হারকিউলিকস্ থেমে গেলেন কেন? গণধর্ষণ, নারীর প্রতি যৌন নির্যাতন বা বলাৎকার ঠেকাবে কে ??

লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ০৭:১৭:৪১ সকাল



“রাত তখন সারে দশটা । ফোনের রিসিভার তুলতেই মধ্যবয়সি এক নারীর কণ্ঠ, আমাকে কিছু বলার সুজুগ না দিয়ে এক নাগারে বলে গেলেন অনেক গুলো অভিযোগ । ভাষার অলংকারের কারনে খুব সহযে এলাকা নির্বাচন করা যায় । যষোর ঝিনাইদহ অঞ্চলের হবেন ।

মাস খানেক আগে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে প্রকাশ্যে , নির্যাতকরা এলাকার প্রভাবশালী এবং রুলিং পার্টির ছত্রছায়ায় ঘোরে , তার কোনই অপরাধ ছিল না, অপরাধ এটাই সে সাধারণ মানুষ । তার বলার কোন যায়গা নেই তাই ফোন করেছে কিন্তু সেখানেও সে প্রতারিত । তাকে কথা দিয়ে কথা রাখা হয় না । আরো অনেক গুলো কথা বললেন , বললেন “আমাদের কি মনে করেন ? আমরা কিছুই বুঝিনা ?? আমরা সব বুঝি”

আসলেই তাই, এই সাধারণ মানুষরা সব বুঝেন । আমাদের উপর তলার মানুষজন এই সাধারণদের মুর্খমনে করেন । পাকিস্তানিরাও বাঙ্গালীদের মুর্খ মনে করতো চাষাভুষা ভাবতো । কিন্তু দেখুন না ইতিহাস কত নির্মম সত্য । সেই চাষাভুষারাই পৃথিবীর ইতিহাসের সেরা বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে আসছিল তৎকালীন অন্যতম পরাশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ।

আজকে সমাজে যে নৈতিক অবক্ষয় , চারপাশে যে ভাবে নারী শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার প্রতিনিয়ত তা দেখার কেউ নেই । যুগের পরে যুগ ফাহিমা, সিমি, সুমি, মহিমা, নুসরাত, তনুরা একের পরে এক নিজের জীবন শেষ করে দিচ্ছে লালসার শিকার হয়ে । কেউ তাদের রক্ষা করতে আসেনি । সমাজের বিচার ব্যবস্থা এমন এক উৎকট উদ্ভট ফাঁকফোঁকর যার মধ্যে দিয়ে যে কোন অপরাধী খুব সহযেই পার পেয়ে যেতে পারে । প্রতিনিয়ত তারা পার পাচ্ছে ।

দেখুন না রেন্ট্রি হোটেলে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে আর তার বন্ধুদের দ্বারা রাতভর ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়ে এখন আর বিচার চান না ।

ধর্ষণের পরে ধর্ষকরা তাদের ন্যাড়া করে দেয় । গায়ে কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে মারে , গাড়িতে ধর্ষনের পরে চলন্ত বাস থেকে ফেলে পিষে মেরেও শেষ করে দেয় । স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে রাতভর ধর্ষণ করে, সন্তানের সামনে মাকে ভাইয়ের সামনে বোনকে গণধর্ষণ করা হয় । পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলেও এখন মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয় । জায়ানবাদী রাষ্ট্রগুলোর সৈনিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের অসহায় নারীদের ধর্ষণকে তাদের যুদ্ধক্ষেত্রের একটা অস্ত্র প্রয়োগ হিসেবে ধরে নেয় । কিন্তু সমাজে যে ভাবে পানথেকে চুনখসলেও অথবা চুন খসার প্রয়োজন হয় না । শুধু মাত্র লালসা চরিতার্থ করার জন্যও এখন ধর্ষণ নির্যাতন নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা । কতটুকু শাস্তি হয় তাদের ? দেখবেন এই অপরাধীদের সমাজ এবং রাষ্ট্রের অনেকেই সহযোগীতা করে । সর্বশেষ ঘটনার নুসরাত জাহান রাফির বিষয়টাই দেখেন না । অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজকে বাঁচাতে যারা সবধরনের সহযোগীতা করেছে তার হয়ে আইনি এবং মাঠে লড়েছে তারা সবাই প্রভাবশালী এবং বর্তমান ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ।

বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি থেকে জাতীকে মুক্ত করতে যখন হারকিউলিকস্ আসলো আসার আলো নিয়ে তখন দেখা গেল সেই বাংলাদেশি হারকিউলিকস্ গ্রীক দেবীর হারকিউলিকস্ এর মত না ।

এই হারকিউলিকস বাংলাদেশী ধর্ষকদের মতই একটা পক্ষপাতি দলকানা উদ্দ্যশ্য চরিতার্থ করার জন্য তার পরিচয় বের করে দিল ।

অথচ যখন ধর্ষকদের মৃতদেহের গলায় হারকিউলিক্স এর নাম দেখার পরে অনেকেউ আশার আলো দেখছিলেন । বিচারহীনতার এই দেশে যখন আইনের ফাঁকফোঁকর দিয়ে ধর্ষকরা পার পেয়ে যাওয়ার খুশিতে ছিলেন তখন হারকিউলিক্স তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছিল ।

যে সমাজে অবিবাহীত ধর্ষকদের শাস্তি ছিল প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত আর বিবাহীত ধর্ষকদের শাস্তি ছিল প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপে হত্যা সে সমাজে ধর্ষণ নেমে এসেছিল শুণ্যের কোঠায় ।

কিন্তু বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা এমন এক আইন করেদিয়েছে যে শুধু অপরাধীদের জয়জয়কার । যার জন্য সমাজ এবং বিশ্বে অপরাধ এখন এমন পর্যায় গিয়ে ঠেকেছে যে শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করে নিজবাবা, ছেলের বউকে ধর্ষণ করে শশুর ! বোনকে ধর্ষণ করে ভাই । ভাগ্নিকে ধর্ষণ করে আপন মামা । বৃদ্ধ নানার হাতেও নিরাপদ থাকেনা ছোট্ট নাতনী । বাবার মত শ্রদ্ধাশীল শিক্ষকের হাতে যৌন নিগ্রহ হয় ছাত্রী । ধর্মীর শিক্ষাক্ষেত্র গুলোও নিরাপদ না । সেখানে বলাৎকারের ঘটনা এখন হরহামেশাই ।

আমাদের ছোট বেলায় সমাজে অপরাধ কম ছিল । করণ তখন কালপ্রিটদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিত রাস্তার পাশে থানায় দুহাত বেঁধে ঝুলিয়ে পেটানো হত । শতশত মানুষ সে পানিশমেন্ট দেখে নিজে অপরাধ করার চিন্তা ভুলে যেত ।

অপরধী যদি তার অপরাধ প্রকাশ্যে করতে পারে । অপরাধ করার সময়ে যদি তার লোকলজ্জার ভয় না থাকে তা হলে তাকে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে কেন গোপনে দিতে হবে ।

সকল অপরাধের শাস্তি দেয়া হোক সেই সমাজের মত যে সমাজে অপরাধ নেমে এসেছিল শুন্যের কোঠায়.............

হারকিউলিক্সরা গোপনে নয় ফিরে আসুক স্বরুপে প্রকাশ্যে

বিষয়: বিবিধ

৯৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File