জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদের কিছু ধারা ও ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গ (২য় অংশ)
লিখেছেন লিখেছেন মানবাধিকার চা্ই ২৯ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:৪১:৫৬ বিকাল
ধারা-২ প্রতেক্যের জীবন ধারন, স্বাধীনতা ও ব্যক্তি নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে ।
নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্নক কার্যকলাপের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতিরেকে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানব গোষ্ঠীকে হত্যা করল, আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানব গোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল । মাইদা ৩২
দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা কর না । আমিই তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থা করি এবং তাদেরও । আনআম ১৫১
বিদায় হজ্জের ভাষণ- হে লোক সকল ! তোমাদের জান মাল ও ইজ্জত -আবরুর উপর হস্তক্ষেপ তোমাদের উপর হারাম করা হল । তোমাদের আজকের এই দিন , এই মাস এবং এই শহর যেমন পবিত্র ও সম্মানিত, অনুরুপ উপরোক্ত জিনিসগুলো সম্মানিত ও পবিত্র । সাবধান আমার পরে তোমরা পরস্পরের হত্যা করে কাফেরদের দলভুক্ত হয়ে যেও না। বুখারী -আবু দাউদ
কোন এক যুদ্ধে একটি স্ত্রীলোক নিহত হয় । রাসুল স: তার লাশ দেখে বলেন : আহ ! তোমরা এ কি কাজ করলে ? সে তো যোদ্ধাদের মধ্যে শামিল ছিল না । যাও সেনাপতি খালিদকে বলে দাও যে, নারী , শিশু ও দুর্বলদের হত্যা কর না ।
জুহায়না গোত্রের শাখা গামেদ গোত্রের একটি স্ত্রীলোক মহানবী স: এর নিকট উপস্থিত হয়ে চার বার যেনার স্বীকারোক্তি করল এবং জানাল যে, সে এর ফলে গর্ভবতী হয়েছে । প্রথম বার শুনে রাসুল স: বললেন ফিরে যাও এবং আল্লাহর নিকট তওবা কর, ক্ষমা প্রার্থনা কর । কিন্তু সে বলল হে আল্লাহর রসুল ! আপনি কি আমাকেও মায়েযের ন্যায় ফিরিয়ে দিতে চান ? আমি তো যেনার কারণে গর্ভবতী হয়েছি । আচ্ছা তুমি সন্তান প্রসবের পর এসো । সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে শিশু সহ তার নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, এখন আমাকে পাক পবিত্র করুন । তিনি বললেন ফিরে যাও, শিশু দুধ ছাড়ার পর এসো । দুধ ছাড়ার পর সে শিশু সহ আবার এলো এবং সাথে এক টুকরা রুটিও আনলো----------মহানবী স: শিশুর লালন পালনের ভার এক ব্যক্তির উপর অর্পন করলেন এবং তাকে রজম করার নির্দেশ দিলেন ।
ধারা-৭ আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান
তোমরা যখন মানুষের মাঝে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়নতার সাথে বিচার করবে । নিসা-৫৮
হে ঈমানদারগণ আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানে তোমরা অবিচল থাকবে, কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের যেন কখোনো সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে । তোমরা ন্যায়পরায়ণতার অবলম্বন করবে । এটা তাকওয়ার নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় করবে । নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত । মাইদা-৮
অভিজাত কুরাইশ বংশের ফাতিমা নাম্নী এক নারী চুরি করে ধরা পড়ল । হযরত উসামা রা: তাকে মাফ করে দেওয়ার সুপারিশ করলে মহানবী স: কঠোর ভাষায় বলেন:
হে উসামা ! আল্লাহর নির্ধারিত শাস্তির ব্যাপারে সুপারিশ করে অনধিকার চর্চা করছ ? সাবধান ! আর কখনও এরুপ ভূল করবে না । অত:পর তিনি হযরত বিলাল রা: কে নির্দেশ দিলেন মসজিদে মুসলমানদের একত্র করতে । মুসলমানরা সমবেত হলে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন: তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিসমূহ এজন্যই ধ্বংস হয়েছে যে, তারা সাধারন লোকদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী শাস্তি কার্যকর করত, কিন্তু বিশিষ্ট লোকদের কোন শাস্তি দিত না । সেই মহান সত্তার শপথ যার মুঠোয় আমার জীবন ! যদি মুহাম্মদ এর কন্যা ফাতিমাও এরুপ করত তবে আমি তারও হাত কাটতাম । বুখারী ও মুসলীম
আলী রা: তার খেলাফতকালে লৌহবর্ম চুরির মামলায় ফরিয়াদি হিসাবে তিনি কাযী শুরায়াহ এ আদালতে উপস্থিত হন । আসামী ছিল একজন যিম্মি । কাজী হযরত আলী রা: কে সম্বোধন কবে বলেন হে আবু তুরাব আপনি প্রতিপক্ষের সামনা সামনি বসুন । কাযী সাহেব বুঝতে পারলেন যে এ কখাটি আলী রা: এর কাছে খারাপ লেগেছে । ওহে তুরাব সম্ববত: আমার কথা আপনার নিকট অপসন্দনীয় হয়েছে, অথচ ইসলামের আইন ও আদালতের সম্পর্কীয় সাম্যনীতির আবেদন হচ্ছে ফরিয়াদি ও আসামী একই সমতলে বসা । আলী রা: বললেন আমার প্রতিপক্ষের সমান স্তরে আমাকে উপবেশন করার নির্দেশ আমার কাছে অপ্রিয় মনে হয়নি, বরং আমার কাছে যা অপ্রিয় মনে হয়েছে তা এই যে, আপনি আমাকে উপনামে সম্বোধন করেছেন । এভাবে আমার প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় আমাকে সম্মান প্রদর্শন করেছেন । এটা তো আমার প্রতিপক্ষের
সাথে আপনি স্পষ্ট অন্যায় করলেন ।
সোনালী এই ইতিহাস কি আমরা আর কখনো ফিরে পাবো না !
বিষয়: বিবিধ
১১৪০ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন