোন অপরাধে বন্দী কারা হয়েছে ? তিনি কোন উত্তর দিলেন না । সে ব্যক্তি দাড়িয়ে একই প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করল । তিনি ভাষন দিতেই থাকেন । এবারে ও তিনি লোকটির প্রশ্নের কোন উত্তর দিলেন না । তৃতীয়বার লোকটি দাড়িয়ে তার প্রশ্নটি পুনর্ব্যক্ত করল । তিনি নির্দেশ দিলেন তার প্রতিবেশিকে ছেড়ে দাও । আবু দাউদ
নীরব থাকার কারণ পুলিশ অফিসার থেকে কোন অপরাধ সম্পর্কে কোন উত্তর আসে কিনা ।
আব্বাসী আমলের প্রধান বিচারপ্রতি আবু ইউসুফ আটকাদেশ সম্পকে বলেন : কেউ কোন লোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই তার ভিত্তিতে তাকে জেল হাজতে চালান দেওয়া জাযেজও নয় এবং জাযেজ হওয়ার কোন অবকাশ নেই ।
১৮-৩০ ধারা
--চিন্তা, বিবেক , ধর্মের ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা
--সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার
খাদ্য বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিত্সা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিনোদনের স্বাধিনতা
দীনের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই । সত্য পথ ভ্রান্ত পথ হতে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে । বাকারা ২৫৬
তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করলে পৃথিবীতে যারা আছে তারা সকলেই ঈমান আনত, তবে কি তুমি মুমিন হওয়ার জন্য মানুষের উপর বল প্রয়োগ করবে । ইউনুস-৯৯
আল্লাহ ছাড়া তারা যাদের পূজা করে তাদের গালমন্দ কর না । আনআম-১০৮
ওমর রা: বায়তুল মুকাদ্দাসের গির্জার এক কোনে নামাজ পড়েন । অতপর তিনি ভাবলেন মুসলমানরা আমার নামাযকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করে খৃষ্ঠানদের বহিস্কার করতে পারে । তাই তিনি একটা বিশেষ প্রতিজ্ঞালিপি লিখে দূত মারফত পাঠিয়ে দেন । সেখানে লেখা ছিল যে এক সময়ে শুধুমাত্র একজন মুসলমান গির্জায় প্রবেশ করতে পারবে, তার বেশি নয় ।
আলী রা: খারিজিদের উদ্দেশ্যে যে ফরমান পাঠিয়েছিলেন তাতে লেখা ছিল: তোমরা স্বাধীন । যেথায় ইচ্ছা বসবাস করতে পার । অবশ্য তোমাদের ও আমাদের মাঝে এই প্রতিশ্রুতি থাকবে যে, অবৈধভাবে কারো রক্ত প্রবাহিত করবে না , অরাজকতা ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করবে না এবং কারো উপর জুলুম ও নির্যাতন করবে না ।
যার কোন অভিভাবক নেই, আল্লাহ ও তার রাসুল তার অভিভাবক । তিরমিযী
যে মুসলমান ব্যক্তি ঋন রেখে মৃত্যুবরন করেছে তা পরিশোধের দায়িত্ব আমার উপর এবং তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিক হবে তার ওয়ারিশগণ । বুখারী, মুসলীম
ওমর রা: এক ইহুদীকে ভিক্ষা করতে দেখে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন । প্রথমে তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে কিছু দান করেন, অতপর বায়তুল মালের কোষাধ্যক্ষকে ডেকে এনে তার এবং তার মত অন্যান্য অভাবীদের দৈনিক ভাতা নির্ধারনের নির্দেশ দেন এবং বলেন
আল্লাহর শপথ আমরা তাদের যৌবনকালে তাদের থেকে জিযিয়া আদায় করে ভোগ করব এবং তাদের বার্ধক্যে তাদেরকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেব এটা কখনও সুবিচার হতে পারে না ।
আমার লেখার মধ্যে নিজস্ব মতামতের চেয়ে তথ্য উপস্থাপনের উপর বেশি গুরুত্ত্ব দেওয়া হয়েছে । বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সবার সাথে সেটা বিনিময় করাই ছিল আমার এ লেখার উদ্দেশ্য । আশা করি কোন ভুল থাকলে নতুন হিসাবে ক্ষমা করবেন এবং কোন পরামর্শ থাকলে দিলে অনেক কৃতজ্ঞ থাকবো ।
বিষয়: বিবিধ
১১৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন