“শিবিরের ভিপি মানি না, মানবো না” কত শিবির ঢাবিতে ??
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ১২ মার্চ, ২০১৯, ০৫:৩৭:০০ বিকাল
বহুল আলোচিত সমালোচিত নানা নাটক আর বিতর্কের পরে সম্পন্ন হল বাংলাদেশের দ্বীতিয় সংসদ হিসেবে পরিচিত ডাকসু নির্বাচন । বছর দুই আগে থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন করে সারাদেশে ব্যাপক পরিচিত হয়ে ওঠা নুরুল হক নুরু অনেকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই নির্বাচিত হয়ে গেলেন ভিপি হিসেবে ।
কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই নুরুকে সহ কোটা আন্দোলনের সাথে জড়িত সকলকেই শিবিরের আন্দোলন বা শিবিরের পক্ষনিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের ষড়যন্ত্র এমন অভিযোগ আনা হয়েছে । সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনের দুই দিন আগে থেকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতার পেজে শিবিরের প্রচার সম্পাদকের নামে একটা প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে দেখা য়ায় যাতে নুরু রাশেদ ফারুক প্যানেল টোটালকেই শিবিরের প্যানেল হিসেবে দেখানো হয় ।
কত শিবির আছে ঢাবি তে ??
বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির প্রকাশ্যে কাজ করতে পারেনা তার মধ্যে ঢাবি এবং জাবি অন্যতম ।
১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্মনেয়া ছাত্র শিবির আশির দশকের শেষের দিকে দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে নিজেদের শক্তি জানান দিতে দখল করে নেয় পুরো ক্যাম্পাস । তার মধ্যে ব্যতিক্রম ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় । এমন কি জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয়েও তারা ব্যাপক শক্তি প্রদশর্ন করে টিকে থাকে । একটা পর্যায় তারা দেশের অনেকগুলো ক্যাম্পাস থেকেই নিশিদ্ধ হয় তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালও একটা । নিশিদ্ধ বলতে তারা আনুষ্ঠানিক কাজ করতে পারে না ।অন্য ছাত্রসংগঠনের বিরোধীতার কারনে । যার জন্য বিকল্প পথ বেছে নেয় তারা ।
নামে বেনামে নানান ধরনের সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে কাজ করা এই সংগঠনটি আজ থেকে বিশ বছর আগে কোটা সংস্কার নিয়ে সারা দেশে আলোরণ তোলে একবার । এবার যখন সেই কোটা নিয়ে আবার আন্দোলন শুরু হয় তখন এটাকেও শিবিরের সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বলেই ধরে নেয় অনেকে ।
নুরু ১১ হাজারের বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন । যখন সিনেট ভবনে এই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল তখন সেখানে ছাত্রলীগের প্যানেল ছাড়া আর কেউ মনেহয় ছিল না ।কারন বাকি সব গুলো প্যানেলই নির্বাচনের দিন দুপুর ১২ টায় একযোগে ভোট বর্জন করে । রাত পৌনে চার টায় ফল ঘোষণার প্রথম নামটা ঘোষণার সাথেই সাথেই প্রতিবাদে ফেটে পড়েন উপস্থিত নেতা কর্মীরা । স্লোগান ওঠে শিবিরের ভিপি মানিনা মানবো না । ভুয়া ভুয়া । ভিসির পুরো ঘোষণায় শুধু দুই বার ভুয়া ভুয়া শব্দ উচ্চারণ হয় । নুরুল হক নুরু এবং আকতার হোসেনের নামের বেলায় ।
ঘুরে ফিরে এখন একটা প্রশ্নই সবার মাথায় ক্যাম্পাসে কত শিবির আছে । আসলেই কি ভোট সঠিক হয়েছে নাকি ক্যাম্পাস শান্ত রাখতে ক্লাস বর্জনের যে ঘোষণা সব ছাত্র সংগঠন দিয়েছিল এটাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল বাম সংগঠন যে এক হয়ে নতুন কোন আন্দোলন গড়ে ওঠে কিনা । কারন এই ক্যাম্পাস থেকেই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে । যে ভাবে কোটা আন্দোলন এই আতুর ঘর থেকে শরু হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল যা ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয়েছিল সরকারকে ।
আর আসলেই দেশ সেরা এই ক্যাম্পাসে ঠিখ কি পরিমান শিবির আছে এমন একটা প্রশ্নর উত্তর ইউটিউবের কল্যাণে ঢাবির আইন অনুষদের ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী শিশির মোহাম্মাদ মনির কাছে এক ছাত্র প্রশ্ন করলে তিনি অনেকটা কৌশলে এর উত্তর দিয়েছিলেন । উত্তর টা ছিল এমন যে শিবিরের ঢাবির সব জনশক্তি একজায়গায় করলে তা টিএসসি থেকে দোয়েল চত্তর ছাড়িয়ে যাবে । আবার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য লেখক গোলাম মাওলা রনি জেল খানায় গিয়ে জামায়াতের যেসব নেতাদের সাথে ছিলেন তাদের থেকে জেনে এসে একটি টকশোতে বলেছিলেন জামায়াতের নেতারা তাকে বলেছেন শিবিরের ঢাবিতে কর্মির সংখ্যা ১ হাজার আর সাথী না কি সেটার সংখ্যা নাকি দশ হাজার ।
রনির হিসেব অনুযায়ী সংখ্যাটা হয় ১১ হাজার আবার নুরুল হক নুরুও ভোট পেয়েছে ১১ হাজার প্লাস । নুরু যে শিবিরের ভোটে নির্বাচিত হয়েছে তা এই হিসেব অনুযায়ী মিলে যায় । অভিযোগ যদি সত্যি হয় তা হলে প্রশ্ন আসেনা যারা নুরুকে ভিপি হিসেবে ভোট দিল তারা কি রাশেদ ফারুককে ভোট না দিয়ে ছাত্রলীগের রাব্বানী সাদ্দামকে ভোট দিয়েছে ?? হিসেব টা কেমন যেন এলোমেলো ।
ওদিকে নুরু দাবী করেছে ভোট সুষ্ঠ হলে তাদের পুর্ণ প্যানেল বিজয়ী হত । ভিসিকে চ্যালেঞ্জ করেছে সুষ্ঠ ভাবে ভোট দিলে যদি ছাত্রলীগের কেউ বিজয়ী হতে পারে তা হলে তার ভিপি পদ ছেড়ে দিবেন । তার এই কনফিডেন্সের ভিত্তি কোথায় কে বা কারা তাকে শত্তি যোগায় । তা ভেবে দেখবে কে । শিবির যদি নিজেরা সরাসরি না থেকেও িএভাবে সাধারণ ছাত্রদের ব্যানারে তাদের পছন্দের লোকেদে দিয়ে নির্বাচন করিয়ে বিজয়ী করে নিয়ে আসতে পারে তা হলে কোন টা ভাল প্রগতিশীলদের জন্য ??
আজ জামায়াত নিশীদ্ধের দাবী তোলা হচ্ছে তারাও যদি জামায়াত নাম বিলু্প্তি করে অন্য কোন নামে তাদের যত বদনাম আছে দল হিসেবে জামায়াতের তা মুছে দিয়ে নতুন নামে এসে যদি েএভাবে দেশের সবথেকে বড় দলে পরিণত হয়ে যায় তখন কি হবে । তারা যদি এরদোগানের মত বা গুলেন মুভমেন্টের মত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে তখন আদতে লাভের গুরটা হবে জামায়াতেরেই সেটা যেমন জামায়াত বুঝতেছেনা তেমনই যারা জামায়াত ধ্বংস করতে চায় তারাও হয়তো বুঝতেছেন।
নুরুরা সময়ে প্রয়োজনে ছাত্রদের ন্যায্যদাবী নিয়ে আন্দোলন করায় এখানে ছাত্রছাত্রদের মন জয় করে বিজয়ী হয়েছে কোন দলেন অনুকুল্যে নয় । আমার কাছে এমনটাই মনে হয় । এখান থেকে সরকারী দল বা জামায়াত বিএনপিও শিখতে পারে যে শুধু তারেক আর খালেদার জন্য হরতাল দিয়ে দেশের মানুষের ভোট আশা করবেন তা ঠিক না আবার জামায়াতের লোকরা দেশের জন্য কিছু না করে শুধু নেতাদের জন্য আন্দোলন করা হরতাল করলেই দেশের প্রধান দলে পরিনত হতে পারবেন না ।
ঢাবি থেকে শিক্ষানিন…………………..
বিষয়: বিবিধ
৭২৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন