সবরে প্রাপ্তি
লিখেছেন লিখেছেন মিশু ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৯:১২:৫৬ সকাল
আসসালামু’আলাইকুম।
আমাদের আশে পাশে রোগ বা যে কোন বিপদে বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন রকমভাবে মনের কথা প্রকাশ করে থাকেন। যেমন-
অনেকে বলেন, যারা ধর্ম কর্ম করে না তাদের এতো অসুখ বিপদ আসে না।
আমার জীবনেই শুধু রোগ বালাই থাকে। এতো আল্লাহকে ডাকি, আমার ডাক শুনে না।
জীবনে কি এতো বড় পাপ করলাম যে, আমার জীবনে এতো বড় অসুখ আসলো।
কত আর ধৈর্য্য ধরবো, জীবনে কি ভালো কাজ করি নাই? আর কত পরীক্ষা দিবো?
আমার জানামতে কারো ক্ষতিতো আমি করি নাই, তাহলে কেনো আমার জীবনে বিপদ আসলো?
আল্লাহকে তো কত ডাকি, আল্লাহর পথেইতো চলি তাহলে কেন এতো বড় সমস্যা এলো?
আল্লাহ কি দেখে না, আমার পক্ষে কিভাবে সামাল দেয়া সম্ভব?
গরীবের কপালেই খালি কষ্ট আল্লাহ দেয়, কই ধনীরাতো আরামেই থাকে!
এতো কষ্ট আর ভালো লাগে না, তার চেয়ে আল্লাহ আমাকে নিয়ে যাক!
উপরের কথাগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে কেউ কোন এক অবস্থায় বলে থাকেন বা কারো কাছ থেকে শুনে থাকবেন।
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন,
'তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনো জানেন নি তাদেরকে যারা তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহর পথে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা করেছে এবং জানেন নি ধৈর্যশীলদেরকে।'
সূরা আলে-ইমরান: ১৪২
মহান রবের পথে অটল থাকার জন্য প্রয়োজন ধৈর্যের এবং মহান আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককেই যাঁচাই করবেন কথা ও কাজের সাথে মিল আছে কি না? এই দুনিয়ার জীবনে মহান আল্লাহ শুধুমাত্র খাওয়া দাওয়া ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই পাঠান নি। আমাদের জানতে হবে আমার এই মূল্যবান জীবন কে কোন উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছেন, আমার করনীয় কি, আমাকে আবার নিয়ে যাওয়া হবে মহান রবের কাছে, সেখানে আমি কি নিয়ে দাড়াবো? ইত্যাদি আমাদের জানতে হবে কুর’আন থেকে। তাহলে যেকোন অবস্থায় সবর নেয়া সহজ হয়ে যাবে।
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়। আলে ইমরানঃ ১০২
আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহর রহমত থেকে কাফের সম্প্রদায়, ব্যতীত অন্য কেউ নিরাশ হয় না। সূরা ইউসুফ:৮৭
রাসূ স. বলেছেন আল্লাহ তায়ালা যখন কোন সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন, তখন তাদেরকে(বিপদ আপদ দিয়ে) পরীক্ষা করেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য্যধারন করে সে ধৈর্যের প্রতিদান পায়। আর যে অধৈর্য্য হয়ে যায় সে অধৈর্যের ফল পায়। মুসনাদে আহমাদ: ২৩৬২৩
রাসূল স. আরো বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা যাকে কল্যান দান করতে চান বা ভালোবাসেন, তাকে কষ্টে বা মুসীবতে ফেলেন। সহিহ আল বুখারি: ৫২৩৩
রাসূল স. বলেছেন—কোন ব্যক্তি যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন আল্লাহতায়ালা তার নিকট দু’জন ফেরেশতা পাঠিয়ে বলেন, দেখো হে ফেরেশতা! সে তার শুশ্রুষাকারীর সাথে কী কথাবার্তা বলছে। যদি সে অসুস্থ হবার কারনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের গুণকীর্তন করতে থাকে, তবে সে খবর ফেরেশতারা আল্লাহর নিকট নিয়ে যান। যদিও আল্লাহ স্বয়ং সবকিছু জানেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা ঘোষনা করেন, আমি যদি তাকে মৃত্যুর সংগে আলিংগন করাই তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। আর যদি তাকে রোগমুক্তি দেই তবে তার খারাপ গোশতকে উত্তম গোশত দ্বা্রা আর দূষিত রক্তকে উত্তম রক্ত দ্বা্রা পরিবর্তন করে দেবো এবং তার পাপরাশিকেও দূর করে দেবো।
মুয়াত্তা ইমাম মালিক: ১৭৫০,৩৪৬৫
তাই যেকোন অবস্থায়ই মহান রবের দিকে ফিরে এসে, তাওবা করে আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে এবং আরো বেশী মহান আল্লাহর তাহমিদ তাসবিহ তাহলিল করে তাঁর পথে কাজ করার আশা রাখতে হবে।
বিষয়: বিবিধ
১০৭০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সবরের অনুশীলনের তাগাদা পেলাম।
অত্যাচার নির্যাতন জুলুম ফাসি, এতসব কিছুর পরে ভেংগে মুচড়ে পড়া হৃদয় আবার সতেজ হয়ে ওঠে যখন মনে পড়ে আপনার উল্লেখিত আয়াত ''তোমরা কি মনে কর যে, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনো জানেন নি তাদেরকে যারা তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহর পথে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা করেছে এবং জানেন নি ধৈর্যশীলদেরকে।'
সূরা আলে-ইমরান: ১৪২
জাযাকাল্লাহু খাইর
বারাকাল্লাহি ফিক।
মন্তব্য করতে লগইন করুন