ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, রবীন্দ্রনাথের বিরোধীতা এবং হিন্দু জমিদারদের বঙ্গভঙ্গ রদ আন্দোলন
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ০১ জুলাই, ২০১৬, ০২:৫৮:৪৫ দুপুর
১৭৫৭ সালে ভারতে মুসলমান শাসক নবাব সিরাজউদ দৌলার পতনের পর থেকে ইংরেজরা তাদের দালাল হিসেবে বেছে নেয় এদেশের হিন্দুদের । সেই থেকেই ব্রিটিশ সরকারের সব ধরনের হালুয়া রুটির ভাগ নিতে থাকে হিন্দুরা । মুসলমানরা বার বার পিছিয়ে পড়্রেও যখন ইংরেজদের অন্যায় এবং উপমহাদেশের লুটপাটে বাধা হয়ে দাড়ায় তখন তাদের দমন করার জন্য ্ও হিন্দু নেতা এবং সাধারণ হিন্দুদের জামিদার প্রথা এবং নানান সুজুগ সুবিধা দিয়ে হাতে রাখে মুসলামদের বিরুদ্ধে কাজে লাগানোর জন্য । মুসলমান রা যখন ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রহ, এর পর ফকির বিদ্রহ, নীল বিদ্রহ, বালাকোটের আন্দলন, তিতুমীরের মত বীর রা যখন ব্রিটিশ দের কাবু করে দেশ ভাগে বাধ্য করার দ্বার প্রান্তে তখন তাদরে কাছ থেকে ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবী করেন । কিন্তু এখান্ওে জমদিার রা মুসলমান রা জাতে শিক্ষায় উন্নতি করতে না পারে তার জন্য উঠে পরে লাগে ।
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যারা বিরোধীতা করেছিল আজ তারাই আমাদের প্রিয় !!!! রেফারেন্সসহ ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করছি, কেউ আহত হলে মনে কষ্ট পাবো… রবীন্দ্রনাথ সহ সকল বাঙ্গালী হিন্দু নেতা ও বুদ্ধিজীবি ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চরম বিরোধীতা করেন। এমনকি ঢাকার হিন্দুরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ছিল। === তাহলে কি রবীন্দ্রনাথ চাননি যে, তার জমিদারীর অন্তুর্ভুক্ত মুসলমান কৃষক ও শ্রমিক সন্তান এবং অনুন্নতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আলো পেয়ে ধন্য হোক। …….. বললে আরো লজ্জা হয় যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার আশুতোষ মুখার্জীর (রবীন্দ্রনাথের ভাইঝি জামাতা) নেতৃত্বে সেই সময়কার ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন না করার জন্য ১৮ বার স্মারকলিপি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। নীচতা এত নীচে নেমেছিল যে, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্রুপ করে বলতেন মক্কা বিশ্ববিদ্যালয়। ( সূত্র: জীবনের স্মৃতিদ্বীপে: ড. রমেশ চন্দ্র মজুমদার)। ====১৯১২ সালের ২৮ মার্চ কলকাতার গড়ের মাঠে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে হিন্দুরা প্রতিবাদ সভা ডাকে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। কারন তিনি ছিলেন জমিদার। তিনি মুসলমান প্রজাদের মনে করতেন গৃহপালিত পশু। (নীরোদ চন্দ্র চৌধুরী, দি অটোবায়োগ্রাফী অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান)। বঙ্গভঙ্গ রদের পর পূর্ববঙ্গ ও আসামের ভাগ্যবঞ্চিত জনগণ বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ হয়। নবাব সলিমুল্লাহ তখন ইংরেজ সরকারের কাছে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান। পূর্বাঞ্চলীয় জনগণের বঞ্চনার কথা চিন্তা করে অবশেষে তাদের ‘গরু মেরে জুতা দান’ করার মতো ইংরেজ সরকার ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অন্তত এ এলাকার যুব- সম্প্রদায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাবে —এ আশায় এ অঞ্চলের মানুষ কিছুটা আশ্বস্ত হয়। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও তুমুল বিরোধিতা করেন। কলকাতা ইউনিভার্সিটি কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাবু গিরিশ বানার্জি, ড. স্যার রাসবিহারী ঘোষ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখার্জির নেতৃত্বে একদল হিন্দু বুদ্ধিজীবী বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জের সঙ্গে দেখা করে ১৮ বার স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। ১৯১১ সাল থেকে ১৯২০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাস হওয়া পর্যন্ত কবি রবীন্দ্রনাথসহ হিন্দু নেতারা অবিরাম এর বিরোধিতা করেছেন।
এ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর কাজী জাকের হোসেন বলেন —“ঘোষণা দেয়া মাত্র ওপার বাংলার তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা? কী অলক্ষণে কথা! ‘চাষার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে বাসার চাকরি করবে কারা!’ যে ২২ জন ‘মহাজ্ঞানী ব্যক্তি’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে গভর্নরের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে এক নম্বরে নাম ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কলকাতার গড়ের মাঠে যে সভা হয়, তাতে সভাপতিত্ব করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বিষয়: বিবিধ
২৬৬৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন তারাই আমাদের শাসক হয়ে গেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন