"দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে সিঙ্গাপুর বানাতে চেয়েছি, রাষ্ট্রপতির উচিৎ আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া"
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৩:৪৯ সকাল
তোমরা কী ভেবেছ? আমি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবো? কেন ক্ষমা চাইবো? আমিতো কোনো অপরাধ করিনি! বরং এই বাংলাদেশকে আমি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বিশ্বের অন্যতম উন্নত দেশ সিঙ্গাপুর বানাতে চেয়েছি। অসং্খ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল গড়ে তুলেছি। বাংলাদেশে প্রথম আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল করেছি, যাতে এদেশের মধ্যবিত্তরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য ব্যর্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা না যায়। আমার ইবনে সিনা দেখে আজ অনেকেই বড় বড় হাসপাতাল বানিয়েছে। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই, কিন্তু আমিই অগ্রপথিক তা কিন্তু মানতে হবে। তাদের হাসপাতাল উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে হয়ত আমার ইবনেসিনাকে ছাড়িয়ে গেছে, কিন্তু সেবায় কি ইবনে সিনাকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে?
আমার নয়াদিগন্ত পত্রিকা দিগন্ত টেলিভিশন যেমনি জনপ্রিয় তেমনি পেয়েছে গ্রহণযোগ্যতা।
আমি কতোভাবেইনা এই বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে চেয়েছি...
আমার ইসলামি ব্যাংক যা কিনা ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম সোপান। সমাজ থেকে দারিদ্র ও বৈষম্য ঘুচাতে ইসলামি ব্যাংকের কত শত প্রজেক্ট ছিল, সেবাগ্রহীতাদের মাঝে ইসলামি অনুশাসন মেনে চলার তীব্র অনুভূতি জাগিয়ে তোলার নানাবিধ সামাজিক কর্মসূচি ছিল। আজ সে ব্যাংক সরকারের সবচেয়ে বড় ডোনার।
বিশ্বাস করুন এই ব্যাংকে যারা ব্যাংকিং ভালো বোঝে তাদের নয় বরং ইসলাম ভালো বোঝে এমন লোকদের অগ্রাধিকার দেয়া হতো। কত পরিক্ষিত ত্যাগী ভাইদের জড়ো করেছিলাম, বিবিএ এমবিএ বাধ্যতামূলক ছিল না, মাদ্রাসার কামেল পাশ, ইসলামিক স্টাডিজে মাস্টার্স পাশ ভাইদের নিয়োগ দিয়েছিলাম যাতে তারা ব্যাংক নয় ইসলামকে রক্ষা করে চলতে পারে। কিন্তু আফসোস! কী চেয়েছিলাম আর কী হলো! ব্যাংক ধংস হলে ব্যাংক আবার কেউ না কেউ গড়ে তুলবে, কিন্তু বিশ্বাস নষ্ট হলে? আজ ইসলামি ব্যাংক যদি অপরাধীদের হাতকে শক্তিশালী করে সরলমনা ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাসে আঘাত হানে ভেবে দেখেছ আগামিতে ইসলামের নামে করা প্রতিষ্ঠানগুলো কত বড় হুমকির মুখে পড়বে। মানুষ ইসলামের নাম শুনলেই প্রতারণার গন্ধ খুঁজবে।
এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক আমি নই। উদ্যোক্তা আর সেবক ছিলাম। বেতন ভাতা যা পেতাম তা দিয়ে আর দশটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মতই চলতো আমার সংসার।
কেউ বলতে পারবে না মীর কাসেম আলীর পরিবারে কোনো বিলাসিতা ছিল বা আছে।
আমার সন্তানেরা রাজকীয় হালে বড় হয়নি। অতি সাধারণ একজন হিসেবে বড় হয়েছে। তারা কেউই গাড়ি হাকিয়ে চলেনি, বিশাল অট্টালিকার মালিক হয়নি।
আমাদের পরিবারের কারো নামে বিদেশী ব্যাংকএ কোনো একাউন্ট নেই। আমি অন্যদের মত সুইস ব্যাংকে দেশের টাকা পাচার করিনি।
হত্যা খুন নির্যাতন। সব শতভাগ বানোয়াট। এরমধ্যে সত্যের লেশমাত্র নেই।
কেন ক্ষমা চাইবো আমি?
বরং রাষ্ট্রপতির উচিৎ আমার কাছে ক্ষমা চাওয়া। কারণ এই রাষ্ট্র আমার প্রতি ন্যায়বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে, এই রাষ্ট্র আমার ছেলেকে নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে তাকে অপহরণ করে প্রমাণ করেছে আমার প্রতি তারা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে চায়।
অতএব ক্ষমা কে চাইবে আপনারাই বলুন?
আপনারা ভাবছেন আমি হেরে গেছি?
আমি বিদেশ থেকে দেশে না ফিরলেই ভালো হতো?
আচ্ছা দেশে না ফিরলে আমার ফাঁসি হয়ত হত না, কিন্তু মৃত্যুর ফায়সালা কি আগপর হত?
কে জিতেছে কে হেরেছে সময়ই বলে দেবে।
আমি স্বাধীন বাংলাদেশে দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার সুযোগ পেয়েছি, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছি, আইনী লড়াই চালানোর সুযোগ পেয়েছি।
কিন্তু আজ যারা দম্ভভরে অন্যের পুতুল হয়ে নাচতেছে, তাদের পরিণতির কথা ভেবে করুণা হয়।
তারা কি পারবে স্বাধীন দেশে মৃত্যুবরণ করতে?
রুটস দেখ। ক্রীতদাসদের জীবন দেখ। জানি এখনই সবকিছু বুঝে উঠতে পারবে না। যখন বুঝবে তখন বুঝেও লাভ হবে না।
তোমাদের আজকের মিত্ররা কাল তোমাদের মিত্র থাকবে এমন প্রত্যাশার ঘোরে থেক না। মনে রেখ দেশ না থাকলে মন্ত্রিত্ব থাকে না। চুরি করা অর্থ দিয়ে কী করবে? দুদণ্ড পা ফেলার যায়গা পাবে না।
তোমাদের মৃত্যু হবে কত লজ্জার, কত করুণ তা যদি এখনি ভাবতে পারতে!
আমি চলে যাচ্ছি, কিন্তু মনে রেখ আমরা যারা চলে গেলাম তারা বেঁচে গেলাম। যারা মাটি কামড়ে পড়ে আছ তারা হয়ত কবরের মাটিটুকুও পাবে না।
বিশ্বব্যবস্থা দ্রুত পরিবর্তনের দিকে এগুচ্ছে। খেয়াল করছো কেউ?
তাকাও সেদিকে।
আমার জন্য অশ্রুপাত করতে হবে না। নিজের ভবিষ্যৎ দেখ....
মনের চক্ষু মেলিয়া।
(কপি : মামুন মাহফুজ এর ফেসবুক থেকে)
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সময় বদলাবেl
একদিন হাসিনাও থাকবেনাl
আমরাও থাকবনাl
হাশরের মাঠে মাবুদে এলাহীর হাতে হাসিনা এবং তার পান্ডাদের বিচারের দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় থাকলামl
আমাদেরই ট্যাক্সে পোষা পুলিশ আর ৱ্যাব আজ আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেl
আমরা তোমাদের ছাড়বোনাl
ছেড়ে চলে গেছে। জান্নাত তার অপেক্ষায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন