কাদিয়ানী ও যুদ্ধাপরাধী আমজাদ>> ইসলাম পন্থী এবং শাহবাগীরা নিরব কেন ??

লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ১৪ জুলাই, ২০১৫, ০৯:৪২:০৪ রাত



সদ্য প্রয়াত প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরী (অব.) মারা যাবার পর হঠাৎ করেই সামনে চলে এলো তার ‘যুদ্ধপরাধী’ পরিচয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তোলপাড়।কর্নেল শাফায়াত জামিল বীরবিক্রমের লেখা ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর’ বইয়ে তার ‘যুদ্ধপরাধী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। জামিলের ওই বইয়ের পাতা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ধরনের পোস্ট।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্রমাণ হিসেবে ওই বইয়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় রংপুর ক্যান্টনমেন্টের বিএম-২৩ ব্রিগেডের মেজর আমজাদ খান চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন। রংপুরে অবস্থানকালে তিনি হত্যা-ধর্ষণসহ হিন্দুদের ঘরবাড়ি লুট করার কাজেও জড়িত ছিলেন।

‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগষ্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর’ বই থেকে পাওয়া তথ্য মতে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের সেনাদের সাথে মিত্র বাহিনীর কাছে আমজাদ খান চৌধুরী আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে যুদ্ধবন্দি পাকিস্তানী সেনা হিসেবে তাকেও ভারত নিয়ে বন্দি শিবিরে আটক রাখা হয়। সিমলা চুক্তির পর পাকিস্তানী সেনা হিসেবে তিনি দেশটিতে ফেরত যান।

সেখান থেকে আটকে পড়া চার লাখ বাঙালির সাথে দেশে ফিরে ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে আটকে পড়া সেনা’ পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে মেজর জেনারেল পদোন্নতি পান আমজাদ খান চৌধুরী। পরে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে ব্যবসায় নামেন তিনি।

কর্নেল শাফায়াত জামিলের বই থেকে জানা গেছে, ‘৩০ মার্চ ৩য় বেঙ্গলের ব্যাটালিয়ন আডজুটেন্ট সিরাজকে রংপুর ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারে একটা কনফারেন্সে যোগ দেয়ার জন্য পাঠানো হয়। তার সঙ্গে ১০/১২ জন সশস্ত্র প্রহরী ছিল। পাকিস্তানিরা পথে তাদের বন্দী করে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় সে রাতেই প্রায় সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। দলটির মাত্র একজন সদস্য দৈবক্রমে বেচে যায়।’

‘পরে সে ৩য় বেঙ্গলের সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছিল। উল্লেখ্য, তখন রংপুর ব্রিগেডের গুরুত্বপূর্ণ ব্রিগেড মেজর পদের আসীন ছিলেন একজন বাঙালি মেজর আমজাদ খান চৌধুরী। উল্লেখ, তিনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট কুমিল্লার ব্রিগেড কমান্ডার ছিলেন এবং তারই নিয়োজিত সেনা দল বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের পাহারার দায়িত্বে ছিল। আক্রমণকারীদের প্রতিরোধে এরা সেদিন ব্যর্থ হয়। সব সম্ভবের দেশ এই বাংলাদেশে তিনি পরবর্তীকালে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন’ বলেও শাফয়েত জামিলের ওই বই থেকে জানা গেছে।

আমজাদ খান চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৯ সালের ১০ নভেম্বর। তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান আর্মিতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ রংপুরের পাকি ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর ছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ পর্যন্ত তিনি চারটি প্রমোশোন পেয়ে মেজর জেনারেল পদে উন্নিত হন এবং সেই রংপুরের ডিভিশনের জিওসি হিসেবে নিয়োগ পান।

১৯৮১ তে তিনি দুর্নীতির দায়ে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত/অকালীন বাধ্যতামূলক অবসরে যান। ঠিক ওই বছরেই তিনি রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড নামে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/কারখানা স্থাপন করেন। পরে তিনি প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী হন। (জীবনী অংশটা ত্রিশঙ্কু মল্লিক-এর ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এদিকে সে একজন কাদিয়ানী বলে দীর্ঘ দিন ধরে কথিত , এ নিয়ে এর আগে পানি ঘোলা কম হয়নি । কাদিয়ানি বিরুধী আন্দোলন করতে গিয়ে জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর ফঁাসির রায় পর্যন্ত হয়েছিল । দুই পাকিস্তানে এ নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন করে বিভ্ন্নি ইসলামী দল সমুহ । বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময় জামায়াত কিছুটা কৌশুলি আশ্রয় নিলে চরমোনাই সহ অন্যান্ন ইসলামী দল বিশেষ করে খতুমে নুবুয়াত মুভমেন্ট এর কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মত । কিন্তু আ,লীগ সরকার আসার পর থেকে তাদের আন্দোলন চুপশে গেল কি কারনে আমার জানার নাই ।

বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় ডিউক মেডিকেল হাসপাতালে মারা যান আমজাদ খান চৌধুরী। আমজাদ খান চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার ব্যবসায়ী পরিচয়কে সামনে রেখে গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর পরিবেশন করা হচ্ছে। প্রধানমনন্ত্রী , প্রসিডেন্ড, বিএনপি নেতৃী , গৃহপালীত বিরোধী দলীয় নেতৃীয় সবার দেখা দেখী শোখ জানিয়েছেন ।

প্রথমে মুফতি আমীনীর ছেলে পরে হেফাজত এ নিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেয় ।

আমজাদের কাদিয়ানি এবং রাজাকার এ দুটি বিষয়ে ইসলাম পন্থীরা তার কাদিয়ানি বিষয়িটি নিয়েই সামনে আগানোর বিষয়ে আমার কাছে অবাক লাগলো তা হলে কি তারা তার রাজাকারের বিষয়টি ভাল ভাবে নিয়েছে ?

নাকি তারাও রাজাকার ছিল বলে সামনে নিয়ে আসছে না ?

জামায়াত এ বিষয়ে নিরবতার কারণ হিসেবে আমার কাছে দুইটা বিষয় মনে হচ্ছে

১. তাদের গায়ে যেহেতু রাজাকারের ট্যাগ আছে এ বিষয় নিয়ে কথা বললে রাজনৈতিক মাঠে অন্যরা পানি ঘোলা করবে ।

২ . কাদিয়ানি বিষয়টি নিয়ে যেহেতেু তাদের ফাসিঁর রায়ের অভিঙ্গতা আছে , তা ছাড়া বাংলালিংক দামে তারা তো কিছু দিন পর পর ই এমন রায়ে পেয়ে থাকে , তাই অন্য ইসলাম পন্থিদের দিয়ে তারা হয়তো কিছুটা দায়মুক্তির! চেস্টা করছেন ।

কিন্তুু সব চেয়ে অবাক হলাম রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধীদের নিয়ে যেই শাহবাগ যেই বুদ্ধিজিবীদের অবিরাম পথচলা যা কিনা শেষ হবার নয় শেষ রাজাকারের ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত তারা থেমে গেলেন !

আমজাদের তৈরি প্রাণ জুস খেয়ে সব ভুলে গেলেন !

যে শাহবাগ নিয়ে এখনো স্বপ্ন দেখে কুটি বাঙ্গালী!

কি ভাবে এত প্রমাণ থাকার পরেও কোন টু শব্দ নাই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবীতে আন্দোলন কারী শত সংগঠনের ?

তার সামাজিক মর্জাদা ব্যাবসায়িক সাফল্য কি সব অন্যায়কে পাপকে ধামাচাপা দিয়ে দিল । তা হলে তো বিচার হীনতার এ দেশে আরো অসংখ আমজাদ রাষ্ট্রীয় মর্জাদা পাওয়ার দাবী রাখে বা রাখবে...................

বিষয়: বিবিধ

৪৪১৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330000
১৫ জুলাই ২০১৫ রাত ১২:৫৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আমজাদ আহমদ চেীধুরি সেনাবাহিনি থেকে অবসর নেননি বরং তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছিল। মেজর জেনারেল মনজুর রশিদ খান এর বইতে তার দূর্নিতির কথা আছে। নিজে শুধু দূর্নিতি করতেন না বরং তার অধিনস্তদের ও দূর্নিতিতে সহায়তা করতেন।
330030
১৫ জুলাই ২০১৫ রাত ০২:৫৬
শেখের পোলা লিখেছেন : আমজাদ সাহেবের ভাগ্য ভাল যে উনার গায়ে জামাতের ট্যাগ ছিল না৷ জামাত ছাড়া আওয়ামী মতে আর কেউ যুদ্ধঅপরাধী হতে পারেনা৷
330058
১৫ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:১৭
হতভাগা লিখেছেন : আমজাদদের ক্ষমতা আছে ইমরানদের বিরিয়ানী খাওয়ানোর । আর ইমরানেরাও সে সময়ে যাকে তাকে চেতনাধারীর ট্যাগ দিত এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কাউকে কাউকে রাজাকার ট্যাগ মেরে দিয়েছিল ।

আমজাদদের বিরিয়ানী সে সময়ে সেখানে উপস্থিত হওয়া মুক্তিযোদ্ধারাও হয়ত খেয়েছে ।

মুক্তিযোদ্ধাদের কি সামর্থ্য আছে ইমরানদের একবেলা বিরিয়ানী খাওয়ানোর ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File