জীবন ও বাস্তবতা
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ০৮ নভেম্বর, ২০১৬, ০৯:২১:১১ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম।
সমাজের চিত্র যেন আজ দম ফেলার ফুরসত নেই। সবাই ছুটছে। যেখানেই যাই স্থান সংকুলান হয় না। অফিস আদালত,বাজার শপিং মল, হাসপাতাল ক্লিনিক,শিক্ষাংগন এবং সবচেয়ে বেশী হলো রাস্তা ঘাট। রাস্তায় বের হয়ে একটু নিজেকে হালকা করে( নিজের ব্যস্ততা ভুলে) তাকিয়ে দেখলে মনে হয় একেক মানুষের চেহারায় একেকধরনের উদ্বিগ্নতা। শুধু ছুটেই যাচ্ছে। কোন এক আকর্ষন বা বিকর্ষনে সামনে বা পিছনে ছুটেই চলেছে। এটাই বর্তমান জীবনের চিত্র মনে হয়, অনেকে বলবেন এটাই বাস্তবতা।
কিন্তু জীবন ও বাস্তবতাকে যখন আমরা প্রত্যেকে নিজেদের মত করে সাজিয়ে উপস্থাপন করতে যাই, তখন আপনি কোনটিকে বলবেন জীবন বা বাস্তবতা।
আসলে আমরা মহান আল্লাহর দেয়া মেধা যোগ্যতাকে অহীর জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত করে সাজাতে চাইতাম তাহলে জীবন, বাস্তবতাকে সহজ ও সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পারতাম।
আমরা যারা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে চলতে চাই কোন এক কারনে দিনে দিনে মনে হয় সমাজের স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে চলাকেই স্ট্যান্ডার্ড আখ্যা দিয়ে দীনের পথে থাকতে চাই। এটা কি সঠিক দীনের রুপায়ন? বাস্তবতার দোহাই গেয়ে কুর’আনের শিক্ষা থেকে দূরে থাকি! রাসূল স. ও সাহাবা আযমাঈন রা. কি সেই সমাজের স্রোতের সাথে একাত্ম হয়েছিলেন নাকি মুমিনের নিজস্ব সংস্কৃতিকে ধারন করেছিলেন?
আমরা যেন সূরা হাদীদে উল্লেখ দুটি গ্রুপের মাঝে প্রথম গ্রুপ যারা নিজ নূরে পথ চলবে তাদের মাঝে একজন হতে পারি সেই প্রচেষ্টায় নিজের সব কিছুকে নিয়োগ করা দরকার। আল্লাহ আমাদের বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন।
“যেদিন আপনি দেখবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে, তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডানপার্শ্বে তাদের জ্যোতি ছুটোছুটি করবে বলা হবেঃ আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহাসাফল্য।
যেদিন কপট বিশ্বাসী(মুনাফিক) পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী(মুনাফিক) নারীরা মুমিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা কর, আমরাও কিছু আলো নিব তোমাদের জ্যোতি থেকে। বলা হবেঃ তোমরা পিছনে ফিরে যাও ও আলোর খোঁজ কর। অতঃপর উভয় দলের মাঝখানে খাড়া করা হবে একটি প্রাচীর, যার একটি দরজা হবে। তার অভ্যন্তরে থাকবে রহমত এবং বাইরে থাকবে আযাব। তারা মুমিনদেরকে ডেকে বলবেঃ আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? তারা বলবেঃ হ্যাঁ কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ। প্রতীক্ষা করেছ, সন্দেহ পোষণ করেছ এবং অলীক আশার পেছনে বিভ্রান্ত হয়েছ, অবশেষে আল্লাহর আদেশ পৌঁছেছে। এই সবই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছে।
অতএব, আজ তোমাদের কাছ থেকে কোন মুক্তিপন গ্রহণ করা হবে না। এবং কাফেরদের কাছ থেকেও নয়। তোমাদের সবার আবাসস্থল জাহান্নাম। সেটাই তোমাদের সঙ্গী। কতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তন স্থল। (সূরা হাদীদ ১২-১৫)
বিষয়: বিবিধ
২১৬৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কথাগুলো আমারও। এই ভেবে আমি খুব কষ্ট পাই।
ভালো মন্দ নির্বিশেষ সকল মানুষ আজ সত্যিই স্রোতের সাথে মিশে যাচ্ছে। কেউ সরাসরি, আর কেউ কৌশলের কথা বলে, অথচ এই স্রোতে গিয়ে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো ছুটে যাচ্ছে! আমার বুঝে আসেনা, এটা আসলে কোণ ধরণের কৌশল!
আলহামদুলিল্লাহ্, আমি এখন পর্যন্ত প্রচুর স্ট্রাগল করি, জানিনা কত দিন পারবো, তবে ইন শা আল্লাহ্, আমৃত্যু পারতে চাই।
আপনার লেখাটা আমাকে আবারও আমার কর্মে অটল থাকতে মনোবলকে চাঙ্গা করছে।
জাযাকাল্লাহু খাইর।
মহান আল্লাহ জানিয়েছেন-
বল, আমি কি তোমাদেরকে এর চেয়েও উত্তম বস্তুর সংবাদ দেব? যারা তাকওয়া অর্জন করে, তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি’। আর আল্লাহ বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা। যারা বলে, ‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’। যারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, আনুগত্যশীল ও ব্যয়কারী এবং শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারী।” [আলে ইমরান: ১৫-১৭]
মন্তব্য করতে লগইন করুন