সে'কি আসবে ফিরে - - - -? ( ধারাবাহিক উপন্যাসঃ পর্ব - দুই )
লিখেছেন লিখেছেন দ্বীপ জনতার ডাক ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ১১:৫৫:৫৯ রাত
দ্বিতীয়----পর্ব
নিলয়ঃ পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে চলছে দু'জন দু’জনার কঠিন প্রেম। আমি এখনো পড়া লেখা নিয়ে মহা ব্যস্ত। তসিবাও পড়া লেখা নিয়ে কিছুটা আছে ব্যস্ত। সবকিছু যেন নিয়ম করে চলছে দু'জনার মাঝে। একে অপরের মধ্যে বুঝা ফেরাটাও ছিল বেশ চমৎকার। ভালবাসার ডিঙ্গি নৌকা দিব্যি চলছে নিয়ম করে তার নিদিষ্ট গন্তব্যের দিকে। মাঝে মধ্যে ছোট খাটো কাল বৈশাখী ঝড় এসে কিছুটা বিপাকে ফেলে দিলেও দক্ষ নাবিকের মতো হাল ধরেছি দুজন শক্ত হাতে । কয়েক দিন পরপর তসিবা তাড়া করতো কিছু একটা করার জন্য।
তসিবাঃ ফ্যামিলি থেকে চাপাচাপি করছে বিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি কিছু দিন সময় নিয়েছি বিদায় এখনো অপেক্ষা করছে। এখন মনে হয় আর সময় দিবেনা কিছু একটা তাড়াতাড়ি করতে না পারলে বড় ধরনের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
নিলয়ঃ আমিও কি কম চেষ্টা করছি? কিছু একটা করার জন্য। কিন্তু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। এই দিকে মাষ্টাসের পরীক্ষাটা হবে হবে বলে হচ্ছে না বহু দিন ধরে। সেশন জটে কাটকা পড়ে আছি দুই থেকে আড়াই বছর। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালের পরিচালক কমিটি সব কয়টা শালারা মনে হয় গাঁজা খোর । না হয় তিন বছরের ডিগ্রি পাঁচ বছর দুই বছরের মাষ্টাস ডিগ্রি তিন থেকে সারে তিন বছর লাগে কেন? এদিকে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ের ভবিষ্যত যে অন্ধকার দিকে যাচ্ছে সেদিকে যেন তাদের কোন খেলি নেই। আমার মতো অপেক্ষা করতে করতে হয়তো কারো কারো প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, কারো চাকরি বয়স প্রায় শেষ পর্যায়ে । তারা যেন এই গুলো দেখে না দেখার বান করে দিব্যি গাঁজার ঘোরে আছে । কেউ কেউ সময় মতো চাকরি না পেয়ে নিজেকে নিঃশ্বাস করে দিচ্ছে। যাদের মামা খালুর জোর আছে প্রতিযোগীতা ছাড়া চাকরী হয়ে যাচ্ছে। কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মামা খালু, বাপ চাচা নাইতো আমাদের মতো অসহায় দের ভালো কোন চাকরিও নাই।
তসিবাঃ সবিই ঠিক আছে কিন্তু এই সব কথাতো তারা বোঝবেনা।
নিলয়ঃ পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে দুইটা তিনটা টিউশনি করে কোন মতে নিজের খরচের চাকাটা সচল রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে করে ফ্যামিলিতে বাড়তি কোন চাপ না পড়ে। ফ্যামিলিতে তোমার আমার ব্যাপারটা প্রস্তাব দেওয়ার পর যেন ভালো ভাবে মেনে নেয় সেই আশায়। পাশাপাশি কোচিং সেন্টার করে কিছু টাকা ইনভেস্ট করেও লোকসান গুনতে হল। কিছুতে যেন কিছু হচ্ছে না। ভাগ্যের চাকাটা একটু অচল করার জন্যে আরো কিছুদিন পর মোবাইল কম্পিউটার দোকান দিয়ে ও বড় ধরনের ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয় বিধির বাম কিছুতে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হচ্ছে না।
তসিবাঃ তাহলে আমরা একটা কাজ করি গোপনে কোট ম্যারেজটা করে রাখি। যখন বেশি চাপাচাপি করবে তখন বলে দিবো আমরা বিয়ে করে ফেলেছি।
নিলয়ঃ না-- না-- বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে কিছু করা যাবে না । আমার বিশ্বাস তারা আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিবে। আর কিছু দিন যাক আমার বাবা মাকে দিয়ে তোমাদের বাড়িতে প্রস্তাব পাঠাবো।
তসিবাঃ দেখিও যেন সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবে হয় । আমি কিন্তু তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না । আমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে তুমি আছো হৃদয় জুড়ে। আমার আত্মা তোমার আত্মার সাথে মিছে গেছে। তুমি বিহীন পৃথিবীতে বেঁচে থাকা নরকীয় সুখ আমি চাই না। প্রয়োজনে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো তবুও তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।
নিলয়ঃ এতোটা দূর চিন্তা করতেছে কেন? দেখবে সময় মতো সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলবো।
চলবে - - - - -
বিষয়: সাহিত্য
১১৩৮ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখা সহপাঠী কিংবা বন্ধু বান্ধবীদের
কাছে ভালো লাগে বা তারা প্রশংসা করে তখন
লেখকের আরও ভালো কিছুর লেখার
অনুপ্রেরণা পাই। ধন্যবাদ@
মাহবুবা সুলতানা লায়লা
মন্তব্য করতে লগইন করুন