একই রাতে আ.লীগের দুই নেতাকে ক্রসফায়ার! রইল বাকি এক
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ১৮ আগস্ট, ২০১৫, ১১:২৬:০৬ সকাল
আ.লীগ তার প্রয়োজনে সবই পারে । পারে ৭ খুনের নেপথ্য নায়ককে প্রভাব প্রতিপত্যির কারনে বঁাচিয়ে দিতে । ধর্ষণের সেঞ্চরী করা ক্যাম্পাস হেরোকে মিষ্টি দিয়ে পুরুষ্কৃত করতে । প্রতিপক্ষকে প্রকাশ্য দিবালোকে সাপের মত রাজপথে পিটিয়ে হত্যা কারীদের মৌন সমর্থন দিতে । বিপুল ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে জনতার সামনেই শেষ করে দিতে । আরো অনেক কিছু পারে । ক্ষমতার স্বর্থে দেশ বিরোধী অনেক চুক্তির ব্যাপারেও তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জোড়ালো অভিযোগ করে থাকে ।
এক সময়ের বিপুল জনপ্রিয় বঙ্গবন্ধুর আ.লীগ আজ খরকুটোর মত প্রষাশনের জোরে দ্বিতীয় মেয়াদ পালন করছে “অবৈধ সরকারে”র তকমা নিয়ে । এত বড় লজ্জা আ.লীগের ৬৪ বছরের বাজনৈতিক ইতিহসে যা আজীবনের জন্য কলঙ্ক হয়ে থাকবে ।
প্রথম মেয়াদ কোন রকম কাটিয়ে উঠতে পারলেও দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ জেল, মামলা, হামলায় বিপর্যস্ত হওয়ায় ব্যাকফুটে । আর এ কারনে নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়িয়েছে । যেন “ঘরের শত্রু বিভিষণ” । প্রতিপক্ষ না থাকলে এমনটাই হয় । এটাই ইতিহাস । যার পরিনিত খুব নির্মম ।
সাম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া সকল অপকর্মের সাথে বার বার যে নামটি আসছে পত্রিকা, টিভি , ফেসবুক, টুইটারে তা হল ছাত্রলীগ,যবলীব,আ.লীগ, তরুন লীগ এমনকি ওলামা লীগ্ও । সেটা কি হত্যা, খুন ,ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ব্যংক লুট, টেন্ডারবাজী, ইয়াবা মোট কথা সবগুলোর সাথেই আ.লীগ ।
ইদানিং উ্দ্বেগ জনক হারে বেড়েছে শিশু হত্যা । তাও আবার বিকৃত ভাবে! কোথায় রাত ভর পিটিয়ে, বলাৎকার করে, প্রসাব খায়িয়ে, পায়ু পথে কম্প্রেসারের বায়ু দিয়ে । কোথাও আবার গাছের সাথে আরমোড়া করে বেঁধে আনন্দ করে বুনো উল্লাস!
সরকার সবচেয়ে বিব্রত হয় সিলেটের রাজন হত্যায় । রাজন হত্যার পরে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে স্বরণকালের প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে । বাধ্য হয়ে বিভিন্ন মন্ত্রি এমপিকে যেতে হয় রাজনের বাড়িতে । প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি দিতে হয় । সে রেশ কাটতে না কাটতেই যুবলীগের দু’পক্ষের মাঝখানে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সাত মাসের অন্তসত্তা এক নারী । গর্ভের শিশুটিও গুলিবিদ্ধ হয় । জরুরী অপারেশন করে মা ময়েকে সুস্থ করে তোলা হয় । চারি দিকে রব উঠে “আ.লীগের হাতে এখন গর্ভের শিশুরাও নিরাপদ নয়” । সরকার আরো বিব্রত হয় । এর কিছু দিন পরই খুলনাতে ঘটে বিকৃত মস্তিষ্কের চুড়ান্ত নমুনা । এক কিশোরের পায়খানার রাস্তায় বায়ু দিয়ে হত্যা করা হয় নির্মম ভাবে । ঠিক কদিন বাদে খোদ রাজধানীতেই ঘটে ছাত্রলীগ থানা সভাপতির দ্বারা একটি জঘন্য শিশু হত্যা ।
শিশু হত্যার এমন নারকীয় ঘটনা বাংলাদেশে এর আগে ঘটেছে বলে আমার জানা নাই । জাতিসংঘ বিবৃতি দেয়, ইউনিসেফ বলে “এ দেশে শিশুরা নিরাপদ নয়” কেউ বলে “অদ্ভুত উটের পিঠে চলছে স্বদেশ” প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো যেন আন্দোলনের ফসিল পায় এসবের মাধ্যমে ।
সরকার সিদ্ধান্ত কিছু একটা করতে হবে । “অনেক টা বউকে মেরে ঝি কে বুঝনো”র মত । কম গুরুত্বপূর্ণ, দলছুট/বিদ্রোহীদের বেছে নেয়া হয় এসব ক্ষেত্রে । তারই নমুনা দেখলাম গত রাতে ।প্রথম সংবাদটা পেলাম সকাল ৬.৩০ পিসি অন করেই দেখি নিউজ “মাগুরায় মাতৃগর্ভে শিশু গুলিবিদ্ধ ও এক ব্যক্তি হত্যা মামলার ৩ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান আজিবর (৩৪) পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন।
এ সময় ১টি পিস্তল ও একটি পাইপগান উদ্ধার করেছে পুলিশ” ৫/৬ মাস আগে এমন নিউজ গুলো আসতো জামায়াত-শিবির অথবা ২০ দলের নেতা কর্মিদের বেলায় । ঘুম থেকে জেগেই শুনতাম কোথায় ক্রসফায়ারে নিহত এক/দুই/তিন । তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিল । অপরাধও রাজনৈতিক । কিন্তু আজ রাতে যাদের কে “ক্রসফায়ারে”র নামে হত্যা করা হল । তারা তো প্রকাশ্যে হত্যা করেছে সবার সামনে ভিডিও করে তা আবার নিজ দায়ীত্বে ফেসবুকে দিয়েছে । তাদের কে কেন বিচার বহির্ভুত ভাবে হত্যা করা হচ্ছে ? আইনকে নিজের হাতে তুলে নেয়ার সংস্কৃতি যদি প্রশাসনই করে তা হলে এ দেশে আদালতের দরকার কিসের ?
মাগুরার মেহেদীর ক্রসফায়ারের নিউজের পরেই পেলাম “রাজধানীর হাজারীবাগে চুরির অভিযোগে কিশোর রাজা হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরজু মিয়া র্যােবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। তিনি হাজারীবাগ থানার ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন”
ঠিক এরা কিছু পরে পেলাম শান্তিনগরে র্যা্বের ধাওয়ায় ছাদ থেকে লফিয়ে পড়ে যুবকের আত্মহত্যা! সব কিছুর কোথায় যেনএকটা মিল । বাকি রইল তা হলে রাজন হত্যার প্রধান আসামি কামরুল । যাকে পুলিশের সহায়তায় সেৌদি যাওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ আছে পত্রপত্রিকায় । ভাগ্যিস কামরুল এখনো সৌদি আরবের জেলে বন্দি না হলে হয়ত আজ মেহেদী আরজুর সাথে কামরুলের নামটাও আসতো ।
মানুষের মনুষত্ব নষ্ট করে লাখের মধ্যে দুই/একটা ক্রসফায়ারে কি সম্ভব অপরাধ থামানো? সাময়িক উপকারে আসবে বৈ কি । তা ছাড়া আর কিছু না । তাদের প্রত্যেকের অপরাধ দিবালোকের মত স্পস্ট । দ্রুত বিচারের মধ্যমে তাদের বিচার করুন আদালতের দ্বারা । ক্রসফায়ার নামক নাটকের মাধ্যমে নয় । এ সংস্কৃতি ভাল না । যুবকদের নৈতিকতার দিকে নজর দিন সমাজ বদলে যাবে ।
বিষয়: বিবিধ
৫১১৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আব্দুল মালেক ভাই থেকে আটাশ অক্টোবর হয়ে বর্তমান... অনেক হিসাব জমা হয়ে গেছে!!
আমরা শুধু দেখার অপেক্ষায় আছি যে, আল্লাহতায়ালার শাস্তির কতটা দুনিয়াতেই দেয়া হয়!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন