জয়ের জঙ্গি তত্ত্ব বনাম মিথ্যাবাদি রাখাল ও আজকের বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ০৩ অক্টোবর, ২০১৫, ০৬:২৯:২৫ সন্ধ্যা
ছোট বেলায় পড়েছিলাম ।এক রাখাল প্রতিদিন ভয় দেখাতো গ্রামবাসিকে “বনের মধ্য থেক বাঘ আসছে, বাঁচাও-বাঁচাও” বলে ।সাধারণ মানুষ তার কথায় বের হত বাঁচানোর জন্য । কিন্তু এসে দেখতেন রাখাল মিথ্যা বলছে ।এভাবে অনেক দিন….. । একদিন সত্যিই বাঘ আসলো । সেদিনও রাখাল চিৎকার করেছিল । লোকজন আর আসেনি । তারপর রাখালের পরিণতি আমরা সবাই যানি…. । তখনকার বই গুলোতে আল-মাহমুদের মিথ্যাবাদি রাখালের গল্পটায় মিথ্যা কথার ভয়াবহতা খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরে ছিল ।বিগত পাঁচ বছরে ছোটদের বই থেকে শিক্ষামুলক এমন অসংখ গল্প পরিবর্তন করা হয়েছে ।
বিদেশের মাটিতে জন্মনেয়া ও বেড়ে ওঠা প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয়ের এমন বই পড়ার সুজুগ হয়তো হয় নি । তিনি তো ভাল বাংলাও বলতে পারেন না! অথচ বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন! নিবন্ধ লেখেন বিদেশের পত্রিকায় এদেশে বোরখা পড়া বেড়ে গেছে, ব্যাঙের ছাতার মত মাদ্রসা-মসজিদ! চার পাশে জঙ্গি দেখেন তিনি সব চেয়ে নিরিহ, নির্যাতিত, ভদ্র দাড়ি টুপি পড়া কিছু মানুষকে দেখে । আ.লীগই তো বেশি গর্ব করে বলে “তাদের লোকরাই হজ্জে যায় বেশি, দাড়ি টুপি রাখে”
রাজনৈতিক পরিবারে জন্মনেয়ায় রাজনৈতিক স্বপ্ন থাকাটা ভাল । আমি তার অনেক ছোট । স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়ের উত্তাল বাংলাদেশে আমার জন্ম।বিজ্ঞান এবং মেডিকেল সায়েন্স নিয়ে পড়লেও ইতিহাস ঘাটতেই যেন বেশি ভাল লাগে । আামার শৈশব কৈশর দূরন্ত টিন এজের সময়েও যে প্রিয় মাতৃভুমি দেখেছি সেই প্রিয় বাংলা আজ বিরান ভূমি!
যে দেশ এত অতিথি পরায়ন বলে বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করলো সে দেশে আজ বিদেশিরা আসতে, থাকতে ভয় পায়!
১৯৯৬ এর আগ থেকেই এ দেশের রাজনৈতিক ইসলামী শক্তিকে দূর্বল করার জন্য আজকের প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকেই জঙ্গীর অভিযোগ টা বেশি শুনতাম । দেশে দেশের বাহিরে সব জায়গাতেই তাদের মুখে একটা অভিযোগ ছিল দেশে জঙ্গী ভরে গেছে । গত কদিন আগেও প্রধানমন্ত্রী তার ছেলে জয় এবং প্রশাষণ কোন কিছু হলেই তাকে জঙ্গী বলে প্রচার করে একটা আত্মতৃ্প্তি অনুভব করতেন যেন । তেলাপোকার উপড়ে কালেমা লিখে বাংলাদেশের জঙ্গীর অভিনব প্রচার দেখলাম বিদেশি জার্নালে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিবন্ধে ।
বাংলাদেশের চিন্হিত উগ্রপন্থি ধর্মিও মৌলবাদি বলতে আমরা যাদেরকে চিনি তাদের বেড়েওঠা, পারিবারিক কালেকশন আ.লীগের সাথে যে কতটা গভীরে তা কি তারা অস্বিকার করতে পারবে ? সব চেয়ে বড় ইবলিস শায়েখ আবদুর রহমান আ.লীগের দুলাভাই এটা তো দিবালোকের মত স্পষ্ঠ । এ ছাড়াও আরো অনেক ।
সাপ্রতিক বিভিন্ন হত্যাকান্ডে কোন প্রকার গ্রেফতার,তথ্য,প্রমান ছাড়াই শুধু শুনতাম জঙ্গীদের কাজ । এই একটা কথা বলে প্রশাষণ কিছু দিন দৌড় ঝাপ করে চুপ করে যেতেন । নতুন কোন কাসুন্ধি ঘাটতেন । আ.লীগের বিভিন্ন নেতারাও বিএনপির বড় বড় নেতাদের নামের সাথ “জঙ্গী” ট্যাগ করে দিতেন । কি একটা শুখ! অনুভব করতেন যেন ।
গনেশ উল্টে গেল একটা ঘটনায় । অষ্ট্রেলিয়া দলের বাংলাদেশের পূর্বনির্ধারিত সফর স্থগিত করলো “জঙ্গির” ভয়ে । অবাক হলাম আমরা । যে তকমা পাকিস্তানের গায়ে ছিল তা লেগে গেল আমাদের । ভোল পাল্টে ফেললো নেতারা । যে ভাবে থু আকাশে ছুড়লে নিজের মুখে পড়ে সেভাবে তারা বলতে লাগলো “দেশে কোন জঙ্গী নাই” যে পুলিশ দু দিন আগেও তাদের ওয়েবসাইটে আইএস ধরা পড়েছে বলে কৃতিত্ত জাহির করলো প্রমোশনের লোভে । তারাও বললো যে দেশে কোন জঙ্গী নাই!
সত্যি বলতে এদেশে কোন কালেও জঙ্গি ছিল না । কোন দিন মাথাচারা দিয়ে উঠতেও পারবেনা পাকিস্তান আফগানিস্তানের মত । কারন বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ শান্তি প্রিয়, ধার্মিক, ধর্মান্ধ নয় । কালে ভদ্রে যে দুই এক কুলাঙ্গার আত্মপ্রকাশ করেছে তারা এদেশের রাজনৈতিক ছত্রছায়ঁায় বেড়ে উঠেছে তাদেরই স্বার্থে কাজ করেছে আবার ধ্বংষ হয়েছে ।
পরিশেষে রাজনীতিবিধদের বলছি, নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে মিথ্যাবাদি রাখালের ভূমিকায় নাম লিখিয়েননা । মনে রাখবেন “নগর পুড়িলে দেবালয় রক্ষা পায় না…………….”
বিষয়: বিবিধ
৩৩০৩ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
amaderboi.com
মন্তব্য করতে লগইন করুন