ভারতকে আরেকবার চিনেছিলাম ২০১০ সালে : কামরুজ্জামান বাবলু
লিখেছেন লিখেছেন ব্লগার শঙ্খচিল ১৯ জুন, ২০১৫, ০৭:৪৭:৪০ সন্ধ্যা
২০১০ সালে ভূটানের রাজধানী থিম্পুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৬তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন। বাংলাদেশের গণমাধ্যম থেকে যে কয়জন সাংবাদিক ওই সম্মেলনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন আমিও ছিলাম তাদের মধ্যে।
ভূটানে প্রায় এক সপ্তাহ ছিলাম। সেখানে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক এসেছিলেন বাংলাদেশ ও ভারত থেকে। এরপরই অধিক সংখ্যক সাংবাদিক ছিলেন পাকিস্তানের। যাই হোক, আমরা সব দেশের সাংবাদিকরা একসাথে মিলেমিশে কাজ করছিলাম। কখনও কোন ভেদাভেদের চিন্তাও আমাদের কারো মধ্যে পরিলক্ষিত হতে দেখিনি।
সম্মেলন শেষে যেদিন আমরা ফিরে আসব সেদিন ভূটান সরকার সৌজন্যতাস্বরুপ ভারতের বর্ডার পর্যন্ত আমাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেছিল। অবশ্য আমরা যারা ভারতের ভেতর দিয়ে বাইরোডে ভূটানে গিয়েছিলাম সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য তাদেরকেও ভারত সীমান্ত থেকে থিম্পু পর্যন্ত ভূটান সরকার তাদের গাড়িতে করে পৌঁছে দিয়েছিল। তখন অবশ্য আমরা শুধু বাংলাদেশী সাংবাদিকরাই ছিলাম।
এবার আসা যাক মূল প্রসঙ্গে। ভূটান সরকারের দেয়া গাড়িতে আমরা উঠে বসেছিলাম। বেশ কয়েকদিন একটানা খাটুনির পর বাড়ির পথে পাড়ি জমাবো তাই সবার মধ্যে যেমন আনন্দ ছিল, তেমনি ছিল বেশ তাড়া। আর এ কারণেই হয়তো আমরা বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক গাড়িতে আগেভাগেই উঠে পড়ি।
আমরা গাড়িতে বসার পরক্ষণেই ভারতের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক এসে উপস্থিত হন। তাদেরকে গাড়িতে বসতে অনুরোধ করেন ভূটানের কর্মকর্তারা। গাড়ির ভেতর খানিকটা গোয়েন্দাশুলভ ভঙ্গিতে উঁকি দিয়ে মুখ বাঁকিয়ে নেমে যান ভারতীয় সাংবাদিকরা। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন কোন বাংলাদেশীর পেছনে বসে তারা যাত্রা করতে পারবেন না। শত অনুরোধ সত্ব্তেও একচুলও নড়লেন না হিংসা-বিদ্বেষে পরিপূর্ণ আত্মার অধিকারী ভারতীয়রা।
শেষ পর্যন্ত ভারতীয়দের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা করতে হলো। অথচ এটা ছিল একেবারেই বাড়াবাড়ি। কারণ প্রথম গাড়িটি ছিল অত্যন্ত মানসম্পন্ন এবং তাতে প্রচুর ফাঁকা আসন ছিল।
আমরা ওই ঘটনায় তখন রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। প্রতিবেশীদের সম্পর্কে এমন বিদ্বেষ যদি খোদ সাংবাদিকরাই তাদের হৃদয়ে পোষণ করেন তাহলে বাকিদের কী অবস্থা। অথচ এই কয়েকদিন বেশ কয়েকবার আমরা নানা কাজে একই গাড়িতে বসে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি। আমাদের সামনে ভারতীয় বসা নাকি মঙ্গোলীয় বসা তা নিয়ে ঘুনাক্ষরেও আমাদের মধ্যে কোন কথা হয়নি।
তবে, মানুষ তো আর সব সময় একরকম থাকে না। মানুষের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আসে যুগ ও সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে। আর ইত্যবসরে কত কিছু হয়ে গেল। তাই সেই দিনের ঘটনা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে গতকালের ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ধোনীর আচরণ দেখে আমার সেদিনের সেই ঘটনাটি মনে পড়লো।
ভারতীয় সাংবাদিকদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণে সেদিন আমরা যেমন পাল্টা জবাব না দিয়ে স্বাভাবিক সৌজন্যতা দেখিয়েছিলাম, মোস্তাফিজের সাথে ধোনির আচরণেও বাংলাদেশ টিম ধৈর্যের পরিচয় দেখিয়েছে। তবে, মনের আয়নায় নানা চিত্র ভেসে উঠে যদি কোন ভারতীয় ক্রিকেটারকে এমন ইচ্ছাকৃত ও হিংসাত্মক আঘাত বাংলাদেশী ক্রিটারদের কারো পক্ষ থেকে দেয়া হতো তাহলে কি ভয়ংকর কান্ডটাই না ঘটতো
(গল্প করতে করতে একদিন বাবলু ভাই বলেছিলেন , ভাবছিলাম তার স্মৃতি চারণ নিয়ে লিখবো , আজ তার ফেবকুক পেজে লেখাটা পেলাম , তাই আর কষ্ট না করে কপি করে দিলাম Kamruzzaman Bablu )
বিষয়: বিবিধ
১৮১৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যেমন দুনিয়ার সব খানে সেনিটেশান ব্যবস্থা মান সম্মত হয়েছে কিন্তু মারাঠা বর্গীরা রয়ে গেছে সেই আগের জায়গাতেই।
এই সফরে ভারতের কোহলি , ধোনিরা নাকি আসতেই চায় নি । পরে ডালমিয়ার ঝাড়ি খেয়ে এসেছে ।
তবে আমি বলবো ভারত কিন্তু আসলেই পুরো শক্তির দল নিয়ে আসেনি ।
আলিম দার এবং ইয়ান গৌল্ডকে কি দলে রাখা হয়েছে ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন